মহানগর ডেস্কঃ ছোটবেলায় বাবাকে হারায় এক কন্যা, বড়ো হয়ে স্বপ্ন ছিল বাবার পেশাতেই সে নিজেকে নিযুক্ত করবেন। আর চার পাঁচটা মেয়ের মতো বাবার ভালোবাসা পেয়ে এই রাজকন্যা বড়ো হয়নি। ২০ বছর আগে বাবাকে হারিয়েছিলেন। জম্মু কাশ্মীরে জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে, তাঁর বাবা শহিদ হয়েছিলেন। ২০ বছর পর যখন স্বপ্ন পূরণ হলো,মেয়ে এই দিন তাঁর শহিদ বাবার উর্দি গায়ে চড়িয়েই সেনায় যোগদান করলেন। বাবার অসমাপ্ত কাজ নিজের কাঁধে তুলে নিলেন।
মাত্র ৩ বছর বয়সে ইনায়াত ভাটস তাঁর বাবা নভনীত ভাটসকে হারান । জম্মু কাশ্মীরে জঙ্গিদের সাথে লড়াই করতে গিয়ে শহিদ হয়েছিলেন নভনীত ভাটস। মেয়ে ইনায়াত ১৭ বছর পর বাবার সেই একই পথ অনুসরণ করে সেনায় যোগ দিলেন । দেশের সেবার জন্য, বাবার অসমাপ্ত কাজ এবার পূরণ করবে তাঁর মেয়ে। বাবার স্বপ্নকে নিজের স্বপ্ন বানিয়েছিলেন ছোট থেকে এই ইনায়াত ভাটস, এই শনিবার ভারতীয় সেনায় লেফটেন্যান্ট পদে যোগদান করে নিজের স্বপ্ন স্বার্থক করলরন। তাই জীবনের প্রথম পথ চলা শুরু করলেন তাঁর বাবার তথা শহিফ মেজার নভনীত ভাটসের উর্দি গায়ে চড়িয়েই।
সেনায় যোগদান করার জন্য ছোট থেকেই পড়াশোনা ভালো করে করেন ইনায়াত। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের লেডি শ্রী রাম কলেজ থেকে স্নাতকত্বর পাস করেন তিনি। এরপর তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়েরই হিন্দু কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়েও স্নাতকোত্তর পাস করেন। সেনার কাজে নিজকে যুক্ত করার জন্য ২০২৩ এ চেন্নাইতে অফিসার্স ট্রেইনিং অ্যাকাডেমিতে যোগ দেন ইনায়াত। চেন্নাইতে অফিসার্স ট্রেইনিং অ্যাকাডেমিতে ইনায়াত প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন । প্রশিক্ষণ শেষ করার পর ইনায়াত মিলিটারি ইনটেলিজেন্স কর্পসে লেফটেন্যান্ট হিসেবে যোগদান করেন। প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের যে প্যারেড হয়, সেই প্যারেডেই বাবা নভনীত ভাটসের জলপাই রঙা উর্দিতে ইনায়াতকে দেখতে পাওয়া যায়।
প্রসংগত নভনীত ভাটস, মেজর ৩ গোর্খা রাইফেলস রেজিমেন্টের চতুর্থ ব্যাটেলিয়নের সদস্য ছিলেন। চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। নভনীত ভাটস ২০০৩ সালে শ্রীনগরে জঙ্গিদের সাথে লড়াইয়ে লিপ্ত হন, সেই সময়ে জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ রুখতে গিয়ে গুলির লড়াইয়ে শহিদ হন তিনি। নভনীত ভাটসকে পুরস্কৃতও করা হয় তাঁর বীরত্বের জন্য। মেজর নভনীত ভাটসকে মনের বল ও তার সাহসিকতা এবং জীবনদানের জন্য ‘সেনা মেডাল’ দেওয়া হয় । দেশের কথা ভেবে শেষ প্রাণ দিয়ে লড়ে যান তিনি। তাই সেই একই পথে এবার তাঁর মেয়েও। বাবার অসমাপ্ত কাজের ভার নিজ কাঁধে বহন করতে চান আবার তার মেয়ে ইনায়াত ভাটস।