বরাবরই বিতর্ক তাঁর সঙ্গে ছায়ার মতো ঘুরে বেরিয়েছে। কখনও তাঁর বলিউড স্টাইলে ঠাঁটবাট, লাল সালোয়ার কামিজ বা মিনি স্কার্ট পরে ভক্তদের দর্শন নিয়ে। কখনও আবার অশ্লীলতার অভিযোগে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। তবু সানি লিওনের পরম ভক্ত মুম্বইয়ের এই স্বঘোষিত মহিলা ধর্মীয় গুরু আজও দাপটে চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁর রঙিন সাম্রাজ্য।
কথামুখ
নাগরিক ওয়েবডেস্ক: আশ্রম চত্বরে ভক্তদের ভিড় শুরু হয়েছে অনেকক্ষণ। যাঁরা ভিড় জমিয়েছেন, তাঁরা প্রায় সকলেই স্বচ্ছল পরিবারের। অনেকেই ঝাঁ চকচকে গাড়ি হাঁকিয়ে এসেছেন। এখন শুধু অপেক্ষা। কখন মা দুর্গার ‘অবতার’ দেখা দেন। একটু চোখের দেখা, ত্রিশূলের ছোঁয়া পেলেই ধন্য হয়ে যাবে জীবন। ভক্তরা পলকহীন চোখে তাকিয়ে আছেন দরজার দিকে। এই বুঝি তিনি সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসেন! কিন্তু তাঁর দেখা পাওয়া মুখের কথা নয়। তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষার পর তিনি ‘দর্শন’ দেবেন কাঁটায় কাঁটায় ঠিক দশ মিনিট। তারপরই আবার উঠে যাবেন তিন তলার একেবারে শেষ ঘরে। যেটা একেবারে অবতারের নিজের ঘর। সেখানে ঘনিষ্ঠ ছাড়া কারও ঢোকার ছাড়পত্র নেই। দিনের অধিকাংশ সময়ই তিনি এই ঘরেই থাকেন। সেখানে চলে তাঁর ‘আধ্যাত্মিক’ কাজকর্ম।
আরব সাগরের তীরে মুম্বইয়ের শহরতলি বোরিভেলি। শহরতলি হলেও শহরের তুলনায় কম ধোপদুরস্ত নয়। আর আশ্রমটিও রীতিমতো চোখ ধাঁধানো। তবে প্রায় সব জায়গাতেই টকটকে লাল রঙের ছড়াছড়ি। কারণ, মা দুর্গার অবতার লাল রং ভীষণ ভালোবাসেন। তাই আশ্রমের প্রতিটি তলার চারদিকে চোখে পড়ার মতো লালের উপস্থিতি। ভক্তরা এবার কিছুটা হলেও অধৈর্য হয়ে পড়েছেন। আর তখনই সিঁড়িতে গুঞ্জন শোনা গেল। ভক্তদের মধ্যে শোনা গেল ফিসফাস। না, সত্যিই তিনি আসছেন। সিঁড়ির ভিড় সরিয়ে যাঁকে দেখা গেল, তাঁকে দেখে কিন্তু অবাক হওয়ার কথাই। কারণ, মা দুর্গার অবতার লাল রঙের সালোয়ার কামিজ পরেছেন। চেহারাটিও বেশ আকর্ষণীয়। গায়ের রং ফরসা। মুখটাও রীতিমতো নজরকাড়া! কপালে লম্বাটে লাল টিপ। স্মিত হাসি ছড়িয়ে আছে সারা মুখে। দু হাতে অজস্র গয়না। ডান হাতে ধরা ছোট্ট একটা ত্রিশূল। সেটা উঁচিয়েই তিনি ভক্তদের বরাভয় দিয়ে থাকেন। ঠোঁটে হালকা লিপস্টিকও যেন দেখা যাচ্ছে। গলায় দুলছে অনেকগুলো সোনার হার। চত্বরে আসার আগেই হরি ওম হরিওম ধ্বনি শোনা যাচ্ছে। এবার দু হাত ওপরে তুলে তিনি সোজা চলে এলেন ভক্তদের মধ্যে। ভক্তরাও তাঁর সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাচ শুরু করলেন। কিন্তু একী! মা দুর্গার অবতার হঠাৎ করে লাফ দিয়ে এক পুরুষ ভক্তের কোলে উঠে পড়লেন। সেইসঙ্গে চলতে লাগল নাচের সঙ্গে শরীরী বিভঙ্গের লীলা। নাচের তালে তালে নিজের শরীরের টাল সামলাতে গিয়ে ওই পুরুষ ভক্তের ওপর গিয়ে পড়লেন তিনি। তারপর একসময় লাফ দিয়েই নেমে পড়লেন কোল থেকে।
মা দুর্গার ‘অবতার’
রজনীশ থেকে আসারাম বাপু, স্বামী নিত্যানন্দ এবং অবশ্যই ডেরা সৌচা সাদা রাম-রহিম বাবা। বিতর্ক, কেলেঙ্কারি আর ব্যাভিচারে লিপ্ত থাকার থাকার পাশাপাশি বিপুল টাকা, বিলাস ঐশ্বর্যে এঁদের কেউ কম যান না। তবে সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছেন রাম রহিম বাবা। গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁর লক্ষ লক্ষ ভক্তের হিংসাত্মক উন্মত্ততা কত দূর যেতে পারে, সেটা গোটা দেশ দেখেছে। আপাতত জেলে রয়েছেন রাম রহিম বাবা। শিষ্যা ধর্ষণে অভিযুক্ত আসারাম বাপুও জেলে। যৌনশোষণের অভিযোগে কাঠগড়ায় উঠেছেন স্বামী নিত্যানন্দ। তবে এতসবের পরেও তথাকথিত ধর্মীয় গুরু নিয়ে মাতামাতি এতটুকু থেমেছে বলে মনে হয় না। বিশেষ করে রাধে মায়ের মতো ধর্মীয় গুরু। একের পর এক বিতর্ক, অশ্লীলতার দায়ে অভিযুক্ত মুম্বইয়ের এই ধর্মীয় গুরুকে নিয়ে ভক্তদের মধ্যে এখনও মাতামাতির শেষ নেই।
মুম্বই কেন, গত কয়েক বছরে নানা মুখোরোচক কীর্তির দৌলতে আসমুদ্র হিমাচলের মানুষ চিনে গিয়েছেন এই মা দুর্গার ‘অবতার’কে। তাঁর লক্ষ লক্ষ ভক্ত বিশ্বাস করেন তাঁদের গুরু-মা সাক্ষাৎ দেবী দুর্গার অবতার। ঘোর কলিতে তাঁর আবির্ভাব হয়েছে দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন করতে। হোক না তিনি সালোয়ার কামিজ বা মিনিস্কার্ট পরা লাস্যময়ী নারী। দুর্গার তো কত রকম রূপই না রয়েছে। এটাও তাঁর এক রূপ। তাঁর ঐশ্বরিক ক্ষমতার ওপর অগাধ বিশ্বাস লাস্যময়ী অবতারের ভক্তকুলের। তাঁরা মনে করেন, দুষ্টের দমনে দেবী দুর্গার এই অবতার মর্ত্যে এসেছেন রাধে মা নাম নিয়ে। তবে অনেকেই তাঁকে ভুল বোঝেন। বিশেষ করে তাঁর চালচলন নাকি অবতার সুলভ নয়। এদেশের গড়পড়তা সাধিকা বা আধ্যাত্মিক গুরু মায়েদের সঙ্গে তাঁর আকাশ পাতাল ফারাক। তিনি গেরুয়া বা সাদা শাড়ি পরে থাকেন না। সবসময়ই লাল রঙের সালোয়ার কামিজ বা মিনি স্কার্ট পরেন। তাই অনেকেই তাঁকে এড়িয়ে চলেন। কারও কারও অভিযোগ, পুরুষ ভক্তদের সঙ্গে আশীর্বাদ দেওয়ার সময় অযথা মাখামাখি করেন, যা সবার কাছে দৃষ্টিকটু দেখায়। ভক্তদের তাঁর গালে চুমু দেওয়ার অনুমতি দেওয়া নিয়ে প্রবল বিতর্ক দেখা দেয়।
বিতর্ক তাঁর সঙ্গে যেন ছায়ার মতো ঘুরে বেড়ায়। খোলামেলা পোশাক আশাক, চালচলন থেকে বলিউড স্টাইলের ঠাঁটবাট। হুমকি, যৌন হেনস্তার অভিযোগের পাশাপাশি গুজরাতের কচ্ছ এলাকার একটি পরিবারের সদস্যদের আত্মহত্যায় প্ররোচনা। অভিযোগের তালিকাটা বিরাট। অভিযোগের জেরে হাজতবাসও করতে হয়েছে তাঁকে। যদিও সব ঝামেলা মিটিয়ে ফের স্বমহিমায় ফিরে এসেছেন মা দুর্গার ‘অবতার’। বছর তিনেক আগের ঘটনাও কম চাঞ্চল্যকর নয়। সেবার কয়েকজন অনুগামীকে নিয়ে গটগট করে ঢুকে পড়েছিলেন নয়া দিল্লি থানায়। থানায় ঢুকে স্টেশন অফিসারকে সরিয়ে তাঁর চেয়ারে বসে পড়েছিলেন তিনি। ছবিতে দেখা গিয়েছিল, স্টেশন অফিসার তাঁর সামনে করজোড়ে কাঁচুমাচু মুখে দাঁড়িয়ে আছেন। আর চেয়ারে বসে স্মিত হাসি হেসে বরাভয় দিচ্ছেন লাল সালোয়ার কামিজ পরা লাস্যময়ী রাধে মা। এরপরই সেই অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়।
বিতর্ক এখানেই থেমে নেই। বছর দুয়েক আগে তাঁর মিনিস্কার্ট পরা লাস্যময়ী ছবি সোশাল মিডিয়ায় আপলোড করেন প্রয়াত কেন্দ্রীয়মন্ত্রী প্রমোদ মহাজনের ছেলে রাহুল মহাজন। তাতে লেখেন- গেস হু। ছবিগুলি নিয়ে তীব্র হইচই দেখা দেয়। মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায় রাহুলের ওই পোস্টটি।
গরিব দর্জি থেকে ঐশ্বরিক উত্থান
পাঞ্জাবের হোশিয়ারপুর জেলার ডোরানগালা গ্রাম। এই গ্রামেরই এক সরকারি অফিসারের ঘরে জন্ম হয়েছিল একটি ফুটফুটে শিশুর। একটু বড় হলে তার নাম রাখা হয় সুখবিন্দর। ছোট থেকেই সে বই টই না পড়ে মন্দিরে গিয়ে থাকতো। পড়াশোনাও বেশিদূর করার আগেই ছেড়ে দিল স্কুল। তখনও সে প্রাথমিক বিভাগ উতরোয়নি। অনুগামীরা বলেন, ছোটবেলা থেকেই তার মধ্যে আধ্যাত্মিকতার ভাব দেখা গিয়েছিল। তাঁদের কথায়, রাধে মায়ের হাতের স্পর্শেই শারীরিক,মানসিক অসুখ ভালো হয়ে যায়।
তার বয়েস যখন ১৭, তখন বিয়ে হয়ে যায় মোহন সিং নামে এক মিষ্টির দোকানের মালিকের সঙ্গে। কিন্তু বিয়ের পর অভাব মেটাতে সুখবিন্দরকে সেলাইফোঁড়াইয়ের কাজ করতে হতো। ততদিনে দু-দুটো সন্তানের জন্মও দিয়ে ফেলেছে হোশিয়ারপুরের গৃহবধূটি। এরই মধ্যে ১০০৮ পরমহংস বাঘ ডেরা মুকেরিয়ার ধর্মগুরু মহন্ত রাম দীনের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন।
এরপরই একেবারে অন্যদিকে মোড় নেয় সুখবিন্দরের। স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর হোশিয়ারপুরের গৃহবধূ হোশিয়ারপুর ছেড়ে পাড়ি জমান মুম্বইয়ে। সেখানে তাঁর শিষ্য হন ব্যবসায়ী মনমোহন গুপ্তা এবং এমএম মিঠাইওয়ালা। তারপর সেখানেই পাকাপাকিভাবে বাস করা শুরু করেন তিনি। তখন থেকেই তিনি রাধে মা। বোরোভেলির ওই বাড়িটিতেই তৈরি করেন রাধে মা আশ্রম। বলিউড স্টাইলে ঠাঁটবাট থেকে শুরু করে সেলিব্রিটিদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং নানা ধরনের কীর্তি তাঁকে জনপ্রিয় করে তুলেছে। দ্রুত হয়ে ওঠেন মিডিয়া সেনসেশান। আর এখন সেখানে সকাল থেকেই ভিড়। সেখানে সাধারণ ভক্তদের পাশাপাশি মাঝেমাঝেই দেখা মেলে ভিভিআইপিদেরও।
অলৌকিক ক্ষমতা ?
আপ টু ডেট বিতর্কিত ধর্মীয় গুরুর ওয়েবসাইটও রয়েছে। সেই ওয়েবসাইট কী লিখছে, সেটা একবার দেখে নেওয়া যাক। তাতে লেখা হয়েছে তাঁর স্বামী চাকরির খোঁজে ভারত ছেডে় যাওয়ার পর তিনি পার্থিব জীবনের মোহ কাটিয়ে ফেলেন। তারপর পরমহংস দেরার সঙ্গে আরও ভালোভাবে জড়িয়ে পড়েন। সেখানকার ধর্মীয় বিষয়টি ভালোভাবে আত্মস্থ করতে নানা জায়গা ঘুরে বেড়ান। বছর কয়েক পরে মুম্বইয়ে ডেরা বাঁধার পরেই অল্পস্বল্প ভক্ত জুটতে শুরু করে। তারপর সেই ভক্তের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে লক্ষে লক্ষে পৌঁছে গিয়েছে।
রাধে মায়ের অলৌকিক ক্ষমতার ঘটনাও ওয়েবসাইটে তাঁর এক ভক্ত বর্ণনা করেছেন। যদিও নিজের মুখে কখনও নাকি দাবি করেননি তিনি। এক ভক্ত লিখেছেন কীভাবে রাধে মায়ের হাতের ছোঁয়ায় উধাও হয়ে গিয়েছিল তাঁর বুকের ব্যথা। তাঁর ঘনিষ্ঠ অনুগামী হলেন ছোটে মা এবং তাল্লি বাবা। এই স্বর্গীয় ক্ষমতা তিনি নাকি পেয়েছিলেন ছোটে মা-র কাছ থেকে। ভক্তদের দাবি, কোনও কোনও সময় তাঁদের উপদেশ দেওয়ার সময় তাঁর গলা ছোটে মায়ের গলার স্বরে পাল্টে যায়।
যদিও তাঁকে নিয়ে বিতর্ক, অভিযোগ যেমন আছে, তেমনই সামাজিক কাজকর্মেও জড়িত রয়েছেন তিনি। জীবসেবা ইনিশিয়েটিভ গড়ে তাঁর মাধ্যমে রক্তদান, গরিব মেধাবী পড়ুয়াদের বিনামূল্যে বই দেওয়া থেকে শুরু করে কাপড়, খাবার, ওষুধ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন বিতর্কিত এই ধর্মগুরু । ২০১৮ সালে অমৃতসর স্বর্ণমন্দিরের জন্য ২০ লক্ষ টাকার বাসনপত্রও দান করেছেন রাধে মা।
বিতর্ক আর কেলেঙ্কারির ঘেরাটোপে
২০১৫ সালের আগস্ট মাসে বোরোভেলির গুপ্তা পরিবারের গৃহবধূ থানায় অভিযোগ করেছিলেন আরও পণের জন্য রাধে মা তাঁর শ্বশুরকে প্ররোচিত করেছেন। সেইসঙ্গে আশ্রমে জোরজবরদস্তি কাজ করতে বাধ্য করে তাঁর ওপর শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছেন। ওই মাসের ৬ তারিখে মুম্বই পুলিশ তাঁকে ফেরার ঘোষণা করে এবং লুক আউট নোটিশ জারি করে। এরপর গ্রেফতার করে পুলিশ। এর পাশাপাশি ডলি বিন্দ্রা নামে এক অভিনেত্রী রাধে মায়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ আনেন। তা নিয়েও কম সমস্যায় পড়েননি এই মহিলা ধর্মীয় গুরু। অন্যদিকে, গুজরাতের কচ্ছের এক পরিবারের অভিযোগ ছিল মারাত্মক। তাদের অভিযোগ ছিল সুসময় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন রাধে মা। কিন্তু তাদের সুদিন ফেরেনি। শেষমেশ আত্মহত্যা করে পরিবারের বেশ কিছু সদস্য। তবে সে যাত্রা বেঁচে যান তিনি।
সানি লিওনের ভক্ত!
গোটা দেশ জুড়ে তাঁর ভক্তের সংখ্যা অসংখ্য। ফেসবুকে ফ্যান ফলোয়িং কয়েক লক্ষ। বোরিভেলির এই আশ্রমে বলিউডের অনেক সেলিব্রিটিই এসেছেন। এখনও আসেন। তাঁর ভক্তদের তালিকায় রয়েছেন বলিউডের অনেক অতীত দিনের তারকাও। এসেছেন রাধে মা যাঁর পরম ভক্ত, সেই মার্কিন পর্নস্টার সানি লিওনও। বলিউডের গায়ক সোনু নিগম রাধে মাকে নাগা সন্ন্যাসিনীদের সঙ্গে তুলনা টেনে তাঁকে ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্ক উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর আশীর্বাদ নিতে গিয়ে কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন বলিউডের বিখ্যাত পরিচালক সুভাষ ঘাই। তবে বিতর্ক, কেলেঙ্কারি যাই থাক, পঞ্চাশ পেরিয়েও এখনও লক্ষ লক্ষ ভক্তদের নয়নের হয়ে রয়েছেন আগাগোড়া রঙিন এই মহিলা ধর্মীয় গুরু।