মহানগর ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী পদে ইতালিতে শপথ নিলেন ‘মুসোলিনীপন্থী’ জিওরজিয়া মেলোনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এই প্রথমবার চরম দক্ষিণপন্থী সরকার তৈরি হল রোমে। একইসঙ্গে দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রীও পেল ইতালি । শনিবার মেলোনি শপথবাক্য পাঠ করান প্রেসিডেন্ট সারজিও মাতারেল্লা। শপথ নিয়েই ২৪ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করেন মেলোনি।
গত রবিবার ইতালিতে নির্বাচনের ফল প্রকাশ হয়। ফলাফলে দেখা যায়, আইনসভার ‘সেনেট’-এর ১১৪টি আসনে জিতেছেন মেলোনি ও তাঁর জোটসঙ্গীরা। সেই দেশের দুই প্রাক্তন দক্ষিণপন্থী সিলভিও বারলুস্কোনি ও মাত্তে সালভিনির সঙ্গে জোট বেঁধে ভোটে লড়েছিলেন মেলোনি।
ইতালির রাজনীতিতে মুসোলিনীপন্থী হিসেবে পরিচিত মেলোনি। দীর্ঘদিন ধরেই গর্ভপাতের অধিকারের বিরোধিতা করে আসছেন তিনি। এছাড়া অভিবাসন বিরোধী অবস্থানেও রয়েছেন তাঁরা। এমনকি, ইটালিকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বের করে আনার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা তা অবশ্য জানা যায়নি।
চলতি বছরের জুলাইতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি পদত্যাগ করায় ইতালিতে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। ওই সময় দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির অভিযোগ তুলে সমর্থন আদায় করেছিল অন্যতম শরিক দল ফাইভ স্টার। এরপরই ইস্তফা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী দ্রাঘি। কোভিড বিধ্বস্ত ইতালিকে ২০২১-এর ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতায় এসেছিল দ্রাঘির জোট সরকার। করোনা মোকাবিলায় সাফল্য লাভের পরেও তাঁর বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির অভিযোগ ওঠে। পরিস্থিতি সামলাতে শিল্প-বাণিজ্য ক্ষেত্রে ২৬ বিলিয়ন ইউরোর অর্থনৈতিক প্যাকেজ সংক্রান্ত বিল এনেছিলেন তিনি। সংসদের উচ্চকক্ষে সেনেটে বিলের বিরোধিতা করেছিল শরিক দল ফাইভ স্টার। জোট থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ার ঘোষণাও করে দেয় তাঁরা। এসব সত্ত্বেও সেনেটে বিলের পক্ষে ভোট পড়ে ১৭২। বিপক্ষে ভোট দেন ৩৯ জন। বিলের ভোটাভুটিতে জয় পেলেও অন্যতম বড় শরিক সরে যাওয়ায় বিপদে পড়ে যায় দ্রাঘি সরকার। তারপরই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা ঘোষণা করেছিলেন তিনি।
দ্রাঘির সরকারের পতনের পরে ফের ভোট হয় ইতালিতে। তাতেই ক্ষমতা পেয়েছেন মেলোনি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথের পরে তিনি বলেন, গণতন্ত্র ধ্বংস করার কথা কেউ যেন ভুলেও না পাবেন। ইতালির পুরনো গৌরব ফিরিয়ে আনবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।