মহানগর: ধারের টাকা শোধ না করলে নিলামে চড়ানো হয় বাড়ির মেয়েদের (Auction Of women In Rajasthan)! একুশ শতকেও এমন মধ্যযুগীয় প্রথা যে চলতে পারে, তা কারও পক্ষেই বিশ্বাস করা কঠিন। এই ঘটনা যেন মধ্যযুগের কথা মনে পড়িয়ে দেয়। কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানে (Congress Ruled Rajasthan) গোটা ছয়েক জেলায় এমন ঘৃণ্য, বর্বর প্রথার খবর পাওয়া গিয়েছে,যেখানে ঋণ মেটাতে মেয়েদের চড়ানো হয় নিলামে। এবং রীতিমতো স্ট্যাম্প পেপারে লিখে এই অমানবিক নিলাম হয়। আর তা যদি করতে কেউ অস্বীকার করে, তাহলে গ্রাম-পঞ্চায়েতের নির্দেশে মেয়েদের মাকে ধর্ষণ করে (Rape) ঋণদানকারীরা।
এই অমানবিক ঘটনা নিয়ে এবার রাজস্থান সরকারকে নোটিস জারি করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এক বিবৃতিতে কমিশন জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমের খবরের প্রেক্ষিতে তারা নিজে থেকেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এ ব্যাপারে রাজস্থান সরকারের মুখ্যসচিব ও রাজ্যের ডিজিপিকে চার সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি কমিশনকে জানাতে বলা হয়েছে। একটি সংবাদপত্রের খবর উল্লেখ করে কমিশন জানায় যখন কোনও আর্থিক লেনদেন ও ঋণ মেটানো নিয়ে সমস্যা হয়,তখনই টাকা ফেরত পেতে খাতক পরিবারের আট থেকে আঠরো বছরের মেয়েদের নিলামে চড়ানো হয়। এবং যা করা হয় স্ট্যাম্পপেপারে সইসাবুদ করেই। কমিশন জানিয়েছে একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে নিলামের পর মেয়েদের উত্তরপ্রদেশ,মধ্যপ্রদেশ, মুম্বই,দিল্লি, এমনকী বিদেশেও পাঠানো হয়।
সেখানে তাদের ওপর যৌনশোষণ চলে। যৌন শোষণের পাশাপাশি চালানো হয় অত্যাচার। তাদের ক্রীতদাস হিসেবে রাখা হয়। যদি ঘটনাটি সত্যি হয়,তাহলে রিপোর্ট মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল। এ ব্যাপারে রাজস্থান সরকারের মুখ্যসচিবের কাছ থেকে বিশদ রিপোর্ট চেয়েছে কমিশন। একইসঙ্গে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তার রিপোর্টও চেয়েছে তারা। যদি তা করা না হয়,তাহলে এই মধ্যযুগীয় প্রথা আটকাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তাও জানাতে বলা হয়েছে। কমিশন আরও জানিয়েছে রিপোর্টে রাজ্য সরকার কীভাবে পঞ্চায়েতি রাজ বা সংবিধানের নিদানমতো গ্রাম পঞ্চায়েতের জাতভিত্তিক ব্যবস্থার অবলুপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করছে, রিপোর্টেও সে কথা জানাতে হবে। একইসঙ্গে রাজ্যে নাবালিকা ও মহিলাদের মর্যাদা রক্ষা ও তাদের মানবাধিকার সুরক্ষিত করার বিষয়টি নিশ্চিত করার কথাও ওই রিপোর্টে জানানোর কথা জানিয়েছে মানবাধিকার কমিশন।