মহানগর ডেস্ক: সম্বাদ সূত্র, গিধাউর (জামুই)। প্রথমে প্রেম, তারপর ঝগড়া করে বিয়ে করতে রাজি হননি। হ্যাঁ, আজব প্রেমের চমকপ্রদ গল্প বুধবার রাতে শেষ হয়েছে গিধাঘরের ঐতিহাসিক পঞ্চ শিব মন্দিরের আঙিনায়।
স্থানীয় গ্রামবাসীদের সহায়তায়, মেয়েটির পরিবার বিপিএসসি থেকে পুনর্বহাল হওয়া এক শিক্ষকের বিয়ে ঠিক করে, যিনি কয়েক মাস আগে বিয়ে করতে অস্বীকার করেছিলেন। এসময় এ বিয়ে দেখতে গিধাঘর বাজার থেকে শত শত মানুষের ভিড় মন্দির প্রাঙ্গণে জড়ো হয়। এর ভিডিও ইন্টারনেট মিডিয়াতেও ভাইরাল হচ্ছে। কথিত আছে, জামুই জেলার চাকাই ব্লকের বামদাহের ভেলদারি গ্রামের বাসিন্দা সত্যনারায়ণ ভার্মার ছেলে মুকেশ কুমার ভার্মার বিয়ে দুই বছর আগে হিন্দু রীতি অনুযায়ী ঠিক হয়েছিল, পাশের কেন্দুয়াডিহ গ্রামের বাসিন্দা পূর্ণিমা কুমারী ওরফে স্বপ্নার সঙ্গে। চাকাই ব্লকের অধীন বামদহ। গত ২০১৫ সাল থেকে দুজনেই একে অপরের প্রেমে পড়েছিলেন। এরপর উভয়ের পরিবারই তাদের বিয়ে ঠিক করে। বিয়ে ঠিক হওয়ার পর মুকেশ ও পূর্ণিমা দুজনেই একে অপরের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলতে থাকে। দুজনেই একসঙ্গে বাঁচার শপথ নেন।এসময় চাকাই বাজার ও দেওঘর পরিদর্শনসহ উভয়ের মধ্যে সাক্ষাতের ধারা অব্যাহত থাকে। এদিকে, মুকেশ গত বছর শিক্ষক নিয়োগের জন্য BPSC পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং শিক্ষক পদের জন্য নির্বাচিত হন। প্রশিক্ষণের পরে, তিনি গত ছয় মাস ধরে গিধাউর ব্লকের বানজুলিয়ার উন্নত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
শিক্ষক পদে নির্বাচিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুকেশের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা বদলে যেতে থাকে। তিনি পূর্ণিমা কুমারী ওরফে স্বপ্নাকে ভুলে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পূর্ণিমা মুকেশকে তার সবকিছু বলে মেনে নিয়েছিলেন। তিনি মুকেশকে ভুলে যেতে বা ছেড়ে যেতে প্রস্তুত ছিলেন না। পূর্ণিমা জানান, বিয়ের এক বছর পর পর্যন্ত তার ও মুকেশের মধ্যে সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। মুকেশ বিপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর থেকে শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তার মনোভাব পরিবর্তিত হয়। গত পাঁচ মাস ধরে ফোন ধরছিলেন না মুকেশ গত পাঁচ মাস ধরে ফোন ধরছিল না। এ কারণে পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন হতে থাকেন। এ নিয়ে গ্রামে একাধিকবার পঞ্চায়েত ডাকা হয় এবং মুকেশ ও তার আত্মীয়দের অনেক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। তখনও মুকেশ বিষয়টি মানতে রাজি ছিলেন না। তিনি বিয়ে ভাঙার ব্যাপারে অনড় ছিলেন।
পূর্ণিমা জানান, গত ডিসেম্বরে মুকেশের বিরুদ্ধে গিধাউর থানায় প্রমাণসহ অভিযোগ করা হয়েছিল, কিন্তু থানা থেকে কোনো সাহায্য পাওয়া যায়নি। এরপর পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় গিধাউর বাজারের ২ নম্বর রোডের ভাড়া বাসায় বসবাসরত মুকেশকে বুধবার রাতে বের করে পঞ্চ শিব মন্দিরে হিন্দু রীতি অনুযায়ী বিয়ে করা হয়।