মহানগর ডেস্ক: যৌন হেনস্থার (Sexual Assault Against BJP Leader) গুরুতর অভিযোগ দলেরই এক নেতার বিরুদ্ধে আরেক নেতার। যে অভিযোগ পৌঁছল দলের সর্বভারতীয় সভাপতি (All India BJP President) জেপি নাড্ডার কাছে, যা ঘিরে এই মুহূর্তে তোলপাড় বঙ্গ বিজেপি। দলের রাজ্য আইনি সেলের ভারপ্রাপ্ত নেতা লোকনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেছেন দলের যুব নেতা। তিনি জানিয়েছেন অক্টোবরের সাতাশ ও আঠাশ তারিখে তাঁকে সিকিমে তাঁর সঙ্গে যেতে বলেন অভিযুক্ত নেতা লোকনাথ চট্টোপাধ্যায়। ওই যুব মোর্চা নেতা জানতে চান দলের কাজে তাঁকে যেতে বলা হচ্ছে কিনা। অভিযুক্ত নেতা তাঁকে জানান দলেরই কাজে তাঁর সঙ্গে সিকিমে যেতে বলা হচ্ছে। অভিযোগ সেখানেই তাঁকে যৌন হেনস্থা করা হয়। যৌন হেনস্থার শিকার যুবনেতা দলের সর্বভারতীয় নেতাকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন, অভিযুক্ত দলের আইনি সেলের ভারপ্রাপ্ত তাঁর কাছে জানতে চান তিনি ফ্রি আছেন কিনা। তিনি হ্যাঁ বলাতে তাঁকে জানানো হয় তাঁরা অক্টোবরের পঁচিশ তারিখে হাওড়া থেকে ট্রেনে উঠবেন। এবং দলের কাজেই এই সফর।
বাড়িতে মা ও ভাইদেরও বিষয়টি জানান যুব নেতা। সিকিম থেকে আইনি সেলের ভারপ্রাপ্তের সঙ্গে ফিরে আসবেন। স্টেশন পৌঁছে তিনি দেখেন সেখানে অভিযুক্তের গোটা পরিবার সেখানে উপস্থিত রয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেকের জন্য এসি কামরা বুক করা হলেও তাঁর জন্য নন-এসি কামরা বুক করা হয়েছে। যুব নেতার অভিযোগ, অভিযুক্তের সিআইএসএফ রক্ষীরা তাঁর কলার চেপে ধরে ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে যায়। তিনি তাদের কাছে জানতে চান কেন তাঁর সঙ্গে এরকম ব্যবহার করা হচ্ছে,তখন তারা জানায় তাদের এরকম করারই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁকে আটকে রাখারও নির্দেশ দিয়েছেন অভিযুক্ত আইনি সেলের ভারপ্রাপ্ত লোকনাথবাবু। তাঁকে একটি আসনে জোর করে বসানো হয়। রক্ষীরা তাঁর ফোন ও ব্যাগ কেড়ে নেয়। সিকিমে পৌঁছে তিনি বুঝতে পারেন সেখানে দলের কোনও কাজ নেই। তাঁকে যৌনহেনস্থা করতেই সেখানে নিয়ে আসা হয়েছে।
অভিযোগে ওই যুবনেতা বিস্তারিতভাবে জানান অভিযুক্ত ও তাঁর রক্ষীরা কীভাবে তাঁকে যৌনক্রিয়ায় বাধ্য করেন। তাঁকে সিকিমে যাওয়ার পর হোটেলের অভিযুক্তের ঘরে আটকে রেখে জামাকাপড় খুলতে বাধ্য করা হয় এবং মুখে বন্দুক ঠেকিয়ে যৌন হেনস্থা করার কাজ চলে। সমস্ত ঘটনা জানিয়ে ওই যুবনেতা দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন যৌন হেনস্থার শিকার ওই যুব মোর্চা নেতা। অভিযুক্তের কড়া শাস্তি দাবি করেছেন তিনি। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআরও দায়ের করেছেন তিনি। পেশায় আইনজীবী হাইকোর্টে বিজেপির হয়ে মামলা লড়েন এবং বিজেপির পক্ষে একাধিক আদালতের নির্দেশও আদায় করতে সমর্থ হয়েছেন। এদিকে অভিযুক্তের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি। এ ব্যাপারে বিজেপি নেতারাও কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন। তবে তাঁদের ইঙ্গিত, অভিযুক্ত আইনি সেলের ভারপ্রাপ্ত নেতাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। সাসপেন্ড করার আগে দল আদালতের নির্দেশের অপেক্ষা করছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন নেতারা।