নিজস্ব প্রতিনিধি, দিঘা ও ডায়মন্ড হারবার: বর্ষার সময় বাঙালি হা-পিত্যেশ করে বসে থাকে ইলিশের আশায়। কিন্তু অপেক্ষা এবার দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হলেও বাঙালির পাতা পড়েনি সমুদ্রের মহার্ঘ সেই রুপোলি ফসল। টুকটাক যতটুকু ইলিশ দিঘা বা ডায়মন্ড হারবার মোহনায় এসে পৌঁছয়, তার দাম ছিল মানুষের নাগালের বাইরে। মরসুম প্রায় শেষ হতে চলেছে। বাঙালি ভাবছিল, এবার বোধ হয় আর ইলিশের ঘ্রাণ নেওয়া হবে না। কিন্তু না, বিদায় বেলায় দেখা গেল আশার আলো।
আবহাওয়ার উন্নতি হতেই গত ২৮ আগস্ট ইলিশ শিকারের জন্য সমুদ্র পাড়ি দেয় হাজার হাজার ট্রলার। সেইসব ট্রলার এখন ফিরতে শুরু করেছে মোহনায়। ট্রলারের পেটে ভর্তি ইলিশ। এই কয়েকদিনে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরের কয়েকটি উপকূলে প্রায় তিন হাজার পাঁচশো টন ইলিশ এসে পৌঁছেছে। এক লপ্তে এত বিপুল ইলিশ আসায় দামও কমেছে অনেকটাই। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী আরও কয়েকটা দিন এমন ভাবে ইলিশ ধরা পড়তে পারে বলে মনে করছেন মৎস্যজীবীরা। বিপুল টাকা খরচ করে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে খালি হাতে ফেরায় এতদিন ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছিল ট্রলার মালিক থেকে শুরু করে মৎস্যজীবীদের। শেষ বেলায় এত ইলিশ ধরা পড়ায় তাদের মুখে এখন চওড়া হাসি। খুশি আমবাঙালিও।
বিপুল ইলিশ মোহনায় ঢুকতেই দাম এক ধাক্কায় অনেকটাই নেমে গিয়েছে। শুক্র ও শনিবার দিঘা, কাকদ্বীপ, রায়দিঘি, ডায়মন্ডহারবার বাজারে ৫০০ গ্রাম থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা কিলো দরে। এক কেজির কাছাকাছি বা তার থেকে বেশি ওজনের ইলিশের দাম উঠেছে এক থেকে দেড় হাজার টাকার মধ্যে। এই সময় যে ইলিশ জালবন্দি হয়েছে, তার ওজন আগে ধরা পড়া ইলিশের থেকে অনেক বেশি। ফলের দামও পাওয়া যাচ্ছে ভাল। একইসঙ্গে রসনা তৃপ্তিতেও খুশি আমবাঙালি।
এদিকে, রবিবার থেকে আবার ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। স্বাভাবিক ভাবে রাজ্যে এই সময় খারাপ হতে পারে আবহাওয়া। ফলে সেই সময় ইলিশ ধরতে যাওয়া নিয়ে একটা দুর্যোগের মেঘ দেখা দিয়েছে মৎস্যজীবীদের মনে। অভিজ্ঞ মৎস্যজীবীরা মনে করছেন, আর কয়েকটা দিন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সমুদ্র থেকে ধরে নিয়ে আসা যাবে প্রচুর ইলিশ।