মহানগর ডেস্ক: রাষ্ট্রকে অবমাননা বা রাষ্ট্র এর বিরূদ্ধে কোনও ষড়যন্ত্রে লিখতে থাকলে কিংবা রাষ্ট্রের স্বার্থ এখনো হয় এমন কোন কাজ সহ রাষ্ট্রকে বিরোধিতা করেই কোন কিছু করলে তার উপরে নেমে আসবে ফৌজদারি দণ্ডবিধির খাড়া। যাকে এককথায় আমজনতা ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতা’ বলেই বোঝে। এবার ফৌজদারি দণ্ডবিধির ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতা’ (Sedition Law) সংক্রান্ত ধারা ১২৪-এ নিয়ে সশোধনের পদক্ষেপ করতে চলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরমানি নির্দেশ, সংসদের (Parliament) শীতকালীন অধিবেশন (Winter Session) পর্যন্ত সময় পাবে কেন্দ্র। প্রয়োজনে সেখানেই ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতা’ ধারা সংশোধনী বিল পেশ করতে পারে কেন্দ্র।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১১ মে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানার বেঞ্চ এক ঐতিহাসিক রায়ে রাষ্ট্রদ্রোহীতা ধারায় মামলার উপর স্থগিতাদেশ জারি করে মামলার শুনানি ও তদন্ত প্রক্রিয়াকে স্থগিত রাখে সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি ধারাটিকে পর্যালোচনা করে নতুন ভাবে তার প্রয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয় কেন্দ্রকে। কিন্তু মে মাসেই শীর্ষ আদালত প্রদত্ত কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারদের প্রয়োজনীয় বিজ্ঞপ্তি জারির মাধ্যমে পুলিশ ও নিরাপত্তা এজেন্সিগুলিকে জানিয়ে দেওয়ার নির্দেশকে এখন কার্যকর কে উঠতে পারেনি কেন্দ্র সরকার। এবার এই ব্যাপারেই বাড়তি সময় দেওয়ার আর্জি জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, সংসদের শীতকালীন অধিবেশন পর্যন্ত সময় দেওয়া হোক।
উল্লেখ্য রাষ্ট্রদ্রোহ সংক্রান্ত এই মামলা আবেদনকারীদের মধ্যে ছিলেন ইন্ডিয়ান নিউজ পেপার গিল্ডের সভাপতি, তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র এবং একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তা। কিন্তু সেই মামলার স্থগিতাদেশ দিয়ে শীর্ষ আদালতের এই রায়কে আইনজ্ঞমহল ঐতিহাসিক বলে আখ্যা দেন।
রাষ্ট্রদ্রোহ বিরোধী ধারা (ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১২৪-এ) নিয়ে কেন্দ্র প্রথম থেকেই গড়িমসি শুরু করে। কখনও জানিয়েছে তারা ধারাটি বাতিলের পক্ষে নয় তো কখনও আবার ধারাটি পুনর্বিবেচনার প্রয়োজনীতা নিয়েও আপত্তি তুলেছে। আবার কখনও বলেছে ধারা বহাল রেখে সেটির প্রয়োগ নিয়ে বিধিমালা তৈরির কথা। তবে আদালতের নির্দেশে অগত্যা ধারা পর্যালোচনায় সায় দিয়ে সেই কাজের দায়ভার কাঁধে তুলে নিয়েছো কেন্দ্রই। এমনকি সরকারের তরফে জানানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং নাগরিকের কোন কোন আচরণ, বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহ বলে বিবেচিত হবে এবং সাজার বিধান ওই ধারায় বলা আছে তার প্রয়োজনীয়তা খতিয়ে দেখতে চান। আর প্রধানমন্ত্রী বরাবর মানবাধিকার, রাজনৈতিক অধিকার রক্ষার পক্ষে।