মহানগর ডেস্কঃ ইংরেজি ভাষার রমরমা গোটা দেশ জুড়ে। ইংরেজি ভাষার একতরফা আগ্রাসনে পিছিয়ে থাকছে স্থানীয় এবং আঞ্চলিক ভাষা। ভারতের মত বহু ভাষাভাষীর দেশে এই আঞ্চলিক ভাষার গুরুত্ব হারিয়ে যাওয়া ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত বলেই মনে করছেন ভাষাবিদেরা। তাই আঞ্চলিক ভাষাগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে উদ্যোগ নিচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যের সরকার। এমনই এক অভিনব উদ্যোগের সামিল মণিপুর সরকার।
স্থানীয় ভাষার প্রসারে এবার মণিপুর সরকারের অভিনব উদ্যোগ। মণিপুরি ভাষা শিখলেই শিক্ষার্থীরা পাবেন নগদ ৫০০০ টাকা। এই বিষয় নিয়ে সম্প্রতি একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে ডিরেক্টরেট অফ ল্যাঙ্গুয়েজ প্ল্যানিং এন্ড ইমপ্লিমেন্টেশনের তরফে।
মণিপুরে বিভিন্ন উপজাতির মানুষের বাস। তাঁদের নিজস্ব সংস্কৃতি এবং ভাষা আছে। সেই স্থানীয় ভাষাগুলি যাতে অন্যরাও শেখার সুযোগ পান তার জন্যি এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে সরকারি তরফে। মোট সাতটি ভাষা শেখানোর জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। প্রশিক্ষণের সময় দু’ মাস।
এই স্থানীয় ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা বেঁধে দেওয়া হয়েছে মণিপুর সরকারের পক্ষ থেকে। জানানো হয়েছে আবেদনকারীদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হতে হবে উচ্চমাধ্যমিক পাশ। পাশাপাশি ভাষা নিয়ে কিছুটা ধারণাও থাকতে হবে শিক্ষার্থীদের। নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনেই করতে হবে আবেদন। ভাষা নিয়ে বিশেষ আগ্রহ যাঁদের আছে এবং যাঁরা আগামী দিনে ভাষার সম্প্রসারণে এবং উন্নতিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন তাঁরাই এই প্রশিক্ষণে অগ্রাধিকার পাবেন বলে জানা যাচ্ছে।
পাশাপাশি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত হলে প্রশিক্ষণ চলাকালীন মাঝপথে তা ছেড়ে চলে যেতে পারবেন না। প্রশিক্ষণ ছেড়ে চলে গেলে তাঁর জন্য ধার্য ভাতা ফেরত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পরে একটি পরীক্ষা নেওয়া হবে, তাতে ন্যূনতম পাশ নম্বর পেতেই হবে।
পাশাপাশি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আবেদনকারীদের বয়স চলতি মাসের ১ তারিখের হিসেবে ৫০ বছরের নিচে হতে হবে। আবেদনকারীরা www.dlpi.mn.gov.in এই সাইট থেকে আবেদনপত্রগুলি ডাউনলোড করতে পারবেন। আবেদনকারীদের কবে, কখন, কীভাবে নির্বাচন করা হবে তা জানিয়ে দেওয়া হবে দফতরের ওয়েবসাইটে।
মণিপুর সরকারের এমন অভিনব উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ভাষাবিদেরা। এভাবেই স্থানীয় এবং আঞ্চলিক ভাষা গুলোর প্রসার অব্যহত থাকলে আগামী দিনে ভাষাগুলোকে বাঁচিয়ে রাখা যেতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।