মহানহর ডেস্ক: বিয়ের আগেই যৌনতা (sex outside marriage) কিংবা যৌন সংসর্গে লিপ্ত হলেই হাজতবাস নিশ্চিত করছে সরকার। চার হাত এক হওয়ার আগে সহবাসও (Cohabitation before marriage) নিষিদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, দেশের রাষ্ট্রপতি থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং যে কোনও সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধাচারণ করলেই পড়বে হাতকড়া। আইন প্রণয়ন করে এই সিধান্ত নিতে চলেছে ইন্দোনেশিয়া (Indonesia)। আর এই নয়া আইন অনুযায়ী বিয়ের আগে সহবাস কিংবা যৌনতায় লিপ্ত হলে বা দেশকে অবমাননা করলে কিংবা সরকারবিরোধী পদক্ষেপ নিলে ১ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। সব ঠিক থাকলে আগামী ১৫ ডিসেম্বর পাস হতে চলেছে এই নতুন অপরাধ আইন।
প্রসঙ্গত, বছর দশেক আগে থেকেই সংবিধানের অপরাধ আইন লাগোয়া একাধিক জায়গায় বদল আনার চেষ্টা চালাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া সরকার। ২০১৯ সালেই এই আইনের একটি খসড়া প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু সেই প্রস্তাব পাশ হওয়ার কথা উঠতেই দেশব্যাপী প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধের মুখে পড়ে সরকার। সাময়িকভাবে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয় ঠিকিই, কিন্তু তখন দেশের কয়েকটি ইসলামিক গোষ্ঠী এই আইনকে সমর্থন করলেও প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ পথে নামে। তবে এবার সেই খসড়ায় সামান্য বদল এনে আবারও সরকার সেই আইন পাশ করতে চলেছে।
আর এই নয়া বদলগুলির বিষয়ে মানুষকে অবহিত করতে দেশব্যাপী প্রচার চালিয়ে জনসমর্থন নিয়েছে ইন্দোনেশিয়া সরকার। বদলের মধ্যে যেমন রয়েছে, কোনও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি যদি জেলে থাকাকালীন ১০ বছর ভাল ব্যবহার করে, তাহলে তার শাস্তি কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হবে। ধর্ষণ ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে গর্ভপাতকে ‘অপরাধ’ হিসাবে গণ্য করা হবে। এছাড়াও ‘কালো জাদু’ চর্চা করলেও নতুন আইনে হাজতবাস হবেই। এমনকি রাষ্ট্রপতির অবমাননা করলে সর্বোচ্চ ৩ বছরের জেল হতে পারে।
ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। দেশটিতে নারী, এলজিবিটিকিউ গোষ্ঠী, এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যমূলক অজস্র আইন এবং বিধি নিষেধ রয়েছে। তারপরেও নতুন এই আইন বলবৎ হলে তা ইন্দোনেশিয়ার গণতন্ত্রের অবনমন ঘটবে বলে বলে করছেন মানবাধিকার কর্মী আন্দ্রেয়াস হারসোনো।
যদিও প্রতিবাদীদের দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন দেশটির ডেপুটি আইনমন্ত্রী এডওয়ার্ড ওমর শরীফ হায়ারিয়েজ জানিয়েছেন, গণতন্ত্রের মর্যাদা অক্ষুন্ন রেখেই জাতীয় আইন মেনে নতুন নিয়ম তৈরি করা হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমকে তবে জানিয়েছেন, ‘ইন্দোনেশিয়ার মর্যাদা এবং বোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ অপরাধ আইন আনতে পেরে সরকার গর্বিত,’।