মহানগর ডেস্ক: ফ্রিজে রেখে দেওয়া লিভ-ইন পার্টনার শ্রদ্ধা ওয়াকারের কাটা মুণ্ডু রোজ বের করে দেখতো নৃশংস খুনে অভিযুক্ত ( Gruesome Murder Case) আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। শ্রদ্ধাকে খুন করার ছক কষেই কী দিল্লিতেই সে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিল কিনা, তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে লিভ-ইন পার্টনারের পঁয়ত্রিশ টুকরো দেহের টুকরো ফ্রিজে রেখে (Kept In Freedge) সে নতুন নতুন মেয়ে ফ্ল্যাটে নিয়ে এসে উদ্দাম যৌনতা চালাতো। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে আফতাব একজন ফুড ব্লগার। দিল্লিতে সে একটি কলসেন্টারে কাজ করতো। শ্রদ্ধার সঙ্গে তার রোজই ঝামেলা, মারপিট হতো। তাদের আলাপ হয়েছিল একটি ডেটিং সাইটে। ২০১৯ সাল থেকে তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। এ বছরই তারা দিল্লিতে আসে।
তার আগে তারা দুজনেই ছিল মহারাষ্ট্রে। দুজনে একসঙ্গে অনেক জায়গায় বেড়াতে গিয়েছিল । গত মার্চ-এপ্রিল মাসে আফতাব ও শ্রদ্ধা পাহাড়ি শহরে গিয়েছিল। মে মাসে তারা হিমাচল প্রদেশে বেড়াতে যায়। সেখানে তাদের সঙ্গে একজনের আলাপ হয়। তিনি দিল্লির ছতরপুরে থাকতো। সেই ব্যক্তির দিল্লিতে একটি ফ্ল্যাট ছিল। দিল্লি ফিরে বেশ কিছুদিন দুজনে সেখানেই ছিল। পরে দিল্লিতে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে আফতাব। সেখানে শ্রদ্ধার সঙ্গে থাকতে শুরু করে। মে মাসের আঠেরো তারিখে আফতাব শ্রদ্ধাকে ওই ফ্ল্যাটে নিয়ে আসে। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে খুনের কিছুদিন আগে ওই ফ্ল্যাটটি ভাড়া করে আফতাব। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন খুনি তাকে খুন করার ছক আগেই কষেছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আফতাব তাদের জানিয়েছে সে শ্রদ্ধাকে খুন করে পঁয়ত্রিশটি টুকরো করে। রাত দুটোর সময় ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে একটা একটা করে প্রতিদিন মেহরলির জঙ্গলে পুঁতে দিয়ে আসতো। একটা কালো ফয়েলে দেহের টুকরো নিয়ে যেতো। পোঁতার পর ফয়েলটি সেখানেই ফেলে দিয়ে আসতো, যাতে কেউ তাকে সন্দেহ করতে না পারে।
এদিন পুলিশ আফতাবকে সঙ্গে গিয়ে জঙ্গলের মাটি খুঁড়ে দশটি দেহের হদিশ পেয়েছে। বাকিগুলির খোঁজ করা হচ্ছে। আফতাবের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল থেকে জানা গিয়েছে সে কিছুদিনের জন্য তার ব্লগে কোনও ভিডিও পোস্ট করেনি। গত ফেব্রুয়ারতে সে শেষ ভিডিও পোস্ট করেছিল। তারপর থেকে তার প্রোফাইলে কোনও পোস্ট করতে দেখা যায়নি। ইনস্টাগ্রামে তার ফলোয়ারের সংখ্যা আঠাশ হাজার। কিছুদিন ধরে আফতাব ও শ্রদ্ধা একই কলসেন্টারে কাজ করতো। খুনের পর প্রতিদিন সন্ধ্যে ছটা-সাতটার সময় ফ্ল্যাটে আসতো আফতাব। তারপর ফ্রিজে রাখা দেহের টুকরো বের করে ফয়েলে ভরতো। পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা জানিয়েছেন খুনির ফ্ল্যাটে প্রায়ই মহিলারা আসতো। শ্রদ্ধাকে খুনের বিষয়টি জানা যায় তার বাবা থানায় অভিযোগ জানানোর পর। তিনি আফতাবের ফাঁসি দাবি করেছেন। জানা গিয়েছে শ্রদ্ধার সঙ্গে সম্পর্কের আগে একাধিক মহিলার সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। খুন করার আগে আফতাব অনেক ক্রাইম ছবি ও ওয়েব সিরিজের ছবি দেখেছিল। তার মধ্যে আমেরিকার ক্রাইম নাট সিরিজ ডেক্সটার ছিল। এই রোমহর্ষক খুনের রহস্য ভেদ করতে এখন জোরদার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।