মহানগর ডেস্ক: সাতসকালে চমকে যাওয়ার মতোই ঘটনা। বহুদিন এমন অবাক হননি ব্রিটেনের মানুষ। ব্যস্ততম সময়ে যখন ট্রেন ধরে অফিসে যাওয়ার জন্য রীতিমতো হুড়োহুড়ি শুরু হয়েছে, ঠিক সেই পিক আওয়ার্সে ওয়েস্ট মিনিস্টার মেট্রো স্টেশনে কাকে দেখছেন ব্রিটিশ জনগণ! আরে, ইনি তো তাঁদের দেশের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সানুক যে (Indian Origin UK Prime Minister) ! হাতে ধরা পপির প্যাকেটভর্তি ট্রে। তিনি তা বিক্রি করছেন যাত্রীদের। পপিগুলো কাগজের তৈরি। প্রতিটার দাম পাঁচ গ্রেট ব্রিটেন পাউন্ড। রয়াল ব্রিটিশ লিজিওনের (The Royal British Legion) বার্ষিক লন্ডন পপি ডে-র জন্য এটি একটি ফান্ড রাইজার উদ্যোগ। এই উদ্যোগে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বায়ুসেনাদের স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সামিল হয়েছেন সেদেশের ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রী ঋষি সানুক, যাকে কুর্সিতে বসার পরমুহূর্ত থেকে দেশের আর্থিক ডামাডোল,অস্বাভাবিক মুদ্রাস্ফীতি, দলে পদ নিয়ে মনোমালিন্য ঠান্ডা মাথায় সামাল দিতে হচ্ছে। তাঁর সামনে এখন সমস্যার পাহাড়। সেই প্রতিবন্ধকতাকে আপাতত সরিয়ে রেখে সাতসকালেই ফান্ড রাইজিংয়ের জন্য ট্রে নিয়ে হাজির হয়েছেন মেট্রো স্টেশনে, যা অভাবনীয় তো বটেই। সেইসঙ্গে নজিরবিহীনও বলা যায়।
টাকা সংগ্রহের জন্য বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। যদিও বেশি সময় থাকেননি প্রধানমন্ত্রী ঋষি সানুক। তবে সেই সুযোগে সাধারণ মানুষ তাঁর খুব কাছাকাছি আসার সুযোগ পান। অনেকই তাঁর সঙ্গে সেলফিও তোলেন। টুকটাক কথা বলেন,যা এমনিতে হওয়ার সেরকম সুযোগ এবং সম্ভাবনা খুবই কম। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের দেশের প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা ও কথা নিয়ে একঝলক অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন অনেকে। ঋষি সানুকের এমন মহানুভবতায় মুগ্ধ দ্য রয়াল ব্রিটিশ লিজিওন জানিয়েছে, তহবলি সংগ্রহে ব্যস্ত সময়ে প্রধানমন্ত্রী যেভাবে তাঁর মূল্যবান সময় দিয়েছেন, তাতে তারা কৃতজ্ঞ। তবে তাঁর এই ঝটিকা সফরে কোনও মিডিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এ ব্যাপারে তাদের প্রতিক্রয়া ছিল মিশ্র। লুইস নামে এক ব্রিটিশ নাগরিক প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পাঁচ গ্রেট ব্রিটেন পাউন্ড দিয়ে পপি কিনেছেন। তিনি স্কাই নিউজকে জানিয়েছেন টোর নেতা মাটিতে নেমে আসা একজন মানুষ, যাঁকে কিছু বলা যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই অবশ্য শ্লেষ করতেই ছাড়েননি। এটাকে ফোটো তোলার সুযোগ বলে মন্তব্য করে এমনও বিস্ময়প্রকাশ করেছেন এই বলে যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কি আরও কোনও ইস্যু ছিল না, যা নিয়ে তিনি যত্নবান হতে পারেন।