মহানগর ডেস্ক: লিভ ইন পার্টনার শ্রদ্ধা ওয়াকারকে নৃশংসভাবে খুনে অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুনাওয়ালার নারকো পরীক্ষার (Narco Analysis) নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির আদালত। লিভ-ইন পার্টনারকে খুন করে পঁয়ত্রিশ টুকরো করে পুঁতে দেওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই বড় রকমের নাড়া পড়ে গিয়েছে। ঘুম ছুটে গিয়েছে তদন্তকারীদের (Investigators)। যে নার্কো পরীক্ষা হবে, সেই নার্কো পরীক্ষা কী। আসুন একটু জেনে নেওয়া যাক। এই পরীক্ষায় যাকে পরীক্ষা করা হবে, তাকে ইনট্রাভেনাস ওষুধ দেওয়া হয়। ওই ওষুধগুলি হল সোডিয়াম পেনটোথাল, স্কোপোলামাইন এবং সোডিয়াম অ্যামিটাল। এই ওষুধ দেওয়া হলে অ্যানাসথেসিয়ার নানা রকমের স্তরে তা প্রবেশ করে। হিপনোটিক বা সম্মোহনের স্তরে ওই ব্যক্তির মধ্যে এমন একটি নিয়ন্ত্রণহীন পরিস্থিতির তৈরি হয়, চেতনা বশে থাকে না, সে এমন অনেক কথা বলে থাকে, যা জ্ঞানত বলা সম্ভব হয় না। কোনও মামলায় জেরা করে যখন ঘটনা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া সম্ভব হয় না,তখনই এই পরীক্ষা করা হয়ে থাকে।
নিয়ম অনুযায়ী এই পরীক্ষার জন্য যার নার্কো টেস্ট করা হবে, তার সম্মতির প্রয়োজন। সুপ্রিম কোর্ট এক নির্দেশ দিয়ে জানিয়েছে নার্কো টেস্ট, ব্রেন ম্যাপিং ও পলিগ্রাফ টেস্ট, যাকে করা হবে তার সম্মতি ছাড়া করা সম্ভব নয়। তবে আদালতে নার্কো টেস্টের সময় যে স্বীকারোক্তি দেওয়া হয়, তা আদালতে গ্রাহ্য হবে না। একমাত্র বিশেষ পরিস্থিতিতে যখন আদালত মনে করবে মামলার ঘটনা এবং প্রকৃতি অনুযায়ী এই পরীক্ষার ফল গ্রহণ করা যেতে পারে। নারকো অ্যানালিসিস শব্দটি গ্রিক শব্দ নার্কো ( অ্যানাসথেসিয়া বা টরপর) থেকে এসেছে। এটি ব্যবহার করা হয় ডায়গোনস্টিক ও সাইকোথেরাপিউটিক কৌশল হিসেবে। বিশেষ করে বারবিচুরেটস। বিশেষজ্ঞদের মতে, নার্কো পরীক্ষার সময় ব্যক্তির স্নায়ু ব্যবস্থায় মিলকিউলার স্তরে প্রভাব এমনভাবে পড়ে যাতে তার বাধা দেওয়ার ক্ষমতা খুবই কমে যায়। এই ঘুম ঘুম আচ্ছন্ন অবস্থায় অপরাধ সম্পর্কে সম্ভাব্য সত্যিটা বেরিয়ে আসে। যাকে ইঞ্জেকশন দেওয়া হবে, তা লিঙ্গ, বয়েস, স্বাস্থ্য ও শারীরিক অবস্থার বিষয়টি বিবেচনা করে ইঞ্জেকশন দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অপরাধী চিকিৎসকের সামনে তদন্তকারীরা তাকে জেরা করেন। জেরার সময় তার স্বীকারোক্তি ভিডিওয় রেকর্ড করা হয়। সংগ্রহ করা তথ্যপ্রমাণগুলি একত্র করে বিশেষজ্ঞ রিপোর্ট তৈরি করেন। আদালতের নির্দেশ সাপেক্ষে সরকারি হাসপাতালে প্রক্রিয়াটি করা হয়।