Home National ভোটের সময় আঙুলে ব্যবহৃত কালির নেপথ্যে কি ইতিহাস রয়েছে জানেন?

ভোটের সময় আঙুলে ব্যবহৃত কালির নেপথ্যে কি ইতিহাস রয়েছে জানেন?

by Mahanagar Desk
25 views

  মহানগর ডেস্কঃ আর কিছু দিন পরই ভোট পর্ব শুরু হয়ে যাবে। এবার দেশের ১৮ তম লোকসভা নির্বাচন হতে চলেছে৷  আগামী মাসের ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হবে লোকসভা নির্বাচন। যা চলবে    ৪ জুন পর্যন্ত।  সাত দফায় হবে লম্বা  ভোটপর্ব  । ভোট মানেই  গণতন্ত্রের উৎসব। ভোট মানেই গোটা দেশের প্রত্যেকটি মানুষ এই উৎসবে শামিল হওয়ার জন্য উত্তেজিত থাকে। দীর্ঘসময় ধরে ভোটের কেন্দ্রের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।     নিজের পছন্দমত প্রার্থী কে ভোট দেন প্রত্যেকটি মানুষ । এই ভোটের সময় যেটি মূল জিনিস, যা ছাড়া ভোট পর্ব পুরোপুরি সম্পূর্ণ হয়না। তা হল ভোট দেওয়ার সময় আঙুলে কালির দাগ। যেই দাগ সহজে ওঠে না। এই দাগ দেখেই সনাক্ত করা যায় ওই ব্যক্তি ভোট দিয়েছেন কিনা। জনসমক্ষে দেশের নাগরিক হিসেবে পরিচিতি দেওয়ার ক্ষেত্রে এই কালির ব্যবহারের তাৎপর্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ রয়েছে। কিন্তু এই কালির বিষয়ে ইতিহাস জানেন?

১৯৬২ সালে এই কালির ব্যবহার প্রথমবার করা হয়েছিল ভোট প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করতে। তারপর থেকেই শুরু হয় ভোট পর্বে এই কালির ব্যবহারে জনগণ অর্থাৎ ভোটারদের আঙুলে লাগানো শুরু হয়৷ এই কালি অনেক দিন আঙুলে থাকে, যা সহজে মোছা যায় না শত চেষ্টা করেও। একজন ভোটার যাতে দু বার ভোট দিতে না পারেন, এই কারণেই নির্বাচন কমিশন এটি ঠিক করেন। ভোটারদের সনাক্ত করতে, বা বোঝার সুবিধার জন্য  কালি দেওয়ার প্রথা কমিশন ঠিক করেন। সেই সময় থেকেই মাইসোর পেইন্টস অ্যান্ড বার্নিশ লিমিটেড অথবা এমপিভিএল এই ভোটের কালি তৈরি করছে ৷ এই সংস্থাটি কর্ণাটক সরকারের অধীনস্ত একটি সংস্থা৷

ভোটের সময় যেই কালি ব্যবহার হয় তা মাইসোর পেন্টস অ্যান্ড বার্নিস লিমিটেড সরবরাহ করে। সামনেই ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচন, তার জন্য নির্বাচন কমিশন, মাইসোর পেন্টস অ্যান্ড বার্নিস লিমিটেড – কে ২৬ লক্ষ শিশি কালি তৈরির বরাত দিয়েছে ৷ প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে তাঁদের কাজ। আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকটা দিন পর ভোট পর্ব তার আগে সব তৈরি করতে হবে। নাওয়া খাওয়ার সময় নেই এই কোম্পানির কর্মীদের। কোম্পানির কাছে বিরাট অর্ডার এসেছে ।

কোম্পানির তরফ থেকে জানানো হয়েছে ‘৭০ শতাংশ উৎপাদন তাদের ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েগেছে। যতটুকু আর বাকি আছে তা ১৫ মার্চের মধ্যেই সম্পন্ন হয়েযাবে।’ জানা যাচ্ছে সব মিলিয়ে লোকসভা ভোটের জন্য ভয়াল লাগে ২৬.৫৫ লাখ । একটি ভায়ালে মোটামুটি ১০ মিলিগ্রাম করে কালি থাকে। তা দিয়ে ৭০০ ভোটারের আঙুলে কালি দেওয়া সম্ভব হয়। ই কালির জন্য মোট খরচ পড়ে ৫৫ কোটি টাকা মতো। এই দেশের পাশাপাশি এই কোম্পানি বিদেশেও তাদের কালি রফতানি করে থাকে।

কিন্তু এই ভোটের কালি যা সহজে ওঠে না তা কোন ফর্মুলায় তৈরি করা হয়, তা এমপিভিএল গোপন রেখেছে ৷ মাইসোর পেইন্টস অ্যান্ড বার্নিশ লিমিটেড ১৯৩৭ সালে এই সংস্থাটি শুরু হয়৷ এমপিভিএল, ন্যাশনাল ফিজিক্যাল ল্যাবরেটরির সহায়তায় এই কালি তৈরি করে ৷ ভারতের পাশাপাশি আরও ২৫টি দেশে রপ্তানি করা হয় এই ভোটের কালি । রপ্তানি করে ৷ ভোটে কালির এই দশ এমএল শিশির দাম ১২৭ টাকা, সেই হিসেবে এক লিটার ভোটের কালির দাম ১২৭০ টাকা করে পড়ে৷ তাহলে এক ফোঁটা কালির দাম মোটামুটি ১২ টাকা ৭০ পয়সা ।

কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর মহম্মদ ইরফান জানিয়েছেন,  “২০২৪ এর ভোটের জন্য আমরা বিরাট অর্ডার পেয়েছি। উত্তর পূর্বে ও কাশ্মীরে আমরা কালি পাঠিয়ে দিয়েছি। কেরল, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানার জন্য কালি তৈরি করা হচ্ছে। এমনকী কম্বোডিয়া, ফিজি, মঙ্গোলিয়া সহ বিদেশের বিভিন্ন রাষ্ট্র্রের জন্য কালি তৈরি করে এই কোম্পানি। এবার একটি ভায়াল কালির দাম করা হয়েছে ১৭৪ টাকা করে। গতবার সেই দাম ছিল ১৬০ টাকা করে। তবে কাঁচের ভায়ালের জায়গায় মার্কার পেন তৈরির কথাও ভাবছে কোম্পানি।”

You may also like

Mahanagar bengali news

Copyright (C) Mahanagar24X7 2024 All Rights Reserved