মহানগর ডেস্কঃ একটা সম্পর্কে ব্রেকআপের পর অনেকেই আছেন যারা সহ্য করতে পারেন না। ডিপ্রেশন, দুঃখ, রাগ, অবসাদ, স্ট্রেস, প্যানিক অ্যাটাকে ভুগতে থাকেন। সম্পর্কের স্মৃতি থেকে নিজেকে বের করে সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু কথায় আছে “সময়” ধীরে ধীরে মনের সব ক্ষত মিটিয়ে দেয়। একটা সময় পর আমরা আবার স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে আসি। নতুন করে সবকিছু সাজানোর নামই হচ্ছে জীবন।
একটা সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া মানে জীবনের সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়া নয়। সবকিছু চাইলেই যে পাওয়া সম্ভব নয়। ওঠা-নামা, খারাপ-ভালো সব মিলিয়ে জীবন। এভাবেই এগিয়ে চলতে হবে। থেমে গেলে চলবেনা। আজকালকার দিনের সম্পর্কে যেই অভিযোগটি সবথেকে বেশি উঠে আসছে তা হলো- একজনের সাথে সম্পর্ক থাকতেও অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পরা যেন ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। যখন আমরা কোনো সম্পর্কে জড়াই, আগে থেকে কেউ জানেনা কে কখন কিভাবে ধোকা খেতে চলেছে। সঙ্গী চিট করেছে জানতে পেরে হয় আপনি তাকে ছেড়ে দিয়েছেন, বা সে আপনাকে চিট করে অন্যের হাত ধরে চলে গেছে । এখন আপনি ভাবছেন এবার আপনি তাকে ভুলবেন কি ভাবে? মূল সমস্যা হচ্ছে আপনি এর থেকে নিজেকে কিভাবে বার করবেন তাইতো?
জেনে নিন আপনার কি করা উচিত…
১. সর্বপ্রথম যেই মানুষটি আপনাকে কষ্ট দিচ্ছে বা দিয়েছে তার থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ সব জায়গা থেকে দূরে রাখুন। আরও ভালো হবে সব সোশ্যাল মিডিয়ার সাইট থেকে ব্লক করুন।
২. পুরোনো ম্যাসেজ পড়ার বদলে ডিলিট করুন, ফটো থাকলে সেগুলোও ডিলিট করুন। যত দেখবেন কষ্ট আরও বাড়বে। ফটো দেখলে সেতো আর ফটো থেকে বেরিয়ে আপনার সামনে চলে আসবেনা, সেহেতু বেকার এই বোকামি গুলো করে নিজের প্রেসার হাই করবেন না। নিজের মাথা শান্ত রাখতে এই কাজ গুলো করা থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।
৩. ঘুম থেকে উঠে ইতিবাচক চিন্তাধারা রাখুন। আপনাকে ইতিবাচক দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
৪. নিজেকে ব্যস্ত রাখুন কাজ কর্মের মধ্যে, তাহলে মাথায় উটকো চিন্তা কম ঘুরে বেড়াবে।
৫. পরিবারের সদস্যদের সাথে সময় কাটান। তাদের বোঝার চেষ্টা করুন, নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করুন। যত কথা বলবেন, ততো মনের ভাব সম্প্রসারণ করবেন, একে অপরকে বুঝতে সুবিধে হবে এবং পারিবারিক বন্ডিং আরো ভালো হবে।একাকীত্ব বোধ হবেনা আপনার।
৬. নেতিবাচক কথাবার্তা বা নেগেটিভ মানুষ এই সময় এড়িয়ে চলুন।
৭.বই পড়ুন অনেক কিছু শিখতে জানতে পারবেন। মাইন্ড ডাইভার্ট থাকতে সুবিধে হবে।
৮. নতুন কিছু শিখুন, জানুন, করার চেষ্টা করুন। সেটা যেকোনো কাজ হতে পারে। রান্না করা, আঁকা, কিছু তৈরি করা, বা বানানো।
৯. আপনার যারা শুভাকাঙ্ক্ষী আছে, বা বন্ধুদের সাথে কোথাও মুভি দেখতে শপিং করতে বা খেতে যেতে পারেন। ব্যস্ত থাকার দরুন মাথায় বাজে চিন্তা আসবেনা মন ভালো থাকবে।
১০. যদি সে আপনার ব্লক করে থাকে, সম্পর্ক রাখতে চাইছেনা এমন ব্যাক্তিকে ভুল করেও অন্যের একাউন্ট থেকে তাকে স্টক করতে যাবেন না। বা অনের ফোন থেকে ফোন করবেন না। তারপর এমন কিছু আপনি দেখবেন বা শুনবেন যার দরুন কষ্ট আরও বাড়যে পারে বা ডিপ্রেশন আরও বাড়তে পারে।
১১.নেশা জাতীয় সামগ্রী এই সময় এড়িয়ে চলুন, আরও বেশি চিন্তা বাড়বে, অন্যথায় ভুগতে হবে।
১২.নেচার ভালোবাসেন? একা ঘুরতে বেরিয়ে যান দেখবেন মন ভালো থাকবে।
১৩. মেডিটেশন করতে পারেন, ব্যায়াম করাও স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো, সাইকেল চালান, সাঁতার কাটুন। দুশ্চিন্তা থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।
১৪. নিজের সাথে কথা বলুন, নিজের ভালোমন্দ বুঝুন, নিজেকে বুঝুন।
১৫. নিজের দুঃখ বা নিজের ডার্ক সাইড নিজের কাছে, নিজের ইমোশন-ফিলিংস একসেপ্ট করুন,তাড়াতাড়ি এই জায়গা থেকে নিজেকে বের করতে সক্ষম হবেন।
১৬ . আপনার যেটা খেতে ভালো লাগে সেটি খান। যেখানে ঘুরতে যেতে ইচ্ছে করছে চলে যান।
১৭. গেম খেলুন, গান শুনুন, মজাদার ভিডিও দেখুন
১৮.নিজের প্রতি মনোযোগ দিন, নিজের শরীরের প্রতি খেয়াল রাখুন। পারলে রূপচর্চাও করুন।
১৯. দূরে কোথাও থেকে বেশ কয়েকদিনের লম্বা ট্রিপে যান, নেচার এর সবকিছুর চাপ থাকবে চারিপাশে এমন জায়গায় যান। মন ভালো হয়ে যাবে।
২০.ঘুমের নির্দিষ্ট টাইম টেবিল করুন। শরীরে যথাযথ রেস্ট দরকার। ক্লান্তিতে কোনো কিছুই করতে ভালো লাগেনা। রাত জেগে বেকার তার কথা না ভেবে ঘুমোন। মনে রাখবেন, সে কিন্তু ঘুমের সময় নষ্ট করে আপনার কথা ভাবছেনা। সেহেতু নিজের সুস্থ শরীর ব্যস্ত করবেন না অন্যথায় যে চিট করেছে তার নিয়ে ভেবে।
২১. অন্য জনকে ভালোবাসার আগে নিজেকে আগে ভালোবাসুন। নিজেকে এমন ভাবে মজবুত তৈরি করুন যেন কেউ ভাঙতে না পারে।