মহানগর ডেস্ক: এভাবেও ফিরে আসা যায়! একে অলৌকিকও বলা যেতে পারে। আমেরিকার সিয়াটেলে থাকেন মার্কিন-ভারতীয় বংশোদ্ভূত অতুল রাও (After Six Time Heart Stopped Working, Young Alive)। পড়াশোনা করেন টেক্সাসের বাইলর বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাঁর ফুসফুসে একটি ব্লাড তৈরি হয়, যা হৃদপিন্ডের রক্ত সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এই অবস্থাকে বলা হয় পালমোনারি এমবোলিজম। যার দরুণ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় ছাত্রটির।
কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়ার পর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় লন্ডনের ইমপেরিয়াল হেলথকেয়ার এনএইচএস ট্রাস্ট হ্যামারস্মিথ হসপিটালের হার্ট অ্যাটাক সেন্টারে। স্ক্যান করে দেখা যায় রক্ত জমাট বাধায় হৃদপিন্ড থেকে ফুসফুসে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। সেই অসম্ভব ঘটনা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর অতুল মা বাবার সঙ্গে লন্ডনে হাসপাতালের চিকিৎসকদের কৃতজ্ঞতা জানাতে গিয়েছিলেন। গতমাসে রাও চিকিৎসকদের জানান, এমনটা ঘটার পর তিনি অবাক হয়েছিলেন ওষুধে তিনি ঠিকমতো কাজ করতে পারবেন কিনা। বদলে ব্যবসায় যোগ দিতে পারবেন কিনা, তা নিয়েও তাঁর যথেষ্ট সংশয় ছিল। কিন্তু ঘুম থেকে ওঠার মিনিট কয়েক পরেই তাঁর মনে হয়েছিল, তিনি সৃজনমূলক কাজে সময়কে ব্যবহার করতে পারবেন কিনা। তিনি যদি অন্যদের সাহায্যে দ্বিতীয়বার সুযোগ পান, তাহলে…।
রাওয়ের প্রি মেডিকেল ডিগ্রিতে চূড়ান্ত বর্ষ চলছে। পাশ করলে আরও পড়ার সুযোগ পাবেন। কিন্তু জুলাইয়ের সাতাশ তারিখে আচমকাই তিনি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। সহপাঠীরা নিরাপত্তা রক্ষীকে তা জানিয়ে হইচই শুরু করেন। অ্যাম্বুলেন্স কর্মীরা আসার আগে নিরাপত্তা রক্ষী সিপিআর করেন এবং তারপর তাঁকে নিয়ে যান। অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের চিকিৎসক নিক সিলেট জানান শেষবার যখন তিনি অতুলকে দেখেছিলেন,তখন ভাবতে পারেননি সে বেঁচে যাবে। তিনি ফের তার সঙ্গ দেখা করে তার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের ভয়ঙ্কর খবরটি জানান। এরপর সারারাত ধরে প্রাণপণ চেষ্টা করে অতুলকে বাঁচানোর চেষ্টা চালিয়ে যান চিকিৎসকরা।
সেন্ট থমাস হাসপাতালে নিয়ে আসার সময়ও তার অবস্থা রীতিমতো সঙ্গীন ছিল। সবরকম চেষ্টা চলে রক্তজমাট ভেঙে ফেলার জন্য। দেওয়া হয় ওষুধ। লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমে তাঁকে রাখা। জীবন দায়ী ওষুধে শেষমেশ কাজ হয়। নতুন জীবন ফিরে পান অতুল। আর চিকিৎসা বিদ্যার এমন চমৎকারে চিকিৎসাকে জীবনের পেশা বেছে নিয়েছেন অতুল। বলা যায় জীবনদাতাকে প্রকৃত সম্মান দিতেই এই সিদ্ধান্ত নেন তিনি।