মহানগর ডেস্ক: স্কুলে মহিলা দলিত রাঁধুনি (Dalit Cook) খাবার রান্না করেছে, তাই সেই খাবার মুখে তুলল না পড়ুয়ারা। ঘৃণা-বিদ্বেষ ও জাতপাতের বিরুদ্ধে যখন দেশে কোথাও কোথাও সম্প্রীতির পরিবেশ তৈরির চেষ্টা চলছে, তখন ফের প্রকাশ্যে এল এমন ঘৃণা-বিদ্বেষের ছবি। ঘটনাটি ঘটেছে ডিএমকে শাসিত তামিলনাডুতে, যে রাজ্যের মন্ত্রীর সনাতন ধর্ম নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্যে তোলপাড় সারা দেশের রাজনৈতিক মহল।
সে রাজ্যের কারুর জেলার একটি স্কুলে বিনামূল্যে খাবার দেওয়ার প্রকল্পে খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছিল। কিন্তু খাবার দেওয়ার সময় দলিত রাঁধুনি রান্না করেছে জানতে পেরে বেঁকে বসে জনা পনেরো পড়ুয়া। খবর পাওয়ার পরই জেলাশাসক টি প্রভু শঙ্কর ওই স্কুলে যান এবং ওই পড়ুয়াদের অভিভাবকদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে হুঁশিয়ারি দেন। মঙ্গলবার সকালে ব্রেকফাস্ট প্রকল্প খতিয়ে দেখার পর জেলাশাসক ওই হিন্দু সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের সঙ্গে দেখা করেন।
এ নিয়ে এক অভিভাবককে এনিয়ে জিজ্ঞাসা করার পর ওই অভিভাবক জানায় দলিত রাঁধুনি সুমতি রান্না করেছে। তাকে রান্না চালিয়ে যেতে বললে তার সন্তান ওই খাবার খাবে না। অভিভাবকরা জানায় যদি স্কুল এ ব্যাপারে জোরাজুরি করে,তাহলে তারা তাদের বাচ্চাদের স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাবে। এই প্রকল্পে রাজ্যে সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলিতে পনেরো লক্ষ পঁচাত্তর হাজার পড়ুয়ার বিনামূল্যে ব্রেকফাস্টের ব্যবস্থা করা হয়। আগস্টের পঁচিশ তারিখে প্রকল্পের উদ্বোধন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন।
কারুর জেলার ভেলন চেট্টিয়ার পঞ্চায়েত ইউনিয়নে পাঠরত তিরিশজন পড়ুয়ার মধ্যে পনেরোজনই ব্রেকফাস্ট খেতে অস্বীকার করে। ঘটনাটি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। প্ল্যানিং ডিরেক্টর শ্রীনিবাসন ওই পনেরোজন পড়ুয়ার অভিভাবককে ব্রেকফাস্ট প্রকল্পে অংশ নেওয়ার অনুরোধ করলেও তাঁর আবেদনে সাড়া দেননি। মাত্র দুজন পড়ুয়া আগস্টর তিরিশ তারিখের পর থেকে ব্রেকফাস্ট প্রকল্পে অংশ নিতে সম্মত হয়। এরপর স্কুলে অসন্তোষ বাড়তে শুরু করে। এদিকে জেলাপ্রশাসন সমস্ত অভিভাবককে ব্রেকফাস্ট প্রকল্পে তাদের সন্তানদের অংশ নিতে অনুরোধ জানিয়েছে। জেলা প্রশাসন স্পষ্ট জানিয়েছে কোনও ধরণের বৈষম্য মেনে নেওয়া হবে না।