মহানগর ডেস্ক: উচ্চ আদালতের উপর ভরসা রেখে এতদিন টেট পরীক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। সল্টলেকের করুণাময়ী চত্বর থেকে অবস্থানরত চাকরি পরীক্ষার্থীদের উঠে চলে যেতে হবে। ১৪৪ ধারা জারি থাকায় সেখানে জমায়েত নিষিদ্ধ। তাই সেখান থেকে বিক্ষোভকারী চাকরিপ্রার্থীদের সরে যেতে হবে। বৃহস্পতিবার দিনভর ধরে চলল এমনই পুলিশের ঘোষণা। তবে রাত নামতেই চিত্রটা যেন বদলে গেল। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসের সামনে কার্যত চলল লড়াই। বিক্ষোভকারীদের সেখান থেকে হটিয়ে দেওয়া হল। আর প্রশাসনের এই আচরণে বেশ ক্ষুব্ধ বাংলার বুদ্ধিজীবীরা। সোশ্যাল মাধ্যমে সেই নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র নিন্দা।
অপর্ণা সেন, শ্রীলেখা মিত্র অনীক দত্তের মতো বুদ্ধিজীবীরা তীব্র প্রতিবাদ জানালেন তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের রায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কার্যালয়ের সামনে জারি থাকা ১৪৪ ধারা অমান্য করা যাবে না কোনোভাবেই। এসিপি ভবনের সাথে যাতে সরকারি কর্মী, আধিকারিকরা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারেন সেই দায়িত্ব ছিল পুলিশেরও উপরে। টেট আন্দোলনকারীদের ধর্নায় সেই যাতায়াত যাতে নিরাপদে করা যায়। সেদিকে নজর রাখছিলেন হাইকোর্ট। সেই মত কাজ শুরু করে পুলিশ। প্রথমে মাইকিং করে আন্দোলনকারীদের সেখান থেকে সরে যেতে বলেন। বারবার হাইকোর্টের রায়ের কথা উল্লেখ করে পুলিশ অফিসাররা বিক্ষোভকারীদের জায়গা ছেড়ে দিতে বলেন। অন্যদিকে চাকরির দাবিতে অনড় বিক্ষোভকারীরা। চাকরির নিয়োগপত্র না পেলে কোনভাবেই সেই জায়গা থেকে সরবে না এ কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন ২০১৪ সালের টেট উর্ত্তীণরা।
তাই মাঝ রাতে অভিযান চালিয়ে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেওয়া হয়। মিনিট পনেরোর মধ্যে সকলকে সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। অনশনে যারা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তাদেরকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পাঠানো হয় বাকি কয়েকজনকে প্রিজনভ্যানে তোলা হয়। তবে বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ পুলিশ রীতিমতো দমন-পীড়ন চালিয়েছেন। রীতিমতো মারধর করে টেনে হিঁচড়ে সবাইকে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। যার মধ্যে এখনো তিনজনের খোঁজ মিলছে না।
এর পরেই টুইটারে অপর্ণা সেন লিখেছেন,’ অনশনকারীদের গণতান্ত্রিক অধিকার হস্তক্ষেপ করছে তৃণমূল সরকার। অহিংস আন্দোলনের বিরুদ্ধে ১৪৪ ধারা জারি করা হলো কেন? সরকারের অনৈতিক আচরণের তীব্র প্রতিবাদ করছি’। শ্রীলেখা মিত্র এদিনকে ফেসবুকে আন্দোলনকারীদের কয়েক জনের ছবি দিয়ে লিখেছেন,’ পড়াশোনা করে যে এ রাজ্যে চাকরি পায় না সে, বরং পুলিশের গাড়ি চড়ে সে’।
একইসঙ্গে শ্রীলেখা মিত্র আরো লেখেন,’ খুব অন্যায় করেছে ওরা, অধিকারের দাবিতে অনশনে বসে তাই না? নাকি এটাও সিপিএমের ষড়যন্ত্র’?