সারা দেশে যখন ৩৩ শতাংশ মহিলাদের জন্য সংসদে আসন সংরক্ষণ ঘোষণা করছে ভারত সরকার। তখন পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের ফারাক্কায় নিজের মেয়েকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া বন্ধ করতে বেদম মারলেন, অ্যাডমিট কার্ড লুকিয়ে রাখলেম বাবা। তবে মেয়ের কাছে হার মানলেন বাবা। প্রথমদিন বাধা অতিক্রম করে পরীক্ষা দিল মেয়ে। দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষার আগেই সমস্যায় পড়ার সম্ভাবনা এড়াতে মাকে নিয়ে থানায় চলে যায় ওই পরীক্ষার্থী। অবশেষে দ্বিতীয় দিন ইংরেজি পরীক্ষাও প্রশাসনের সহায়তায় দেয় ওই মেয়ে। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্তে নেমেছে তদন্তকারী পুলিশ প্রশাসন। ওই পরীক্ষার্থী যাতে নির্বিঘ্নে বাকি সব পরীক্ষাগুলো দিতে পারে তার জন্য উদ্যোগী হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। পুলিশ ওই মেয়েটির বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের ইমামনগর হাই স্কুলের এই ছাত্রীর নাম তাহরীমার খাতুন। তার মাধ্যমিকের সিট পড়েছে ফরাক্কা অর্জুনপুর হাই স্কুলে। তাহরীমার অভিযোগ, তার বাবা চাইতেন না সে পড়াশোনা করে। তাই মেয়েকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে বাধা দিতে শুরু করে। কিন্তু, তাহরীমা বাবাকে সাফ জানিয়ে দেয় সে পরীক্ষা দেবেই এবং উচ্চশিক্ষা নেবে। এ নিয়ে বাড়িতে অশান্তি চলছিল। তাহরীমা জানায়, শুধুমাত্র তার লেখাপড়া বন্ধ করতে তাকে এবং তার মাকে মারধর করতেন তার বাবা। বাবার এই অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে বাবার বিরুদ্ধেই থানায় অভিযোগ জানায়।
তাহরীমার মা, নিজের স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ একই অভিযোগ করেছেন। তাহরীমার মা বলেন, ‘‘শুক্রবার থেকে মেয়েটাকে খুব মারধর শুরু করে আমার স্বামী। রাতেও মেয়েকে খুব মেরেছে। তার আগে আমায় মারধর করেছে। ঠিক মতো খেতে পর্যন্ত দেয় না আমাদের। সেই কষ্টের মধ্যেও মেয়েটা নিজের চেষ্টায় পড়াশোনা করছে। পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। কিন্তু, ওর বাবা কিছুতেই ওকে পরীক্ষা দিতে দিচ্ছিল না। ওর বাবা বলছে, পরীক্ষা দিতে যাওয়া যাবে না। মেয়ে পরীক্ষা দিতে চাইলে ওকে প্রচুর মারধর করেছে। শেষ পর্যন্ত আমরা পুলিশের দ্বারস্থ হই।’’