মহানগর ডেস্ক: কাশ্মীর (Kashmir) বেড়াতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হাইকোর্টের বিচারপতি। ভূস্বর্গের সুন্দর প্রকৃতির মজা নিতে গিয়ে এক অতি সাধারণ সরকারি কর্মীর মুখ থেকে শুনতে হয়েছে “জাহান্নমে যাও”। উপত্যকায় এতটাই অসম্মানিত হতে হয়েছে যে, গোটা অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে (Amit Shah) চিঠি পাঠিয়েছেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay)।
আদালত সূত্রে, এজলাসে বসে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “কাশ্মীরে এখনও বহু পুলিশ আধিকারিক দেশবিরোধী মনোভাব পোষণ করেন। মঙ্গলবার একটি মামলার শুনানি চলাকালীন নিজের অভিজ্ঞতার কথা ভরা এজলাসে শুনিয়েছেন তিনি। মূলত ছুটিতে ঘুরতে গিয়েছিলেন লে-লাদাখ। লাদাখের হান্দুরমান গ্রাম পর্যন্ত যেতে কোনও সমস্যা পেতে হয়নি তাঁকে। তাঁর কথায়, সমস্যা শুরু হয় দ্রাসে।
আরও পড়ুন: বন্দুকবাজের হামলা আমেরিকায়, নিহত ৬৫ বছরের বৃদ্ধা সহ ৬
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, সাধারণত যেকোনও বিচারপতির কনভয়ে থাকেন জেলা জজ, কোটের কর্মী ও পুলিশ। তাঁরাই পথ চিনিয়ে নিয়ে যান। কিন্তু তিনি দ্রাস পৌঁছে দেখেন, কনভয়ে পুলিশের কোনও কর্মী বা আধিকারিক নেই। কারণ জানতে ২৩ কিলোমিটার পথ পার করে সেখানকার থানায় পৌঁছান তিনি। গিয়ে দেখেন, পুলিশ অফিসার ঘুমাচ্ছেন। পুরো ঘটনা বলে অনুরোধ করেন তাঁকে। এরপর থানার এসএইচও ওয়ার মেমোরিয়াল ঘুরিয়ে দেখান কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিকে।
আরও পড়ুন: অবশেষে মুখ খুললেন কঙ্গনা, দাঁড়ালেন নুপুর শর্মার পাশে
সেসময় বিচারপতিকে আশ্বাস দেওয়া হয়, তিনি প্রোটোকল অফিসার পাবেন। এরপর শ্রীনগরের দিকে রওনা দেন তিনি। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই বুঝতে পারেন তাঁকে মিথ্যে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। শ্রীনগর পর্যন্ত পৌঁছতে কেউ যাতে দায়িত্ব নেয়, সেজন্য সোনমার্গের পুলিশের সাহায্য চান অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানেও তাঁর খারাপ অভিজ্ঞতা হয়। বলা হয়, থানার গাড়ি খারাপ। সাহায্য করা সম্ভব নয়। শুনেই বিরক্ত হয়ে থানায় যান তিনি। দেখেন ২৮টি গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে এবং সবকটি সচল। এরপর সোনমার্গের হোটেলে রাত কাটিয়েছেন তিনি।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের অনুমান, দ্রাসের পুলিশ অফিসারদের মধ্যে দেশবিদ্বেষী মনোভাব রয়েছে। অন্যদিকে এক পুলিশকর্মী তাঁকে বলেন, “তুরতুক তো আসলে পাকিস্তানের এলাকা। যা দখল করে নিয়েছে ভারত”। ওই পুলিশ অফিসারও তুরতুকের বাসিন্দা। তাই তিনি বলেন, সেখানকার সব তাঁর জানা। বিচারপতির কথায় সোনমার্গের অফিসারদের মধ্যেও একই মনোভাবের পরিচয় পেয়েছেন তিনি। শুধু পুলিশ নন, সরকারি পদস্থ অফিসারদের একাংশও তাঁর সঙ্গে ঠিকঠাক ব্যবহার করেননি। এক কথায় অত্যন্ত খারাপ অভিজ্ঞতা হয়েছে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। ভূ-স্বর্গে ঘুরতে গিয়ে অত্যন্ত খারাপ হোটেলে ব্যবস্থা করা হয় তাঁর জন্য। সেখানকার প্রোটোকল অফিসার কর্মী তাঁকে হুঁশিয়ারি বার্তা দেন। আর এই সমস্তকিছুই চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছেন তিনি।