মহানগর ডেস্ক: দেশজুড়ে হিজাব-প্রতিবাদের (Hijab Law Amendment) জেরে শেষপর্যন্ত টনক নড়ল ইরান সরকারের (Iran Government)। গত কয়েক মাস ধরে অগ্নিগর্ভ ইসলামি রাষ্ট্রে কয়েকশো প্রতিবাদী মানুষের মৃত্যুর ঘটনার পর দশকের পর দশক ধরে চালু থাকা হিজাব আইন পর্যালোচনা করার কথা জানাল ইরান সরকার। হিজাব নিয়ে প্রতিবাদের শুরুটা হয়েছিল বাইশ বছরের তরুণী মাশা আমিনির মৃত্যুর পর থেকে। ইসলামি নীতি মেনে হিজাব না পরায় তাঁকে আটক করে ইরানের মরালিটি পুলিশ। নীতি পুলিশের হেফাজতে আমিনির মৃত্যুর পর ইসলামি রাষ্ট্রে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়। মহিলারা চুল কেটে, হিজাব পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানায়। ক্রমে প্রতিবাদে সামিল হন ইরানের মানুষ। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সেদেশের কোণে কোণে। সাধারণ মানুষ থেকে পড়ুয়ারাও সামিল হয় প্রতিবাদ-বিক্ষোভে । অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় সেদেশে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে হিজাব পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানান মহিলারা। চলে প্রবল বিক্ষোভ। অন্যদিকে বিক্ষোভাকারীদের দমন করতে কড়া পদক্ষেপ নেয় ইরান সরকার।
প্রতিবাদ জানাতে মৌলবীদের পাগড়ি খুলে দেয় স্কুল-কলেজের ছাত্রীরা। সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে পথে নামেন হাজার হাজার মানুষ। বিক্ষোভ সামাল দিতে ইরানের পুলিশ গুলি চালায়। মারা যান তিনশোরও বেশি মানুষ। গ্রেফতার করা হয় প্রচুর মানুষকে। ইরানের অ্যাটর্নি জেনারেল মহম্মদ জাফর মনতাজেরি বলেছেন, পার্লামেন্ট এবং বিচারবিভাগ হিজাব আইনের পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে কিনা, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে। তবে কীধরণের পরিবর্তন হতে পারে, তা বিশদে কিছু জানাননি তিনি। পার্লামেন্ট ও বিচারবিভাগে রক্ষণশীলদের প্রাধান্য রয়েছে। বুধবার রিভিউ টিম পার্লামেন্টের কালচারাল কমিশনের সঙ্গে দেখা করেছে। এক বা দু সপ্তাহের মধ্যে ফল জানা যাবে বলে মনতাজেরি জানিয়েছেন। শনিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট এব্রাহেম রইস জানান ইরানের রিপাবলিকান ও ইসলামিক ভিত্তি সাংবিধানিকভাবে সুরক্ষিত। তবে সংবিধান কার্যকর করার পদ্ধতি রয়েছে। সবমিলিয়ে হিজাব-বিতর্কে উত্তাল ইরান সরকার কী পদক্ষেপ নেয়, তার অপেক্ষায় রয়েছেন সে দেশের মানুষ।
•