মহানগর ডেস্কঃ ‘হিজাব নয়, স্বাধীনতা ও সাম্য চাই’ এই দাবিতে ইরানের প্রতিবাদী মহিলারা দফায় দফায় গড়ে তুলছেন প্রতিরোধ। সরকারের বিপুল দমনের চেষ্টাকে উপেক্ষা করে প্রতিবাদী মহিলাদের হিজাব না পরার সিদ্ধান্তই অব্যহত রাখার প্রচেষ্টা। আর তারই মধ্যে ফের মহিলাদের উপর রাষ্ট্রের অত্যাচারের মর্মান্তিক ছবি। রাষ্ট্রের স্তুতি গান গাইতে অস্বীকার করায় নিরাপত্তারক্ষীর বেদম প্রহার। প্রাণ গেল স্কুলের ১৫ বছরের ছাত্রীর।
গত ১৩ অক্টোবর ঘটনাটি ঘটেছে ইরানের একটি মহিলা স্কুলে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, ওই বিদ্যালয়ে নিরাপত্তারক্ষীদের অভিযানের সময় বাহিনীর তরফে পড়ুয়াদের একটি শাসক সমর্থিত গান গাইতে বলা হয়। সেই গান গাইতে অস্বীকার করেন পনের বছর বয়সী আসরা পানহি সহ বেশ কিছু পড়ুয়া। এরপরেই জ্ঞান না গাওয়ার অপরাধে নিরাপত্তারক্ষীরা বেধড়ক মারধোর করেন পানহি সহ বেশ কিছু পড়ুয়াকে। গুরুতর জখম অবস্থায় এই পড়ুয়াদের পরে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন থাকার সময়েই পানহির মৃত্যু হয় বলে দাবি করছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। শুধু তাইই নয় পাশাপাশি স্তুতিমূলক গান না চাওয়ার অভিযোগে ১০ জন পড়ুয়াকে নিরাপত্তারক্ষাবাহিনী গ্রেফতার করে বলেও অভিযোগ।
আসরা পানহির এই মর্মান্তিক পরিণতির জন্য নিরাপত্তাবাহিনীর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইরানের শিক্ষক সংগঠন সমন্বয়কারী পরিষদ। নিষ্ঠুর এবং অমানবিক এই ঘটনার নিন্দা প্রকাশ করে ইরানের শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে শিক্ষক সংগঠন। শিক্ষক সংগঠনের এই দাবিকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করা হয়েছে ইরানের শাসকদলের তরফে। সরকার পক্ষের দাবি পানহি দীর্ঘদিন হৃদরোগের সমস্যায় আক্রান্ত, তাতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে ইরানে হিজাব বিরোধী আন্দোলন ষষ্ঠ দিনে পড়ল। আন্দোলনকারী এবং নিরাপত্তারক্ষাবাহিনীর সংঘর্ষে এখনও মৃত্যুর সংখ্যা ২৩৩। এরই মধ্যে স্তুতিগান গাইতে অস্বীকার করায় নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর অত্যাচারে পড়ুয়ার মৃত্যু আগুনে নতুন করে ঘি ঢালার নামান্তর। এত প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, প্রাণ হনন, জখম এইসব কিছুর মাধ্যমে আশা একটাই, আগামী প্রজন্মের ইরানী মহিলাদের হিজাবের বদলে স্বাধীনতা ও সাম্যের অধিকারটা গড়ে ওঠার পথটাই প্রশস্ত করা।