মহানগর ডেস্ক: যত দিন যাচ্ছে ততই ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠছে ঋণ প্রদানকারী একাধিক অ্যাপ। ঋণ গ্রহণকারী মানুষদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাড়াতাড়ি নেয়ার মাধ্যমে গোপন তথ্য নিজেদের কুক্ষিগত করছে এই অ্যাপগুলি। এমনকি তাদের সাহায্যের ফাঁদ অনেক সময়ই একাধিক মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। মূলত কোভিডের সময় থেকেই মানুষের অভাবের ফয়দা তুলে ঋণের ফাঁদে ফেলছে এই অ্যাপগুলি। এবার তাদের বিরুদ্ধেই কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিল কেন্দ্র।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, ঋণ প্রদানকারী এই অ্যাপগুলির অধিকাংশই চিনা নিয়ন্ত্রিত। তার ফলেই রাজ্যগুলিকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। পাশাপাশি কেন্দ্রের বক্তব্য, ‘এই অ্যাপগুলি শুধু ঋণ দেওয়া নয়, ঋণ আদায়ের জন্য তাদের হেনস্থা, প্রতারণা এবং নিষ্ঠুর আচরণের কারণে অনেক নাগরিক আত্মহত্যা করছেন।’ কার্যত সে কারণেই অ্যাপগুলিকে দেশের নিরাপত্তা, অর্থনীতি এবং নাগরিকদের জন্য ‘বিপজ্জনক’ বলে অভিহিত করেছে কেন্দ্র।
ইতিমধ্যেই সমস্ত রাজ্যকে চিঠি পাঠিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ‘এই বেআইনি অ্যাপগুলি আরবিআই নিয়ন্ত্রিত নয়। এগুলি ডিজিটাল বিজ্ঞাপন, এসএমএস, চ্যাট মেসেঞ্জারের বার্তার মাধ্যমেই গ্রাহকদের ঋণের প্রতি আকৃষ্ট করে ফাঁদে ফেলছে। এই সমস্যা জাতীয় নিরাপত্তা, অর্থনীতি এবং নাগরিক নিরাপত্তার উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।’ এমনকি কেন্দ্র সিটিতে আরও জানিয়েছে, এই বেআইনি ঋন প্রদানকারী অ্যাপগুলির বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি অভিযোগ জমা পড়েছে। তারা স্বল্প মেয়াদী ঋণ দিয়ে এই চড়া হারে সুদ আদায় করে। আর অনেক ক্ষেত্রেই লুকোনো চার্জ থাকে।
অন্যদিকে ঋণের ফাঁদে ফেলে, গ্রাহকের গোপন তথ্য হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণা এবং হেনস্থা করে অ্যাপগুলি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বলেছে, তদন্তে উঠে এসেছে এটি একটি সংগঠিত সাইবার অপরাধ। ইমেল, ভার্চুয়াল নম্বর, ভুয়ো অ্যাকাউন্ট, শেল কোম্পানি, পেমেন্ট অ্যাগ্রিগেটর, API পরিষেবা (অ্যাকাউন্ট যাচাইকরণ, নথি যাচাইকরণ), ক্লাউড হোস্টিং, ক্রিপ্টোকারেন্সি ইত্যাদি ব্যবহার করে এই অপরাধ ঘটানো হচ্ছে। আর এই আবহে অ্যাপগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে রাজ্যগুলিকে বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিতেও পরামর্শ দিয়ে কেন্দ্র জানিয়েছে, ‘সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সঙ্গে অ্যাপ ব্যবহারের ঝুঁকি সম্পর্কে জেলায় জেলায় গণসচেতনতা শিবির করে প্রচার চালানোর অনুরোধ জানানো হচ্ছে।’