মহানগর ডেস্ক: কংগ্রেসের পর সনাতন ধর্ম নিয়ে শেষপর্যন্ত নীরবতা ভাঙলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Breaks Silence)। দেশের উপনির্বাচনে ইন্ডিয়া জোটের অ্যাসিড টেস্টের আগে তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের বিতর্কিত মন্তব্যের পর সুনামির মতো আছড়ে পড়েছে সমালোচনা আর নিন্দা।
আর উদয়ানিধি মারানের মন্তব্যকে অস্ত্র করে ইতিমধ্যেই আসরে নেমে পড়েছে বিজেপি। বিশেষ করে ভোটের আগে সনাতম ধর্ম নিয়ে বিতর্ককে উস্কে দিয়ে সংখ্যাগুরু ভোটব্যাঙ্ককে নিজেদের দখলে আনতে সচেষ্ট হয়েছে গেরুয়া শিবির।
অন্যদিকে এই ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান নিয়ে রীতিমতো দ্বিধায় ভুগছে ইন্ডিয়া জোট। ভোটের কথা মাথায় রেখে নেতারা ঐক্য অটুট রাখতে ইস্যুটিকে কূটনৈতিকভাবে মোকাবিলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দুদিন মুখে কুলুপ এঁটে থাকার পর বিতর্কিত ইস্যু নিয়ে কংগ্রেসের মন্তব্যের পরই নীরবতা ভাঙলেন মমতা।
সংখ্যালঘু তোষণ নিয়ে বিজেপির উপর্যুপরি আক্রমণের মুখে তৃণমূল নেত্রী কিছুটা রক্ষণাত্মকভঙ্গিতে বলেন সাধারণ মানুষের একটি অংশের ভাবাবেগকে আঘাত করতে পারে, এমন বিষয়ে তাঁদের জড়িত থাকা উচিত নয়। দলের মুখপাত্র স্ট্যালিনের ছেলের মন্তব্যকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দেওয়ার পর সোমবার সন্ধ্যেয় মমতা বলেন, উদয়ানিধি একজন অল্পবয়েসি ছেলে। কেন এবং কী ব্যাপারে উদয়ানিধি এমন মন্তব্য করেছেন, সেটা তাঁর কাছে স্পষ্ট নয়। তবে বিষয়টি গুরুত্ব বিচার করেই তিনি মনে করেন প্রতিটি ধর্মকে সমান শ্রদ্ধা করা উচিত।
তৃণমূল নেত্রী বলেন তামিলনাডুর মানুষ ও দক্ষিণ ভারতের মানুষদের তিনি শ্রদ্ধা করতেন। তবে তাঁদের কাছে তাঁর বিনীত অনুরোধ যেহেতু প্রতিটি ধর্মের আলাদা ভাবাবেগ রয়েছে, তাই সমস্ত ধর্মকে শ্রদ্ধা করতে হবে। বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য ও ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়টি সামনে রেখে মমতা বলেন, তিনি সনাতন ধর্মকে শ্রদ্ধা করেন এবং বেদ থেকে তাঁরা শিক্ষা আহরণ করেছেন। এ রাজ্যে প্রচুর পুরোহিত রয়েছেন।
রাজ্য সরকার তাঁদের পেনশনের ব্যবস্থা করছে। দেশজুড়ে বহু মন্দির রয়েছে। তাঁরা সবাই মন্দির,মসজিদ এবং গির্জায় যান। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে একাধিক ভোটের আগে সনাতন ধর্ম নিয়ে উদয়ানিধির বিতর্কিত মন্তব্য বিজেপির হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে। এক অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে উদয়ানিধি সনাতন ধর্মকে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গুর সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন সনাতন ধর্মকে বাদ দেওয়া উচিত। এবং ডিএমকে নেতার মন্তব্যকে ভোটের বাক্সে কাজে লাগাতে এখন উঠে পড়ে নেমেছে গেরুয়া শিবির।
উদয়ানিধির মন্তব্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা,নিন্দার সুনামি আছড়ে পড়ার পাশাপাশি এ নিয়ে রাহুলের নীরবতাকে হিন্দুবিরোধী বলে কামান দেগেছে মোদী-অমিত শাহের দল। কংগ্রেস জানিয়েছে সমস্ত ধর্মকে শ্রদ্ধা জানানো উচিত। একইসঙ্গে তারা বলেছে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। যদিও প্রিয়ঙ্ক খাড়গে,কার্তি চিদম্বরমের মতো দলের নেতারা উদয়ানিধির পাশে দাঁড়িয়েছেন। সমর্থন জানিয়েছেন বামদলের ডি রাজাও।