মহানগর ডেস্ক: একদিকে রাজ্যে ঊর্ধ্বমুখী করোনা গ্রাফ। ফের আবার নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে দেশবাসীর মধ্যে। তার মাঝে জানা গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ১১টি জেলায় ৬৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন কালাজ্বরে (Black Fever)। ইতিমধ্যেই সংক্রমণ রুখতে নজরদারি চলছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, দার্জিলিং, মালদা, দুই দিনাজপুর এবং কালিম্পংয়ে এই কালাজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।
অন্যদিকে বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদের মতো জেলায় কালাজ্বরে আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই রোগ সাধারণত মাছি থেকে ছড়াচ্ছে। এর উপসর্গ হিসেবে চিকিৎসকরা বলেছেন, এক্ষেত্রে জ্বর থাকবে ১৪ দিন। জ্বরের পাশাপাশি খিদে বা ওজন কমবে, শুকিয়ে যাবে চামড়া। রক্তাল্পতা, বমিভাবের মত উপসর্গগুলি দেখা যাবে এই ১৪ দিনে। এমনকি যকৃত বড় হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। সময় মত কালাজ্বর ধরা পড়লে, ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে তা নির্মূল হবে। এদিকে কলকাতায় এখনও এই জ্বরে আক্রান্তের খবর মেলেনি।
স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে আগত বেশ কয়েকজন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। বিগত কয়েকদিনে এই জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেড়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সমস্ত রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কালাজ্বরে আক্রান্তদের বিনিমূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোনও প্রাইভেট ল্যাবরেটরি বা হাসপাতালে পরীক্ষায় যদি এই জ্বরের জীবাণু ধরা পড়ে, তবে তা সঙ্গে সঙ্গে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। খাবারের পাশাপাশি চিকিৎসার সমস্ত খরচ রাজ্য সরকার নেবে। জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক পুরো বিষয়টি তদারকি করবেন এবং রোগীদের পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হবে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আগামী দিনে এই জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা আরও বেশি বাড়বে। আপাতত এই রোগে মৃত্যুর খবর মেলেনি।
উল্লেখ্য, ১৯৩০ থেকে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত ভারতের একাধিক রাজ্যে কালাজ্বরের দাপট লক্ষ্য করা গিয়েছে। ১৯৫৬-তে হঠাৎ করেই এই রোগের দাপট কমতে শুরু করে। এরপর মাঝেমধ্যেই এই জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। সাধারণভাবে এটি এপিডেমিক হিসাবেই রয়ে গিয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করেই ফের আবার উপসর্গ দেখা দিলে প্রশ্ন উঠছে, কী করে এই রোগকে এড়ানো যাবে? সাধারণত শিশুরা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। বলা হচ্ছে, দীর্ঘদিন জ্বরে ভুগলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। একদিকে কোভিড, অন্যদিকে কালাজ্বর। সব মিলিয়ে আতঙ্কিত দেশবাসী।