Home National ভোটে হিংসা বরদাস্ত নয়, কোনও গোলমাল হলে দায় রাজ্যের, স্পষ্ট জানালেন জাতীয় মুখ্য নির্বাচন কমিশনার

ভোটে হিংসা বরদাস্ত নয়, কোনও গোলমাল হলে দায় রাজ্যের, স্পষ্ট জানালেন জাতীয় মুখ্য নির্বাচন কমিশনার

by Mahanagar Desk
55 views

মহানগর ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর। তবে রাজ্যে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করার দায় রাজ্য সরকারেরও। কোনও অশান্তি হলে তার দায় ডিজিপি ও রাজ্যের উপর বর্তাবে। কোনও রকম বিশৃঙ্খলা জাতীয় নির্বাচন কমিশন বরদাস্ত করবে না বলে মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন জাতীয় মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। বাংলায় কোথায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মেতায়েন করা হবে তা ঠিক করবে কমিশন।

আমলাতন্ত্রের পক্ষপাতিত্ব কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে কমিশন জিরো টলারেন্স নিয়ে বলছে বলে জাতীয় মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জানিয়ে দেন। গত দু’দিন পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচন এবং পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। মঙ্গলবার জাতীয় মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন একটি উৎসব। এখানে ১২ মাসে ১৩ পার্বন। গত দু’দিনে রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। এই দলের মধ্যে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস, তৃণমূল, ফরওয়ার্ড ব্লক ছিল। রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের একটা বড় অংশ প্রশাসনিক আধিকারিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। ভয়ের বাতাবরণ আছে বলেও অভিযোগ জানিয়েছে। কমিশনের কাছে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট করার আবেদন জানিয়েছে। সীমান্ত এলাকা সিল করার দাবি, সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানো ইত্যাদি দাবির সঙ্গে নির্বাচনের আগে ও পরে সংঘর্ষ যাতে না হয় তা দেখার দাবি জানিয়েছে। একটি দল ছাড়া সবকটি দল কেন্দ্রীয় বাহিনী মেতায়েন করে ভোট করার দাবি জানিয়েছে।”

রাজীব কুমার এদিন বলেন, “আমরা সবকটি রাজনৈতিক দলের দাবি শুনে এটাই বলছি যে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে আমরা বদ্ধপরিকর। পেশি শক্তি ও অর্থ শক্তি যাতে ভোটে ব্যবহার না হয় সেটা আমরা কঠোরভাবে দেখছি। ভোট উৎসব, মানুষ যাতে উৎসবের মেজাজে ভোট দিতে পারে তা আমরা নিশ্চিত করছি।” বাংলায় ১৮ থেকে ১৯ বছরের ভোটারের সংখ্যা এবার বেড়েছে, এদের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যা বেশি বলে রাজীব কুমার জানান। পশ্চিমবঙ্গে ৮০ হাজার ৪৫৩ টি ভোট কেন্দ্র বাংলায় আছে। কিছু পোলিং স্টেশন মহিলা পরিচালিত এবং সেখানে মহিলা পুলিশ থাকবেন বলে জাতীয় মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জানান। তিনি বলেন সব বুথ একতলায় হবে, শৌচালয়, র্যাম্প, হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা থাকবে বলে রাজীব কুমার জানান। তিনি বলেন, “যাদের আধার কার্ড বাতিল হয়েছে, ভোটদানে তাদের অসুবিধা যাতে না হয় তার ব্যবস্থা থাকছে। তিনি বলেন, “রাজ্যে মোট ভোটের বুথ সংখ্যা ৮০ হাজার ৪৫৩। সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী সতর্ক নজরদারি চালাবে। সীমান্তে কড়া নজরদারি চলবে, মদ এবং ড্রাগ চোরাচালান রুখতে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ড্রাগ পাচারের ক্ষেত্রে শুধু পাচারকারীরাই নয় কিংপিনদেরও ধরা হবে। একটি রাজনৈতিক দল ছাড়া সবকটি রাজনৈতিক দল কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি জানিয়েছে, ভোট কেন্দ্রে সিসি টিভি, সীমান্তে কঠোর প্রহরা, ভোটদাতাদের নির্ভয়ে ভোটদান নিশ্চিত করার আবেদন জানিয়েছে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। আমরা সব দাবি সুনিশ্চিত করছি।”

স্বচ্ছতা বজায় রেখেই নির্বাচন করা জাতীয় নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য বলে রাজীব কুমার জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, “পর্যাপ্ত সিআরপিএফ আসবে, তারা পক্ষপাত ছাড়াই পুলিশ এবং রাজ্য মুখ্য নির্বাচন কমিশনার, ডিএম,এসপিদের সহায়তায় করে কাজ করবে। হিংসামুক্ত ভোট করা আমাদের লক্ষ্য। ফেক সংবাদ রুখতে কঠোর নজরদারি থাকবে। বাংলার সব ভোটারদের বলছি নির্ভয়ে, লোভ ছাড়া ভোট দিতে আসুন। কোনও রকম সমস্যা হলে আমাদের জানান, আমরা তৎক্ষনাৎ ব্যবস্থা নেব।” রাজীব কুমারকে সাংবাদিকরা এদিন একাধিক প্রশ্ন করেন। এই প্রশ্নের মধ্যে বেশিরভাগ প্রশ্নই ছিল বাংলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে। কেন বাংলায় দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে? বাংলার নির্বাচন কি এবার শান্তিতে সম্পন্ন হবে?

এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তরে জাতীয় মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার বলেন, “একদিনে কেন ভোট নয়? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় আসেনি, এলে জানাবো। সব দল এই বিষয়ে তাদের মতামত জানিয়েছেন। কেন বাংলায় ভোট শান্তিপূর্ণ হয় না এই প্রশ্ন অনেকে করেছেন। আমি বলছি দু’দিনের বৈঠকে ডিএম, এসপিরা আমাদের নিশ্চিত করেছেন বাংলায় শান্তিতে ভোট হবে। না হলে কি করতে হবে সেটা আমরা ঠিক করব। তবে অশান্তি হবে না বলেই জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন। অশান্তি হলে দায় রাজ্য প্রশাসনের। কেন কেন্দ্রীয় বাহিনী আগে এসেছে এই প্রশ্ন করেছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে রাজ্য পুলিশের সঙ্গে থেকে রাজ্যে শান্তিতে নির্বাচন পর্ব সমাধান করতে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে কাজ করাবার নোডাল অথরিটি রাজ্যের পুলিশ, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং জেলার ক্ষেত্রে ডিএম এবং এসপি। শান্তিতে ভোট করা যৌথ দায়িত্ব রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর। তবে বেনিয়ম হলে তা কমিশন বুঝে নেবে। তবে রাজ্যে অশান্তির সব রিপোর্ট রাজ্যের কাছে আছে। রাজ্য এসব বন্ধ করতে ব্যবস্থা নিক। ভোটপর্ব নির্বিঘ্নে সমাধা করার ব্যবস্থা করুক রাজ্য সরকার, জাতীয় মুখ্য নির্বাচন কমিশনার মঙ্গলবারের বৈঠকে মুখ্য সচিবকে এই কথা স্পষ্ট করে জানিয়ে বলেছেন, “নির্বাচনে কোনও রকম গোলমাল হলে তার দায় রাজ্যের।”

You may also like

Mahanagar bengali news

Copyright (C) Mahanagar24X7 2024 All Rights Reserved