Home Featured BELEGHATA ROAD: বেলেঘাটার প্রমোটারের দরজার গুঁতোয় রাতারাতি উধাও বুদ্ধ-গান্ধী-বিবেকানন্দের মূর্তি

BELEGHATA ROAD: বেলেঘাটার প্রমোটারের দরজার গুঁতোয় রাতারাতি উধাও বুদ্ধ-গান্ধী-বিবেকানন্দের মূর্তি

by Arpita Sardar

মহানগর ডেস্কঃ ‘ছিল নেই মাত্র এই’ আরে মশাই এ মানুষের জীবন নয়। এ হল বিশ্ব বরেণ্য মনীষীদের মূর্তি! সেই মূর্তি নিমেষে হাওয়া! আর যে মূর্তি স্থাপন করা প্রশাসনের, সেই মূর্তিই কিনা রাস্তার মূল প্রান্ত থেকে সরে গিয়ে একেবারে এক কোণে চলে গেল! এমনই অবাক করা ঘটনা ঘটেছে বেলেঘাটার সুরেশচন্দ্র ব্যানার্জি রোডে।

বেলেঘাটা রোডের একদম মাইলফলক এলাকা এক সময়ের আলো ছায়া সিনেমা হল। সেই সিনেমা হলের সামনেই ছিল কর্পোরেশনের স্থাপন করা গান্ধী-বুদ্ধ-বিবেকানন্দের মূর্তি। সেই মূর্তি শুক্রবার রাতেও দেখতে পেয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা, অথচ শনিবার সকাল থেকেই সেই তিন মনীষীর মূর্তি উধাও। কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, রাতারাতি এই মূর্তি সরে যাওয়ার পিছনে স্থানীয় প্রমোটর রাজু নস্করের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

ওই এলাকায় অর্থাৎ ১৫০/৫ এবং ১৫০/৬ সুরেশচন্দ্র ব্যানার্জি রোডের জমির উপরে চলছে একটি ফ্ল্যাট নির্মাণের কাজ। এলাকার প্রমোটর রাজু নস্কর সেই কাজের সঙ্গে আছেন বলে জানা যাচ্ছে। ওই ফ্ল্যাটের মেইন গেট তৈরির আগে আগেই ওই মূর্তি উধাও। তিন মনীষীর ওই মূর্তি এই মুহূর্তে রাস্তার এক কোণে আপাতত ঠাই পেয়েছে। জানা যাচ্ছে, ওই প্রমোটর রাজু নস্কর নিজে ওই এলাকার বিধায়ক পরেশ পালের ঘনিষ্ঠ। কিছুদিন আগের এক ছবিতে দুজনের একসঙ্গে দেখা যায়। সেই দৌলতেই ক্ষমতার অপব্যবহার করার সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন তিনি। শুধু আজ নয়, বর্তমান শাসকদল ক্ষমতায় আসার পরেই রাতারাতি তৎকালীন সিপিএম বিধায়ক তথা মন্ত্রী মানব মুখার্জির শিবির ত্যাগ করে এই জমানার নেতাদের ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন।

৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অলকানন্দা দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হয়েছিল মহানগর ২৪x৭ এর পক্ষ থেকে। তিনি পার্টিতে থাকায় সেই বিষয়ে কোনও উত্তর দিতে চাননি। স্থানীয় বিধায়ক পরেশ পালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই কুলু-মানালী বেড়াতে যাওয়ায় মূর্তি উধাও হওয়ার কোনও বিষয় তিনি জানেনই না। রবিবার সেই জায়গা পরিদর্শনে তিনি যাবেন বলে জানিয়েছেন। এদিকে বেলেঘাটা থানার ওসি প্রেমজিৎ চৌধুরী কে প্রথমে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘মূর্তি উধাও হয়ে গেল! কোথায় আমাদের কাছে তো সেরকম কোনও খবর নেই’ । তার কিছুক্ষণ পরেই তিনি মহানগরকে নিজে ফোন করে জানান, ‘মূর্তি উধাও হয়নি। রিলোকেট করা হয়েছে। তার জায়গায় অন্য মূর্তি বসানো হবে’। পাশাপাশি তিনি এই ব্যাপারে কলকাতা কর্পোরেশনের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।

রাতারাতি এমন মূর্তি স্থানান্তরিত করে দেওয়ার ঘটনায় রীতিমত তাজ্জব এ শহরবাসী। ভুপেন হাজারিকার গানে ছিল ‘সবার হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথ চেতনাতে নজরুল’। এই রাজ্যে এইসব চেতনা এখন অতীত। হৃদয়-মস্তিষ্ক সবকিছুর ঊর্ধ্বে এখন ক্ষমতার অপব্যবহার। তার জন্যই প্রমোটরের খবরদারিতে এই শহরে মনীষীদের মূর্তি ফুটপথ বদল হয় মধ্যরাতে।

You may also like