মহানগর ডেস্ক: পৃথিবীর কুখ্যাততম মহিলা গুপ্তচরের নাম মাতাহারি (Matahari)। তাঁর বাইরের একটা পরিচয় ছিল সেটা হল তিনি এশিয়ার বিলু্প্তপ্রায় নর্তকী (Exotic Dancer)। আর সেই পরিচয়ের আড়ালে গোপনে গোপনে চালিয়ে যেতেন গুপ্তচরবৃত্তির কাজ (Notorious Woman Spy)। ইউরোপে নাচ করে বেড়ালেও তাঁর আসল কাজ ছিল শত্রুপক্ষের গোপন খবর সংগ্রহ। মধুচক্রের ফাঁদে বিশ্বের বহু ক্ষমতাবান সামরিক কর্তাদের কাছ থেকে দুর্বল মুহূর্তের সুযোগে বের করে নিতেন তাদের নানা খবরাখবর। যেমন অস্ত্রসম্ভাব, আক্রমণের পরিকল্পনা থেকে যুদ্ধের নানা কৌশল। তাঁর নগ্ন নাচ দেখতে এবং যৌনসম্পর্ক করতে নানা দেশের মন্ত্রী,জেনারেলরা একরকম মরীয়া ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের সূত্রে গোপন তথ্য আদায় করে তা শত্রুপক্ষের কাছে বিক্রি করতেন। তার মাধ্যমেই তিনি ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন একজন ভয়ঙ্কর ধরণের গুপ্তচর। তাঁর গোপন খবরের ভিত্তিতেই হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয় বলে মনে করা হয়।
তাঁর রূপ, যৌবনে মোহিত হয়ে বহু ক্ষমতাবান মানুষ অনায়াসেই কাৎ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁকে ইউরোপের মক্ষীরানি বলা হতো। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগাতেন তিনি। আর এসব করতে গিয়েই তাঁর সব জারিজুরি ধরা পড়ে। তাঁকে ডাবল এজেন্ট বলেও সন্দেহ করা হতো। একশো বছর আগে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের বাইরে তাঁকে ফায়ারিং স্কোয়াডে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয়। যেদিন মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, সেদিন সকালে প্যারিসের সেন্ট ল্যাজার জেল থেকে সেনাবাহিনীর গাড়িতে শহরের কাছে শ্যাতো দু ভিসেনেসে নিয়ে যাওয়া হয়। সঙ্গে ছিলেন দুজন সন্ন্যাসিনী এবং তাঁর আইনজীবী। মাটির দেওয়ালে খুঁটি পুঁতে সেখানে দাঁড় করানো হয়। ফায়ারিং স্কোয়াডের বারোজন সেনা সেখানে ছিলেন। মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার সময় একচল্লিশ বছরের মাতাহারির পরনে ছিল লম্বা কোট আর মাথায় ফেল্টের টুপি। তবে তিনি তাঁর চোখ বাঁধতে দেননি। ফায়ারিং স্কোয়াডের কমান্ডার তলোয়ার নামানোর পরই গুলি ঝাঁজরা করে দেয় মাতাহারিকে। মাটিতে ঢলে পড়েন মক্ষীরানি তথা দুনিয়ার কুখ্যাততম মহিলা গুপ্তচর। তবে কেউ কেউ মনে করেন তাঁর সম্পর্কে বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলা হয়েছে। তিনি আদৌ কোনও গুপ্তচর ছিলেন না।
,