মহানগর ডেস্কঃ এক যুবক বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এক তরুণীকে। কিন্তু বিয়ে করেনি। সেই অভযোগে প্রতারণা মামলায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১৭ নম্বর ধারায় রাজু কৃষ্ণ শেদবালকার নামে এক ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল কর্নাটক হাই কোর্ট। সেই মামলাতেই শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল প্রস্তাব দিয়েও বিয়ে না করা প্রতারণা নয়।
ঘটনাকাণ্ডে জানা যাচ্ছে, রাজু কৃষ্ণ শেদবালকার নামের এক যুবক ২০২১ বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এক তরুণীকে। এমনকি পাত্রীর পরিবারের সঙ্গে যুবক, এবং যুবকের পরিবার দেখাও করেছিলেন, পাকা কথাও হয়ে যায়। সব ঠিকঠাক হয়ে যাওয়ায় পর কিন্তু শেষমেশ বিয়ে করেননি যুবক। বিয়ে না করায় তরুণীর পরিবার আদালতে প্রতারণার মামলা দায়ের করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলাই খারিজ করে দিল । বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া এবং বিচারপতি প্রসন্ন বি বারালে এই মামলা নিয়ে বলেন, ‘‘বিয়ের প্রস্তাব ওঠা এবং তার পরে সেটা শেষমেশ বিয়ে অবধি না গড়ানোর পিছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে।’’ প্রসঙ্গত, কর্নাটক হাই কোর্ট, ২০২১ সালে রাজু কৃষ্ণ শেদবালকার নামে এক ব্যক্তিকে প্রতারণা মামলায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১৭ নম্বর ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছিল। এই ধারায় ওই ব্যক্তির এক বছর পর্যন্ত জেল ও জরিমানা দুই হয়। তারপর রাজু বাধ্য হয়ে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। এইদিন সুপ্রিম কোর্ট রায় ঘোষণা করার সময় জানান, ‘‘এই আদালত আগেও একাধিক বার স্পষ্ট করে জানিয়েছে, যখন কোনও ব্যক্তি শুরু থেকেই প্রতারণা বা ঠকানোর উদ্দেশ্য নিয়ে কোনও কাজ করে, তখনই সেটা প্রতারণার মতো অপরাধ। এ ক্ষেত্রে, দূরতম কল্পনাতেও তেমন কিছু করা হয়নি।’’
তরুণী ও তাঁর পরিবার শুধু রাজুর নামেই যে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তাই নয়, রাজুর ভাই-বোন সহ মায়ের বিরুদ্ধেও প্রতারণার মামলা করেছিলেন। শুধু একটি মাত্র অভিযোগ ছিল- “প্রতিশ্রুতি দিয়েও তাঁকে বাড়ির বৌ করেননি রাজু ও তাঁর পরিবার।” তরুণীর বক্তব্য, তাঁর বাবা বিয়ের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলেন, বিয়ের জন্য ৭৫ হাজার টাকা খরচ করে বিয়েবাড়ি ভাড়া করে ফেলেছিলেন। কিন্তু মেয়ের পরিবার হঠাৎ জানতে পারেন, রাজুর ইতিমধ্যেই অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে গিয়েছে।সব শুনে কর্নাটক হাই কোর্ট রাজুকে একা দোষী সাব্যস্ত করে, রাজুর পরিবারের সবাইকে বেকসুর খালাস বলে ঘোষণা করেছিলেন । সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা বলেছেন, ‘‘এ ধরনের মামলায় জোরদার ও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দরকার। ওদের কাছে তেমন কোনও প্রমাণ নেই। অতএব ৪১৭ নম্বর ধারায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার মতো কোনও অপরাধ ঘটেনি।’’