মহানগর ডেস্কঃ সাহিত্যপ্রেমীদের গোটা বছরের অপেক্ষার অবসান। শুরু হয়েছে অষ্টম এপিজে বাংলা সাহিত্য উৎসব বা এবিএসইউ। এই উৎসবের অপেক্ষা সাহিত্যপ্রেমীদের কাছে কোনও অংশেই বইমেলার থেকে কম কিছু নয়। তিন দিন ধরে অনুষ্ঠিত এই উৎসবে বিশিষ্ট সাহিত্যিকদের আলোচনা, মত প্রকাশ সবটাই সাহিত্যপ্রেমী মানুষের উৎসাহের বিষয়। তবে ২০১৫ সালে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠানের মাঝেই কভিডের দু’ দুটো বছরের থমকে যাওয়া। না ঠিক থমকে যাওয়া নয়। ২০২০-র ষষ্ঠ বাংলা সাহিত্য উৎসব ভার্চুয়াল ফরম্যাটে, ২০২১ এর সপ্তম বাংলা সাহিত্য উৎসব হয়েছিল মিশ্র পদ্ধতিতে। তবে চলতি বছর সেইসব থেকে পেরিয়ে এসে ফের অফলাইন মোডে।
কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের অক্সফোর্ড বুকস্টোরে ২৫ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার এই উৎসবের সূচনা করেনভাষাতত্ত্ববিদ, সাহিত্য সমালোচক, শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার। এদিন অনুষ্ঠানের উদ্বোধনের সময়তেই ঘোষণা করা হয় এই অক্সফোর্ড বুকস্টোরের শতবার্ষিকী উদযাপনকে স্মরণীয় করে রাখতে লিটল ম্যাগাজিন কর্নার চালু করা হল। গোটা ভারতে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত হয় ২০০০ লিটল ম্যাগাজিন। সেইসব ম্যাগাজিনকে অনলাইনে মানুষের কাছে পৌঁছনোর জন্য অক্সফোর্ডের অনলাইন স্টোরের পরিকল্পনাও আছে বলে জানানো হয়েছে।
বুকস্টোর-এর সিইও এবং এবিএসইউ-র ডিরেক্টর স্বাগত সেনগুপ্ত জানান, ‘এবিএসইউ-এর লক্ষ্য হল বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়া। চমৎকার সব সাহিত্যকর্ম সৃজন করা সত্ত্বেও বাংলা লিটল ম্যাগাজিনকে বৃহত্তর পাঠকের দরবারে পৌঁছতে বহু লড়াই করতে হয়েছে। আমাদের এই বুকস্টোর শতবর্ষের অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ। আমরা চাই বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিতে। বাংলা লিটল ম্যাগাজিনকে নিয়ে আমাদের উদ্যোগ সেই প্রয়াসেরই অঙ্গ।’
এবিএসইউর অষ্টম বার্ষিক উৎসবের সূচনাপর্বে অক্সফোর্ড বুকস্টোরসের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে পবিত্র সরকার বলেন, ‘ “অক্সফোর্ড বুকস্টোর খুব ভালো একটা উদ্যোগ নিয়েছেন। একসময় কলকাতার রাস্তায় কয়েকটা দোকানে লিটল ম্যাগাজিন বিক্রি হত। কিন্তু সেই দোকানগুলো হারিয়ে গেছে। তাই অক্সফোর্ড বুকস্টোরে তাদের জন্য একটা বিশেষ জায়গা সারা বছর ধরে থাকবে–এটা খুবই আনন্দের কথা। লিটল ম্যাগাজিনের পাঠক বেশ নির্দিষ্ট, এবং যে ধরনের লেখা প্রকাশিত হয়, সেটা আলাদারকমের আর জনপ্রিয় পত্রিকায় ছাপাও হয় না। অক্সফোর্ড বুকস্টোরের এই উদ্যোগের মাধ্যমে লিটল ম্যাগাজিরের প্রকাশক-পাঠকপরিবার খুবই উপকৃত হবেন”।
তবে শুধু অফলাইনই নয়, বিশ্ব পরিসরে এই উৎসবের জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে, নভেম্বরের ২৫, ২৬ ও ২৭ – এই তিন দিনই এবিএসইউর লাইভ স্ট্রিমিং হচ্ছে এপিজে বাংলা সাহিত্য উৎসব ফেসবুক পেজে এবং ইউটিউব চ্যানেলে। স্বাগত বসু জানান, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অনুষ্ঠানগুলিকে প্রচার করার উদ্দেশ্য একটাই, অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত না থাকতে পারলেও ভার্চুয়াল ভাবে অনুষ্ঠানের সঙ্গে মানুষ যাতে যুক্ত থাকতে পারেন।
অষ্টম এবিএসইউ উৎসবে উপস্থিত থাকছেন বিশিষ্টজনেরা। এঁদের মধ্যে রয়েছেন পবিত্র সরকার, হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত, অশোক বিশ্বনাথন, অনীক দত্ত, শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়, আবুল বাশার, রূপম ইসলাম, সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিনোদ ঘোষাল, খেয়ালি দস্তিদার, রাহুল ব্যানার্জি অরুণোদয়, বিশ্বনাথ বসু, জয়ন্ত ঘোষাল, স্নেহাশিস সুর, তিলোত্তমা মজুমদার, দেবাশিস দেব, মন্দাক্রান্তা সেন, উল্লাস মল্লিক, কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়, রাজা ভট্টাচার্য, দীপান্বিতা রায় প্রমুখ। হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্তের পরামর্শ অনুযায়ী এবং প্রাক্তন রেডিও জকি রায় চৌধুরির পরিচালনায় এই সব ব্যক্তিত্বদের বেছে নেওয়া হয়েছে।