মহানগর ডেস্ক, কলকাতা: ফের দুর্নীতি কাণ্ডে ধরা পড়ল রাজ্যের আরও এক বড় মাথা। কিন্তু চোরের মায়ের বড় গলা। তবে পুলিশের হাতের নাগালে এসেই ভোল বদল। তিনি নাকি দুর্নীতি করেননি। ৫৪ ঘণ্টার অভিযান শেষে অবশেষে ইডির হাতে গ্রেফতার হলেন বাকিবুর রহমান। হন তিনি। গত দুদিন ধরেই তাঁর কৈখালির অভিজাত আবাসনে তল্লাশি চালিয়েছে ইডি। অবশেষে ৫৪ ঘন্টা অভিযানের পর শুক্রবার সকালে বাকিবুরকে গ্রেফতার করল ইডি। কৈখালি থেকে সিজিও কমপ্লেক্সে যাওয়ার পথে বাকিবুর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আমি কোন দুর্নীতি করিনি।” তবে এর পেছনে কোনও বড় মাথার খোঁজে রয়েছে ইডি।
পুরনিয়োগ মামলায় তদন্তের রেশ ধরে সম্প্রতি নদিয়ার একাধিক চালকলে হানা দেয় ইডি আধিকারিকরা। যেখানে শুধু চালকল নয়, তাঁর আটাকলের খোঁজও মেলে। এর সূত্র ধরেই বাকিবুরের কৈখালির আভিজাত্য আবাসনে হানা দেয় ইডি। সেখানেই ৫৪ ঘন্টা ম্যারাথন তল্লাশি চালায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সূত্রের খবর, পুরনিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে রেশনবণ্টনে দুর্নীতিরও অভিযোগ রয়েছে।
শুক্রবার সকালে বাকিবুরকে গ্রেফতার করার পর ইডি তাঁদের গাড়িতে চাপিয়েই সিজিও কমপ্লেক্সে তাঁকে নিয়ে যায়। প্রথমে তাঁকে ফের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হবে। তাঁর বাড়ি থেকে প্রচুর নথিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কোভিড মরসুম, তখন ২০২১ সাল, তখনই বাকিবুর রহমানের বিরুদ্ধে নদিয়া জেলার বেশকিছু জায়গায় রেশনে অতি নিম্নমানের চাল, খারাপ সামগ্রী সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছিল। এরপরই বিষয়টি তদন্ত করতে ইডি মাঠে নামে। এরপরই বাকিবুরের অফিস, চালকল-সহ বিভিন্ন জায়গায় চলে ম্যারাথন তল্লাশি। বাকিবুরের সঙ্গে এক প্রভাবশালী নেতারও যোগাযোগ রয়েছে। ‘রেশন দুর্নীতিতে’ বহু কালো টাকা সাদা হয়েছে বাকিবুরের হাত ধরে। তাঁর একাধিক শেল কোম্পানি থেকে একাধিক ব্যবসা, শপিং মল, নার্সিংহোমেরও হদিশ পেয়েছে ইডি। রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, পুরনিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগের তালিকা লম্বা হলেও রেশন দুর্নীতির অভিযোগ প্রথম সামনে এল সবার। এরপরেই বাকিবুরের বাড়ি, অফিস, ব্যবসায়ীক কেন্দ্র, চালকল সবেতেই তল্লাশি চালায় ইডি। তিনদিন ধরে চলে তল্লাশি। তবে ইডি সূত্রে খবর, এই বাকিবুর ‘নিমিত্ত’ মাত্র। এই বাকিবুরকে জালে নিয়ে বড় কোনও মাথার গন্ধ পেয়েছে ইডি।