মহানগর ডেস্ক : মানভঞ্জন আর করা গেল না। ধরে রাখা গেল না ঘাসফুল শিবিরে। শেষ পর্যন্ত হাতে পদ্ম বিধায়ক তাপস রায়ের। বুধবার সন্ধায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপি নেতা রাহুল সিনহার উপস্থিতিতে সল্টলেকে বিজেপির কার্যালয়ে গেরুয়া পতাকা হাতে তুলে নিলেন তাপস। এদিকে যোগদানের ঠিক প্রাক মুহূর্তে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান,বিধায়কের পদ থেকে তাপস ইস্তফা দিলেও তাতে ত্রুটি থাকায় তা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে জটিলতার মাঝেই বিজেপিতে যোগদান করলেন তাপস রায়। স্পিকারের কথা মতো, আগামিকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার মধ্যে নতুন করে ইস্তফাপত্র দিতে হবে বরাহনগরের বিধায়ককে। এমতাবস্থায় তাপসের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেলেও তিনি সাফ জানিয়েছিলেন, ‘ইস্তফা গ্রহণ হোক বা না হোক, আমি ইস্তফা দিয়ে দিয়েছি। যে যে পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি সেগুলো ফেরানোর কোনও প্রশ্ন নেই। পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়েছে, কাল আমি নতুন করে ইস্তফাপত্র জমা করব।’
এদিন রং বদলে তাপস সরাসরি তোপ দাগেন রাজ্যের শাসক দলকে। বলেন, ‘বাংলার বুকে যে অরাজকপরিস্থিতি, বাংলার সরকার শেখ শাহজাহানের সরকার। উত্তম সর্দারের সরকার।শিবু হাজরাদের সরকার । বাংলার সরকার সংবিধান, আইন কানুনের কথা বলে কিন্তু হাইকোর্ট-সুপ্রিম কোর্টের রায় মানে না। নির্দেশ মানে না। সকল অমানবিক দলদস্যুদের সরিয়ে আগামীদিনে যাতে আমারা শান্তির বাংলা গড়তে পারি শপথ নিই।’
প্রসঙ্গত, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে একের পর এক মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছিল কুণাল ঘোষ, তাপস রায়কে। ভুরি ভুরি অভিযোগ। এক দলে থেকে অন্য দলে তথ্য পাচারের অভিযোগও উঠেছে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। তারপর থেকেই বিদ্রোহ হয়ে উঠে তৃণমূল মুখপাত্র ও দলের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দেন কুণাল ঘোষ। তারপরই বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন তাপস রায়। দল না ছাড়ার জন্য মানভঞ্জন করতে তাপসের বাড়িতে যান কুণাল ঘোষ ও ব্রাত্য বসু। এদিকে আবার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে জমিয়ে খাওয়া দাওয়া করতে দেখা যায় কুণাল ঘোষকে। রাজনৈতিক নাটকীয়তার চূড়ান্ত পর্বে রং বদলে বিজেপিতেই যোগদান করলেন তাপস রায়। এখন দেখার উত্তর কলকাতায় সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাপস রায় একে অপরের বিরুদ্দে প্রতিদ্বন্দ্বী হন কিনা। বিজেপি ২০ টি আসনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। তৃণমূলের প্রার্থী ঘোষণা সম্ভবত ১০ মার্চের ব্রিগেড থেকে। ফলে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা কোন দিকে যায় সেটাই এখন দেখার।