মহানগর ডেস্ক: তার অপরাধ আন্তর্জাতিক রক ক্লাইম্বিং (Rock Climbing) প্রতিযোগিতাতে হিজাব বিহীন ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ক্লাইম্ব করার সময়ে তাঁর মাথায় ছিল না হিজাব (Hijab)! বছর ৩৩ এর ওই ইরানি তরুণী হলেন এলনাজ রেকাবি (Elnaz Rekabi Iran Climber)। এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকেই। কারণ ইরান শাসকদের ফতোয়া অমান্য করে প্রকাশ্যে খেলায় অংশ নেওয়া মানে তাদের বিরোধিতা করা। আর যার ফলস্বরুপ তেহরানে ফিরলেই তার উপর শাস্তির খাঁড়া নেমে আসতে পারে।
সূত্রের খবর, রক ক্লাইম্বিং প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়নশিপে হিজাব ছাড়াই তাঁকে অংশ নিতে দেখে ইরান জুড়ে শুরু হয় তোলপাড়। সেই পরিস্থিতির কথা রেকাবির বন্ধুরাই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান। কিন্তু রবিবারের পর থেকে বন্ধুরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। অনেকে মনে করছেন তিনি হয়তো ভয়েই আত্মগোপন করেছেন। আবার গোপন সূত্রে খবর মিলেছে রেকাবির পাসপোর্ট ও মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যদিও সিওলে অবস্থিত ইরান দূতাবাসের পক্ষ থেকে এই তথ্য সত্যি নয় বলে জানানো হয়েছে। বরং দাবি জানানো হয়েছে বুধবারই অন্যান্য খেলোয়াড়দের সঙ্গে একই ভাবে রেকাবি সিওল থেকে ইরানের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন
প্রসঙ্গত, এর আগে হিজাব না পরার ‘অপরাধে’ পুলিশি হেফাজতে বেধড়ক মারে ২২ বছরের তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর থেকে সে দেশের মহিলাদের প্রতিবাদে উত্তাল ইরান। রাজধানী তেহরান-সহ ইরান জুড়ে হিজাব বিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে শতাধিক প্রতিবাদীর মৃত্যু হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, মেয়েরা কী পোশাক পরবেন তা তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়। এমনই সময়ে সিওলের আন্তর্জাতিক রক ক্লাইম্বিং প্রতিযোগিতায় হিজাব ছাড়া অংশগ্রহণকারি প্রতিযোগী রেকাবি খেলেছেন ও চতুর্থ হয়েছেন। কিন্তু তার অভিনন্দনের বালাই নেই। বরং হিজাব না পড়ায় তিনি ইরানে শাসকদের রক্তচক্ষুর শিকার হতে পারেন বলে অনেকের আশঙ্কা। যদিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় রেকাবি ইরানের নাগরিকদের কাছে ক্ষমাও চেয়ে ট্যুইট করে জানিয়েছেন, ‘হিজাব না পরা নিয়ে যে সমস্যা, এটা তার অনিচ্ছাকৃত। আমি ইরানবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’