মহানগর ডেস্ক: ডিসেম্বরের এক ও পাঁচ তারিখ। মোরবিতে সেতু বিপর্যয়ের রেশ কাটতে না কাটতেই বহু প্রতীক্ষিত হাইভোল্টেজ গুজরাতের বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ ( Gujarat Poll Declared) ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। ভোটের ফল গণনা হবে ডিসেম্বরের আট তারিখ। হিমাচল প্রদেশেরও বিধানসভা ভোটের ফল ওইদিন ঘোষণা করা হবে। এদিন সেতু বিপর্যয়ে ( Morbi Tragedy) মৃতদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীবকুমার। কমিশন জানিয়েছে আগামী পরশুদিন ভোটদানের বিজ্ঞপ্তি ইস্যু করা হবে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৪ নভেম্বর। মনোনয়ন প্রত্যাহারের তারিখ ১৭ নভেম্বর। প্রথম দফায় ৮৯টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। দ্বিতীয় দফায় ভোট নেওয়া হবে ৯৩টি আসনে। এদিন ভোটের দিনক্ষণ দেরি ঘোষণা নিয়ে অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে কমিশন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, বর্তমান বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের আঠেরোই ফেব্রুয়ারি। চূড়়ান্ত নির্ঘণ্ট তৈরি করার আগে আবহাওয়া-সহ একাধিক বিষয পর্যালোচনা করা হয়েছে। ইভিএম কারচুপি নিয়ে ওঠা অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে বলেছেন, কথার থেকে কাজ ও ফলাফলই সবকিছুর প্রমাণ দেয়।
কেউ কেউ ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন করলেও তাঁরা একই ইভিএমের মাধ্যমে ভোটে জেতেন তখন কিন্তু তাঁরা নীরব থাকেন। পঁচিশ বছর বিজেপির শাসনে থাকা গুজরাত বিধানসভা ভোট ঘিরে শুরু থেকেই উত্তাপ বাড়িয়ে চলেছে। এবারের ভোটে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আপের আবির্ভাবে ত্রিমুখি লড়াই হতে চলেছে মোদী-শাহের গড়ে। তবে এই মুহূর্তে মোরবী সেতু বিপর্যয়ে অনেকটাই ব্যাকফুটে পদ্মশিবির। এই বিপর্যয়ের ময়নাতদন্তে বেরিয়েছে সরকারের একের পর এক গাফিলতি। এ বছরের শুরুতে পঞ্জাবে বিধানসভা ভোটে জেতার পর এবার গুজরাতের ভোটে নিজেদের পালে হাওয়া কেড়ে নিতে জোর লড়াইয়ে নেমেছে আপ। ইতিমধ্যেই আপের জাতীয় আহ্বায়ক ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল গুজরাত সফরে এসে আগাম প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছেন এবার ভোটে তাদের জেতালে মিলবে প্রচুর পাওনা। যদিও মোদী-শাহের রাজ্যে কেজরিওয়ালকে বিজেপির নামে জয়ধ্বনি শুনতে হয়েছে।
তবে মোরবীর মর্মান্তিক দুর্ঘটনা তাঁদের কতটা ভোট বৈতরনি পার হতে সাহায্য করে,তা নিয়ে কয়েকদিন ধরে চর্চা শুরু হয়েছে। ২০১৭ সালে বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস অবশ্য বিজেপিকে বেশ বেগ দিয়েছিল। তবে শাসকদল এখনও সেই ধাক্কা সামলে নিজেদের ক্ষমতা ধরে রেখেছে। যদিও গত বিধানসভায় বিজেপিকে বেগ দিলেও এবার আপের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি কংগ্রেস। ফেলে কেজরিওয়াল ও আপ নেতাদের প্রচার মোদী শাহের রাজ্যে কংগ্রেসের লড়াইকে শক্ত মোকাবিলার সামনে দাঁড় করিয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও আপের এই চ্যালেঞ্জকে সেরকম গুরুত্ব দিতে নারাজ কংগ্রেস। তারা এবার জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটের প্রচার ভোটের বাক্সে বেশ আশাব্যঞ্জক প্রভাব ফেলবে মনে করা হচ্ছে। কংগ্রেস আপ ও মিমকে বিজেপির বি টিম বলে ভোটারদের সতর্ক করেছে। এখন দেখার এবারের হাইভোল্টেজ বিধানসভা ভোটে শাসক বিজেপি মোরবী সেতুর মতো ভেঙে পড়ে না অটুট থাকে, তা জানার জন্য অবশ্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুদিন।