মহানগর ডেস্ক: ফের নাশকতার শিকার বাংলাদেশ। ট্রেনে আবার আগুন লাগানো হল। এবার খোদ ঢাকা শহরেই ট্রেনে এই আগুন লাগানো হয়েছে। ঢাকার তেজগঞ্জ এলাকায় মঙ্গলবার সকাল ৫টা নাগাদ আগুন লাগানো হয়।দুষ্কৃতীরা তেজগাঁও এলাকায় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেয়।
এখনো পর্যন্ত এই ঘটনায় চারজনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে,মৃতদের মধ্যে একজন শিশুও আছে। ওই এক্সপ্রেস ট্র্রেনটির তিনটি বগিতে মঙ্গলবার ভোর ৫টা নাগাদ আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এই প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাকিবুল হাসান জানান, তেজগাঁও ফায়ার স্টেশনের তিনটি ইউনিট খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনে আগুন।আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে সকাল পৌনে ৭টার দিকে।
এই বিষয়ে তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন জানান, “সেখান থেকে এখন পর্যন্ত একজন মহিলা, একজন শিশু এবং দুই জন পুরুষের মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।” পাশাপাশি, স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রেনটি ঢাকায় আসছিল নেত্রকোনা থেকে। যাত্রীরা বিমানবন্দর স্টেশন পার হয়ে খিলক্ষেতে আসার পরেই তিনটি বগিতে আগুন দেখতে পান।এরপর চালক তাদের চিৎকার শুনে ট্রেনটি তেজগাঁও স্টেশনে থামান। সকাল ৭টার দিকে চার জনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যায় রেলওয়ে থানা পুলিশ। তাদের মধ্যে দুজনের পরিচয় জানা গেছে।তারা হলেন—নাদিরা আক্তার পপি (৩৫) ও তার ছেলে ইয়াসিন (৩)। বাকি দুজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। তাদের বয়স আনুমানিক ৩০ থেকে ৪০ বছর।
নিহত নাদিরার ভাই ও প্রত্যক্ষদর্শী হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, তাদের বাড়ি নেত্রকোনা সদর উপজেলার বরুনা গ্রামে। গত ৩ ডিসেম্বর তারা গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন। সেখান থেকে গত রাত ১২টার দিকে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে ঢাকায় রওনা দেন। ভোরে তাদের ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল। তার সঙ্গে ছিলেন বোন নাদিরা ও নাদিরার দুই ছেলে ইয়াসিন (৩) ও ফাহিম (৮)। হাবিবুর আরও জানান, তেজগাঁও স্টেশন এসে ট্রেনটি থামলে কয়েকজন যাত্রী সেখানে নেমে যান। সেসময় তাদের পেছনের সিটে থাকা দুইজনও নেমে যায়। পরে ট্রেন চলতে শুরু করা মাত্রই পিছনের সিট থেকে আগুন জ্বলে উঠে। মুহূর্তেই আগুন পুরো বগিতে ছড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকে দৌঁড়ে তিনি ফাহিমকে নিয়ে ট্রেন থেকে নামতে পারলেও ভেতরে আটকা পড়েন ছোট ছেলে ইয়াসিন ও তার মা নাদিরা। তাদেরকে আর কোনোভাবেই সেখান থেকে বের করতে পারেননি।ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ট্রেনটি কমলাপুর স্টেশনে নিয়ে আসা হয়েছে। এখন ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক।’