মহানগর ডেস্ক: ধসে যাওয়ার মত অবস্থা হয়েছে বাংলাদেশের। তবুও ক্ষীণ হয়ে জ্বলছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার প্রদীপ।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১০৪ রানে হেরে গিয়েও তাদের হাতে শেষ সুযোগ রয়েছে। এমনকি পাকিস্তানের মতো অন্য দলের উপর নির্ভর না করেই তারা বাকি তিনটি ম্যাচ জিতলেই সেমির টিকিট পেয়ে যাবেন শাকিব আল হাসানরা। যদিও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ফর্ম নিয়ে সন্দেহ আছে যে তারা আদৌ এই সুযোগকে নিজেদের ভাগ্য কতটা বদলাতে পারে সেই বিষয়ে।
উল্লেখ্য ‘সুপার ১২’-র ‘গ্রুপ ২’-র হিসেব বলছে দল ভারতের নেট রানরেট ৪, দক্ষিণ আফ্রিকার ৩, জিম্বাবোয়ের ৩,
বাংলাদেশের ২, পাকিস্তান ০
নেদারল্যান্ড ০। এরইমধ্যে বাংলাদেশের তিনটি ম্যাচ বাকি আছে। ৩০ অক্টোবর ২২ গজের মুখোমুখি হতে চলেছে জিম্বাবোয়ে ও বাংলাদেশ। ২ নভেম্বর আবার ভারতের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে শাকিবদেরকে। লিগের শেষ ম্যাচ ৬ নভেম্বর, আর রবিবার এই ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। অর্থাৎ তাদের পয়েন্ট সর্বোচ্চ আট হতে পারে। তারজন্য যা যা করতে হবে শাকিবের দলকে।
১) বাংলাদেশকে বাকি তিনটি ম্যাচ জিতে আট পয়েন্টে কভার করতে হলে অবশ্যই হারাতে হবে ভারতকে। কিন্তু তাও ভারতের সর্বোচ্চ পয়েন্ট হতে পারে আট। তাই বাংলাদেশ চাইবে যে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জিম্বাবোয়েকে হারিয়ে দিক ভারত। সেক্ষেত্রে দুই আফ্রিকার দলেরই পয়েন্ট সাতের বেশি হবে না। ফলে সেমিফাইনালে চলে যাবে ভারত এবং বাংলাদেশ।
২) বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শাকিবরা ভারতকে হারিয়ে দিলেন। ভারত আবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে হেরে গেল এবং জিম্বাবোয়েকে হারিয়ে দিল। তাহলে রোহিত শর্মাদের পয়েন্ট ছয় হবে। সেক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকার (বাকি সব ম্যাচ জিতলে প্রোটিয়াদের পয়েন্ট হবে নয়) সঙ্গে সেমিতে চলে যাবে বাংলাদেশ (বাংলাদেশ সব জিতছে ধরে আট পয়েন্ট)। দ্বিতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনালে গ্রুপ ‘১’-র শীর্ষ স্থানাধিকারী দলের সঙ্গে খেলা পড়বে শাকিবদের।
৩) এবার যদি জিম্বাবোয়ে দুটি ম্যাচে (ভারত এবং নেদারল্যান্ডস) জেতে, তাহলে সিকন্দর রাজাদের পয়েন্ট হবে ৭ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হেরে যাবে ধরে)। তাহলেও বাংলাদেশ চলে যাবে সরাসরি সেমিফাইনালে। কারণ সেক্ষেত্রে ভারতের সর্বোচ্চ পয়েন্ট হবে ছয় (জিম্বাবোয়ে ও বাংলাদেশের কাছে হার এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জয়)। তবে ভারত যদি দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে যায়, তাহলে বাংলাদেশের সমস্যা হবে না। তাহলেও সেমিতে উঠে যেতে পারবেন শাকিবরা।
তবে শাকিবদের সামনে থাকা সুযোগ বাস্তবে সম্ভব হবে কিনা, সে বিষয়ে ধন্দ আছে। উল্টো দিকে দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা ভারত যদি ছিটকে যায়, তাহলে জিম্বাবোয়েরই সেমি ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা বেশি। কারণ এমনিতেই পয়েন্টের নিরিখে বাংলাদেশকে পিছনে ফেলে দিয়েছে জিম্বাবোয়ে। নেট রানরেটও ঝকঝকে। তবে সবকিছুর পর শাকিবদের প্রতিপক্ষ চূড়ান্ত শক্তিশালী। বিশেষত ভারত এবং পাকিস্তান তো অনেকটাই এগিয়ে। এমনকি জিম্বাবোয়ে যেভাবে বল পেটাচ্ছে, তাতে ছন্দহীন শাকিবদের কাজটা বেশ কঠিন হতে চলেছে। ফলে আদৌও বাংলাদেশ আট পয়েন্টে পৌঁছাতে পারবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
অন্যদিকে, জিম্বাবোয়ে ইতিমধ্যে গ্রুপের তিন ‘কঠিন’ প্রতিপক্ষের মধ্যে দুটি দলের (দক্ষিণ আফ্রিকা এবং পাকিস্তান) বিরুদ্ধে খেলে ফেলেছে। বাকি আছে ৩ টি ম্যাচ। সেই ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ, নেদারল্যান্ডস এবং ভারতের বিরুদ্ধে। অনেকটা এগিয়ে থাকা ভারতের বিরুদ্ধে জিম্বাবোয়ে হেরে যাবে ধরে নিলেও জিম্বাবোয়ে সাত পয়েন্টে পৌঁছে যেতে পারে (বাংলাদেশ এবং নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে দিলে)। আর ছন্দে থাকা জিম্বাবয়ের কাছে ছন্দ হীন বাংলাদেশ যদি হেরে যায়, তাহলে ৬ পয়েন্ট নিয়েই সেমিতে ওঠার স্বপ্ন অধরাই রেখে ঘরে ফিরতে
হবে শাকিবদের।