মহানগর ডেস্ক: শিউরে ওঠার মত ঘটনা। এক যুবক এতটাই অনলাইন গেমে আসক্ত হয়ে পড়েছিল যে, যার জেরে শ্বাস রোধ করে কিনা খুন করলো নিজ মা-কে । গেম খেলে ধার, আর ধারের টাকা মেটানোর জন্য মায়ের জীবন বিমার টাকা হাতানোর ধান্দা করে । ঘটনার ২দিন পর মৃত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ ।
উত্তরপ্রদেশের ফতেহপুর জেলায় ঘটনাটি ঘটেছে। যুবকের নাম হিমাংশু সিংহ । মৃতার নাম প্রভারানি সিংহ । অভিযুক্ত যুবক মৃতার ছোট ছেলে ।পুলিশ, যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। যুবক জানিয়েছেন, মা প্রভারানিকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন হিমাংশু। ধারের টাকা শোধ করতে মাকে খুন করার ছক কষেছিলেন। পরিকল্পনা মত বাড়িতেই মাকে খুন করেন যুবক, তারপর সেই মৃতদেহ ফেলে দিয়ে আসেন যমুনা নদীর তীরে। ঘটনার ২দিন পর মৃত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ ।
প্রতিবেশী ও পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার ছোট ছেলে, ছোট বেলা থেকেই অনলাইনে গেম খেলার প্রতি আসক্ত ছিলেন। বয়েস বাড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে তার সাথে সেই গেম খেলার আসক্তি ক্রমশ দিন দিন বাড়তে থাকে। গেম খেলতে খলতে একসময় প্রায় দিনই গেম খেলায় হেরে যাচ্ছিল, হেরে গিয়েও কিন্তু অনলাইনে গেম খেলা ছাড়েননি ওই যুবক।এমনকি বাড়ি থেকে যখন টাকা পাচ্ছিলনা, তখন রীতিমত ধার করে খেলা চালিয়ে যেতে থাকে হিমাংশু।তারপরই মাথার ওপর ঋণের বোঝা বাড়তে থাকে। দিনের পর দিন ধার করতে করতে যুবকের খেয়াল ছিলনা যে, ঋণের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে ৪লক্ষ তে ঠেকেছে। গেমের ঋণ কী ভাবে শোধ করবে? সেই চিন্তা করতে করতেই হিমাংশুর মাথায় হুট করে আসে, মায়ের নামে ৫০ লক্ষ টাকার জীবনবিমার কথা।তারপর পরিকল্পনা শুরু করেন, সেই টাকা হাতানোর জন্য । যেই সময় বাবা বাড়ি ছিলেন না, ওই সময় সুযোগ বুঝে মা প্রভারানিকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন হিমাংশু। দেহ লোপাট করার জন্য ট্র্যাক্টরে চেপে দেহ নিয়ে গিয়ে ফেলে আসেন যমুনার পাড়ে।
ঘটনার বেশকিছুটা সময় পর মৃতার স্বামী রোশন সিংহ বাড়ি আসেন, বারি ফিরে এসে স্ত্রী এবং ছেলেকে দেখতে না পেয়ে প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কেউ কোন খোঁজ দিতে পারছিলেন না, এমন সময়ে এক প্রতিবেশী তাঁকে জানান, তিনি ট্র্যাক্টরে করে নদীর দিকে যেতে দেখেছেন হিমাংশুকে। তার পরই সন্দেহ জাগে রোশন সিংহের মনে।তিনি খবর দেন পুলিশকে। দেহ উদ্ধার করার পর পুলিশ হিমাংশুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করে । জেরার মুখে পরে নিজের সব অপরাধের কথা স্বীকার করে হিমাংশু।
এক উচ্চ পদস্থ পুলিশ অফিসার বিজয় শঙ্কর মিশ্র বলেন, ‘‘হিমাংশু তাঁর মাকে খুন করে দেহ ফেলে পালিয়ে যান। দিন দু’য়েক পরে তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়। তাঁকে গ্রেফতার করার পরেই জঘন্য অপরাধের পর্দা ফাঁস হয়। আমরা ঘটনার তদন্ত করছি। এই ঘটনায় আর কেউ যুক্ত আছেন কি না তা জানারও চেষ্টা করা হচ্ছে।‘