মহানগর ডেস্কঃ একটা দুটো নয়, তিনি নাকি ছ’ছটা রোগের বিশেষজ্ঞ। তাও আবার এমনি জ্বরজারি হলে তবু কোথা ছিল। না, তিনি একাধারে অর্থোপেডিক, একাধারে নিউরো, একাধারে গ্যাস্ট্রো, কার্ডিও, ডায়াবেটিস আরও কত কী যে! একজন ব্যক্তি একাই এতসব বিশেষজ্ঞ হবার সময় পেলেন কখন? প্রশ্ন উঠেছিল সেই নিয়েই। ব্যাস, প্রশ্ন ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই উত্তর খোঁজা শুরু। আর সেখান থেকেই ফলাফল প্রকাশ। ডাক্তারবাবু আপাতত শ্রীঘরে।
পশ্চিম বর্ধমান জেলার কাঁকসা ক্যানেল পাড়ে এক ওষুধের দোকানে নিয়মিত বসতেন নিজেকে ছয় রোগের বিশেষজ্ঞ বলে দাবি করা ভুয়ো চিকিৎসক দেবাশিস পোড়ে নামক ব্যক্তি। পুলিশ সূত্রের খবর এক বছর বা দু বছর নয়, ২০১৯ সাল থেকে টানা তিন বছর ধরে বহাল তবিয়তে গ্রামের মানুষের চিকিৎসা করে যাচ্ছিলেন তিনি। এই বিষয়টার উপরেই নজর যায় পানাগড় নাগরিক মঞ্চের। তাদের তরফেই স্বাস্থ্য দফতরের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এরপরেই নড়েচড়ে বসে জেলা এবং রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
দেবাশিস পোড়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ থেকেই তদন্ত শুরু হয়। তদন্তে জানা যায় দেবাশিস আসলে একজন ফার্মাসিস্ট। সে কোন কলেজ থেকে এমবিবিএস, এম ডি ইত্যাদি ডিগ্রি লাভ করেছেন তার কোনও উল্লেখ প্রেসক্রিপশনে না থাকায় অভিযোগকারীদের সন্দেহের মুখে পড়েন তিনি। পাশাপাশি পানাগড় নাগরিক মঞ্চ দেবাশিসের ভুয়ো সার্টিফিকেটের বিষয় প্রশাসনের নজরে আনে। আর তাতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন এই ভুয়ো চিকিৎসক। জেলা ও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রিট পিটিশন করে।
তদন্তের রিপোর্ট আদালতে জমা পড়তেই দুর্দিন ঘনিয়ে আসতে শুরু করে ওই ভুয়ো চিকিৎসকের। মাস খানেক আগেই কাঁকসায় তাঁর চেম্বার সিল হয়ে যায়। তখনই দেবাশিস বুঝে যায় আগামী দিনে তাঁর গ্রেফতার হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাই আগাম জামিনের আবেদনও চেয়ে রাখে সে। তবে বিচারক সে আবেদন খারিজ করে দেন।
চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার রাতে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের অভিযোগের ভিত্তিতে কাঁকসা থানার পুলিশ গ্রেফতার করে অভিযুক্ত দেবাশিস পোড়ে। আগামীদিনে দেবাশিসের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে পুলিশের তরফে।