মহানগর ডেস্ক: এক অমানবিক ঘটনার (Inhuman Behavior) সাক্ষী হল ওড়িশার (Odisha) একটি গ্রাম। হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে ওই রাজ্যের কেওনঝার জেলার বাদানাই গ্রামে। এই প্রত্যন্ত গ্রামে বাস করতো আদিবাসী এক দম্পতি (Lived A Tribal Family)। তাদের কোনও সন্তান ছিল না। পাতি মুণ্ডা নামে ওই আদিবাসী মহিলার স্বামী ভঞ্জা মুণ্ডা এক অজানা রোগে আক্রান্ত হন (Unknown Disease)। গুরুতর অসুস্থ হলে ওই মহিলা তাকে চাম্পুয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাঁকে কেওনঝাড়ে জেলা হাসপাতালে রেফার করেন। কিন্তু চিকিৎসা চলাকালীন ভঞ্জা মুণ্ডার মৃত্যু হয়।
পাতি নামে ওই মহিলার কোনও টাকা পয়সা ছিল। এক পয়সা জমানোও না থাকায় টাকা ধার করে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর একটি ভ্যান ভাড়া করে তাঁর দেহ গ্রামে নিয়ে আসেন। গ্রামে দেহ নিয়ে আসার পর গ্রামবাসীদের কাছে স্বামীর দেহ সমাধি দেওয়ার ব্যাপারে সাহায্য চান। কিন্তু কোনও গ্রামবাসীই তাঁর কাতর আবেদনে সাড়া দেননি। শেষকৃত্যে হাজির হননি কেউ। কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর ওই আদিবাসী মহিলা একাই তাঁর মৃত স্বামীর দেহ নিয়ে যায় শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য। তারপর নিজেই হাতে তুলে নেন কোদাল। মাটি খুঁড়ে কবর দেন স্বামীকে। পাতি মুণ্ডা সংবাদমাধ্যমে তাঁর এই করুণ কাহিনি জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যমকে। তিনি জানান, স্বামীর সঙ্গেই থাকতেন। তাঁদের কোনও সন্তান ছিল না।
গত কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন তাঁর স্বামী। তাঁকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু অবস্থার কোনও উন্নতি না হওয়ায় তাঁকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। স্বামীর দেহ গ্রামে নিয়ে আসার জন্য দেড় হাজার টাকা ধার করেন। তারপর ভ্যানে করে নিয়ে আসেন দেহ। স্বামীর দেহ সৎকারে সাহায্য করার জন্য গ্রামবাসীদের কাছে বারবার কাতর অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু কেউই সাড়া দেয়নি। শেষপর্যন্ত নিজেই মাটি খুঁড়ে সমাধি দেন স্বামীকে। যদিও ২০১৮ সালে ওড়িশা সরকার গরিব, যাদের শেষকৃত্য করার মতো আর্থিক ক্ষমতা নেই, তাদের জন্য দু হাজার টাকার ব্যবস্থা করেছে। তবে সচেতনতা ও নিয়মের জটিলতার কারণে অধিকাংশ গরিব সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। আদিবাসী গ্রামের নিরক্ষর মানুষের কাছে সেই সাহায্য অধরাই থেকে যায়।