সারা বিশ্বের ইতিহাসে কিছুদিন আগে পর্যন্ত কোন দেশ চাঁদের দক্ষিণ গোলার্ধে পদার্পণ করতে পারেনি। এবার সেই ইতিহাস সৃষ্টি করে দেখিয়েছে ভারত। গোটা বিশ্ববাসী দেখেছে চন্দ্রযান-৩ অভিযান। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকেই ফিরে এভাবেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। চাঁদের মাটিতে যে অংশে বিক্রম ল্যান্ডার অবতরণ করেছিল, সেই অংশের নাম হবে শিবশক্তি। এমনটাই জানিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
বিশেষ সফর শেষে শনিবার ভোরে বিমানবন্দর থেকে বেঙ্গালুরু নামেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর সোজা ইসরোর হেডকোয়ার্টারে পৌঁছন তিনি, ঠিক যেমনটা কথা দিয়েছিলেন তিনি। ইসরোর হেডকোয়ার্টারে পৌঁছানো মাত্রই বুকে জড়িয়ে ধরেন ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথকে। এরপর চাঁদের জমির নামকরণ করেন মোদী। সেখানেই তিনি জানিয়ে দেন, চাঁদের যে অংশে ল্যান্ডার বিক্রম পা রেখেছে, সেই জায়গাটির নাম হবে শিবশক্তি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের বিক্রম ল্যান্ডার চাঁদের যে অংশে মজবুত পা জমিয়েছে সেই ছবি আমি দেখেছি। পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথমবার চাঁদের ওই অংশে প্রথম কোনও দেশ পা ফেলতে পারল। আর সেই ছবি গোটা বিশ্ববাসী দেখেছে। চন্দ্রযান-৩ অভিযান, কেবল ভারতের নয়, মানবসভ্যতার সাফল্য। চাঁদের মাটিতে যে অংশে বিক্রম ল্যান্ডার অবতরণ করেছিল, সেই অংশের নাম হবে শিবশক্তি”।
তবে হঠাৎ করে কেন শিবশক্তি নামকরণ করা হলো চন্দ্রপৃষ্ঠের ওই অংশটির? এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানান, “শিব নামের মধ্যে মানবসভ্যতার কল্যাণের সংকল্প রয়েছে। আর শক্তির মাধ্যমে ওই সংকল্প পূরণ করার সাহস তৈরি হবে আমাদের মধ্যে। হিমালয় থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত যুক্ত থাকার অনুভূতি যোগাবে চাঁদের এই শিবশক্তি পয়েন্ট। যে মনযোগ দিয়ে আমরা কর্তব্যপালন করি, বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারা এবং বিচারে অগ্রগতি করি আর কল্যাণমূলক সংকল্প নিই, সে ক্ষেত্রে এই শক্তির প্রয়োজন রয়েছে আমাদের। দেশের নারীশক্তিও এই চন্দ্রাভিযানে বিশাল ভূমিকা নিয়েছে। চাঁদের এই শিবশক্তি পয়েন্ট ভারতের সেই মহিলা শক্তির প্রতীক হয়ে থাকবে। এই শিবশক্তি পয়েন্ট আগামী প্রজন্মকে প্রেরণা দেবে। আমাদের বিজ্ঞানের ব্যবহার মানবসভ্যতার কল্যাণের জন্যই করতে হবে। এ কথা বার বার আমাদের স্মরণ করাবে শবিশক্তি পয়েন্ট”।
উল্লেখ্য, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ চন্দ্রযান ২-র সেই ব্যর্থতার জন্য চোখে জল এসেছিল ইসরোর তৎকালীন চেয়ারম্যান কে শিবন। মহাশূন্যের অতলে বিলীন হয়ে যায় ১৪০ কোটি ভারতবাসীর স্বপ্ন। ঠিক তার চার বছর পর ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র। ২৩ আগস্ট ২০২৩ এর সন্ধ্যে ৬টা বেজে ৪ মিনিট তারই প্রমাণ।