Home Breaking News তৃণমূল যাত্রাপার্টি, অভিষেক তালপাতার সিপাই, নরেন্দ্র মোদীকে দেখে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি, বললেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়

তৃণমূল যাত্রাপার্টি, অভিষেক তালপাতার সিপাই, নরেন্দ্র মোদীকে দেখে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি, বললেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়

by Mahanagar Desk
46 views

মহানগর ডেস্ক:  আদালতের ময়দান ছেড়ে এবার রাজনীতির ময়দানে বিচারপতি অভিজিৎ  গঙ্গোপাধ্যায়। যাবতীয় জল্পনার অবসান ঘটিয়ে গেরুয়া শিবিরে যোগদানের কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। আগামী ৭ মার্চ আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগদান করবেন বলেই জানিয়েছেন তিনি।

“আমি ৭ তারিখ বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি, বিজেপি একমাত্র সর্বভারতীয় দল, যারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ছে”, মঙ্গলবার সল্টলেকে নিজের বাড়ি থেকে স্পষ্ট জানালেন কলকাতা হাই কোর্টের সদ্য প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি তিনি বললেন কেন তিনি সিপিএমে যোগ দিলেন না এবং বললেন তৃণমূল দলটা আগে ২০২৬ সাল পর্যন্ত আগে টিকুক। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়য়ের এখন নতুন পরিচয়, তিনি রাজনীতিবিদ। একজন রাজনীতিবিদ হিসাবে অভিজিৎ বলেন, “রাজ্যের শাসকদল, দলের মুখপাত্র, কিছু অশিক্ষিত আমার সম্পর্কে, বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে যে ভাবে খারাপ কথা বলেছেন, তাঁদের সেই কাজই আমায় বিচারপতির চাকরি কয়েক মাস আগে ছাড়তে বাধ্য করেছে এবং রাজনীতিতে আসতে বাধ্য করেছে। আমি এর ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়লাম। পেনশনটা যতটা পাওয়ার তা পাবো না।”

মঙ্গলবার রাজ্যের তৃণমূল নেতা ও সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের তাঁর সম্পর্কে কু কথা বলা সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কুকথা বলার জন্য কুখ্যাত। তাঁর শিক্ষা-দীক্ষা, বেড়ে ওঠা, পারিবারিক অবস্থান সম্পর্কে আমার প্রশ্ন থাকছে।” কেন আপনি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন? এই প্রশ্নের উত্তরে অভিজিৎবাবু বলেন, “আমি সিপিআইএম দলে যেতে পারতাম, যাইনি আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি, ধর্ম মানি, ওরা মানে না। জানি না গোপনে মানেন কি না। কংগ্রেস দলটা পরিবারতন্ত্রে বিশ্বাস করে। জয়রাম রমেশের মতো আইআইটি থেকে পাশ কারা মানুষ রাহুল গান্ধির চাইতে অনেক শিক্ষিত, কেন তিনি কংগ্রেস করেন জানি না। অতুল্য ঘোষ, প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা কংগ্রেস সম্পর্কে একটা বই লিখেছেন, সেই বইতে আমি পড়েছি কংগ্রেস কি রকম দল, অতুল্য ঘোষ কী ভাবে কংগ্রেসকে দেখেন। কংগ্রেস একটা পারিবারিক দল। আর তৃণমূলের ভাঙন শুরু, এই দল আর বেশিদিন টিকবে না। আমায় বিজেপি ডেকেছে আমিও বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এভাবেই আমি বিজেপিতে যাচ্ছি।”

তবে বিজেপির কারা তাঁকে বিজেপিতে আহ্বান করেছেন সেই নাম তিনি বলেননি। অভিজিৎ বাবু বলেন, “গত সাতদিন আমি আদালতে যাইনি, বিচার ব্যবস্থায় জড়াইনি, যাতে আমার বিরুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক রেখে আদালতে বিচার করছি বলে অভিযোগ না ওঠে, আমি গত ৭দিন আগে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ করি, বিজেপি নেতৃত্বেও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। আদালতে না গেলে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কুণাল ঘোষদের ক্ষতি হয় না, আমার ক্ষতি হয়।” অভিজিৎবাবু জানান, “আগামী ৭ তারিখ আমি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি। আমি মনে করি তৃণমূল মানে দুর্নীতি।”

নারদকাণ্ড নিয়ে নাম না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তালপাতার সিপাই বলে কটাক্ষ করে অভিজিৎবাবু বলেন, “নারদকাণ্ড একটা চক্রান্ত। কে এক তালপাতার সেপাই না সেনাপতি আছেন, তিনি নিজে নেতা হওয়ার জন্য তাঁর কাকা শ্বশুরের কোম্পানি অ্যালকেমিস্টের মাধ্যমে এই চক্রান্ত করেছেন। আমি ডায়মন্ড হারবারে দাঁড়ালে তালপাতার সিপাইকে লক্ষ লক্ষ ভোটে পরাজিত করে বুঝিয়ে দেব দুবৃত্তকে কি ভাবে জব্দ করতে হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমি একজন প্রকৃত রাজনীতিক বলে মনে করি। নরেন্দ্র মোদী দেশের জন্য কিছু করতে চাইছেন। পরিশ্রম করেন, দুর্নীতিমুক্ত দেশ চান। তাঁকে দেখে আমি বিজেপিতে যাচ্ছি। আমি তৃণমূলকে রাজনৈতিক দল বলে মনে করি না। ওটা সম্পূর্ণ দুর্নীতিগ্রস্থ একটি যাত্রা পার্টি, ওদের যাত্রা পালার নাম মা-মাটি-মানুষ।” শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে অভিষেকের নাম না করে তাঁকে আবার তালপাতার সেপাই বলে বলেন, “শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারি বিচার ব্যবস্থার প্রতিবন্ধকতার জন্য হয়নি বলে তালপাতার সেপাই বলেছেন, ওর পেটে বোম মারলে বিচার ব্যবস্থা নিয়ে কিছু বার হবে? ও কিছু জানে বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে?”

অভিজিৎবাবু বলেন, “তৃণমূলে নেতা-মন্ত্রীরা সমাজবিরোধী। আমি যখন শাসক দলের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছি তখন কিছু দালাল তৃণমূলের হয়ে নেমে পড়েছে। ২০০৯ সালে বামফ্রন্ট সরকার যেমন অবস্থায় পড়েছিল তেমন ভাবে তৃণমূল ভেঙে পড়বে। ২০২৬ পর্যন্ত তৃণমূল দলটা টিকবে বলে মনে করেন? দু-একটা নেতাকে অ্যারেস্ট করলে তৃণমূল দলটা ভেঙে পড়বে।” ভোটে রিগিং করা প্রসঙ্গে সদ্য প্রাক্তন বিচারপতি বলেন, “এবারের নির্বাচনে রিগিং কম হবে। তৃণমূলের দুস্কৃতীদের এসব না করতে বিভিন্ন মহল থেকে বারণ করা হচ্ছে। আমিও বলছি, তৃণমূলের দুস্কৃতীরা যদি ভোটে রিগিং করেন তাহলে তার পরিণতি ভয়ঙ্কর হবে।”

লোকসভা না বিধানসভা কোন ভোটে প্রার্থী হচ্ছেন? এই প্রশ্নের জবাবে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এটা বিজেপি ঠিক করবে।” নারী দিবস উদযাপন কি ভাবে হওয়া উচিত সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “সন্দেশখালিতে নারীদের উপর যে অত্যাচার হয়েছে তাতে এবারের নারী দিবসে তৃণমূলের অফিসগুলির সামনে মহিলাদের ঝাঁটা এবং জুতো নিয়ে প্রতিবাদ করা উচিত।” অভিজিৎবাবু বলেন, “সাধারণ মানুষকে বলছি নিজের শিড়দাড়াটা খাটের তলায় আলো দিয়ে না খুঁজে দেখুন ওটা আপনার শরীরেই আছে। না বলতে শিখুন।” আদালতের কাছে একজন প্রাক্তন বিচারপতি হিসাবে কি প্রত্যাশা? উত্তরে প্রাক্তন বিচারপতি বলেন, “একজন সাধারণ মানুষ হিসাবে বিচার ব্যবস্থার কাছে আমি বলব, কী করে বিচার দ্রুত শেষ করা যায় তা আমি দেখিয়েছি, আশা করব সবাই সেভাবেই কাজ করবেন।” “সন্দেশখালির তদন্ত সিবিআই-র করা উচিত বলে আমি মনে করি। তবে বাংলার পুলিশ অত্যন্ত দক্ষ, রাজনীতিবিদরা পুলিশকে কাজ করতে দেয় না”, বলে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করেন।

You may also like

Mahanagar bengali news

Copyright (C) Mahanagar24X7 2024 All Rights Reserved