মহানগর ডেস্ক: রাস্তায় রাস্তায় হাত তুলে বাজি পু়ড়িয়ে মহানন্দে নেচে চলেছেন অসংখ্য মানুষ। চারদিক থেকে শোনা যাচ্ছে উল্লাসের কান ফাটানো ধ্বনি। কাতারে চলছে বিশ্বকাপ। খেলায় তাদের দেশ হেরে গিয়েছে আমেরিকার কাছে (Lost To US)। দেশের টিম হারার পর ইসলামিক রাষ্ট্র ইরানের রাস্তায় শুরু হয় উল্লাস, (Iranians Enjoy Defeat) যা একেবারেই উল্টো একটা ছবি। যে ছবি শোক, অনুতাপের বদলে শুধুই উল্লাস। নিজেদের দেশের হারে এমন উল্লাসের কারণটা কী? কারণ দেশের মানুষে হারের পর মেতে উঠেছেন আনন্দ,উল্লাসে। হিজাব বিতর্ক গত কয়েকমাস ধরেই অগ্নিগর্ভ হয়ে আছে দেশ। যে পরিস্থিতির শুরুটা হয়েছিল ইসলামি রীতি অনুযায়ী হিজাব না পরায় সেদেশের নীতিপুলিশের হেফাজতে বাইশ বছরের তরুণী মাশা আমিনির মৃত্যুর পর।
তারপর থেকে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ-শাসকের দমননীতিতে জ্বলতে শুরু করেছিল আগুন, যে আগুনের জেরে প্রাণ হারিয়েছেন চারশোরও বেশি মানুষ। প্রতিবাদে পর্দানসীন মুসলিম মহিলারা চুল কেটে ফেলেছেন। হিজাব পোড়ানো থেকে মৌলবীদের পাগড়ি খুলে নেওয়ার মতো প্রতিবাদে সিঁদূরে মেঘ দেখতে পাচ্ছেন ইরানের প্রশাসকরা। বিক্ষোভকারীরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন সেদেশের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা খামেইনির বাড়ি। আর তারই ছায়া এসে পড়েছে বিশ্বকাপের তাঁদের জাতীয় দলের পরাজয়। যা শোকের বদলে পরিণত হয়েছে বাঁধনহারা উল্লাসে। একটাই কারণ শাসককে গদি ছাড়তেই হবে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওয় দেখা গিয়েছে ইরানের মানুষ রাস্তায় বেদম নাচ করছেন।
গত কয়েক মাস ধরেই হিজাব বিতর্কে অগ্নিগর্ভ ইরানে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সেদেশের প্রতিবাদী মানুষেরা। তাদের সেই ক্ষোভই আমেরিকার কাছে বিশ্বকাপে হারার পর জ্বলন্ত হয়ে উঠেছে রাস্তায় রাস্তায়, যা উল্লাসের চেহারা নিয়ে সবার সামনে মূর্ত হয়ে উঠেছে। বিশ্বকাপেও দেশের হিজাব বিরোধী প্রতিবাদের ছায়া এসে পড়েছিল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলার আগে। খেলার আগে স্টেডিয়ামে দেশের জাতীয় সঙ্গীতের সুরে সুর না মিলিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন ইরানের ফুটবলাররা।