মহানগর ডেস্ক: আপনার কী রাতে ঘুম আসে না? আপনার পাশের মানুষটি নাক ডেকে ঘুমোচ্ছেন আর আপনি হাজার চেষ্টা করেও দু চোখের পাতা এক করতে পারছেন না (Insomnia) ? তারপর ভোর বেলায় ঘুম থেকে ওঠার পর দারুণ এক ক্লান্তিতে শরীর মন আনচান করতে থাকে। দিনভর একটা অস্থিরভাব চলে। সারা রাত না ঘুমনোকেই ইনসমোনিয়া বলা হয়ে থাকে। এর ফলে শুধু আপনার এনার্জি লেভেল, কাজ, কাজকর্মের ক্ষমতা এহং জীবনের সব হিসেব এলোমেলো করে দেয়। কত ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন, সেটা বয়সের ওপর নির্ভর করে। তবে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের (Adult People Needs Seven To Eight Hours Sleep) মোটামুটি সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। কোনও কোনও ক্ষেত্রে কেউ কেউ স্বল্পমেয়াদের (অ্যাকিউট) অনিদ্রায় আক্রান্ত হন। সেটা দিন কয়েক চলে আবার সপ্তাহের পর সপ্তাহ চলতে পারে। এটা স্ট্রেস বা ট্রমাটিক ইভেন্টের ফল বলেই মনে করা হয়।
কিছু কিছু মানুষের ইনসোমিনিয়া দীর্ঘদিন ধরে থাকে, সেটা এক মাস বা তার বেশি সময় ধরে চলে। ইনসোমিনিয়া প্রাথমিক সমস্যা হতে পারে বা এটি অন্য শারীরিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে থাকে। তবে প্রতিদিনকার রুটিনে সামান্য কিছু পরিবর্তন করলে এটা দূর হতে পারে। ইনসোমনিয়া লক্ষণগুলি হল- রাতে গভীর ঘুম না হওয়া। সারা রাত জেগে থাকা। ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠে পড়া। রাতের ঘুমের পর সকালে শরীর ভালো না লাগা। সারা দিন ধরে ক্লান্তিভাব,ঘুম ঘুম ভাব। দিনভর বিরক্তি,অবসাদ, উদ্বেগ। কোনওকিছুতে মনোযোগ দিতে না পারা। কাজে বারবার ভুল হওয়া এবং হঠাৎ করে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে বসা, ঘুম নিয়ে দুঃশ্চিন্তা। যদি ইনসোমনিয়া দিনের বেলা আপনার কাজে অনবরত কাজ করার ক্ষেত্রে অসুবিধে ঘটায়,তাহলে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। তাঁর সঙ্গে পরামর্শ করে ঘুম না হওয়ার কারণটা চিহ্নিত করার চেষ্টা করে তা কীভাবে সমাধান হবে, তা জানার চেষ্টা করুন।
আপনার চিকিৎসক যদি আপনার ঘুম না হওয়াটাকে স্লিপ ডিসঅর্ডার বলে মনে করেন, তাহলে বিশেষ পরীক্ষার জন্য তিনি আপনাকে স্লিপ সেন্টারে পাঠাতে পারেন। ঠিক কী কী কারণে ঘুম না হতে পারে,সেই কারণগুলি নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। যেমন কাজ,স্কুল,স্বাস্থ্য, টাকা বা পরিবার নিয়ে স্ট্রেস। জীবনে দুঃখবহ ঘটনা বা ট্রমা যেমন প্রিয় কারো মৃত্যু বা অসুস্থতা, ডিভোর্স বা চাকরি হারানো-এসব নিয়ে চিন্তা বাড়িয়ে ঘুম কেড়ে নেয়। ঘোরাঘুরি বা কাজের রুটিন একটা হিসেব মেনে চলা দরকার। ঘুম না হওয়ার অভ্যেস, রাতে বেশি পরিমাণ খাওয়া শরীরে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে, যা রাতে ঘুম না হওয়ার কারণ হতে পারে। রাতে ঘুমোবার সময় ঠিক না থাকলে অনিদ্রা দেখা দিতে পারে। তাই জীবনটাকে একটা নিয়মের মধ্যে বেঁধে ফেলা উচিত। ঘন ঘন চা বা কফি খাওয়া এড়িয়ে যাওয়া দরকার। এড়িয়ে চলা উচিত মদও। এছাড়া ধ্যান করলেও কমতে পারে অনিদ্রা। সমস্যা ঘোরালো হলে ভালো কোনও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।