মহানগর ডেস্ক: একত্রিশ বছর জেলে কাটানোর পর সদ্য মুক্তি পেয়েছেন তিনি। তাঁর সঙ্গে মুক্তি পেয়েছেন আরও পাঁচজন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডে ( Rajib Gandhi Assassination) সাজাপ্রাপ্ত নলিনী শ্রীহরণ (Nalini Sriharan) দীর্ঘ কারাবাসের পর মুক্তি পেয়ে জানালেন, গান্ধী পরিবারের জন্য তিনি দুঃখবোধ করছেন। সেই বিস্ফোরণকাণ্ডে বাকি যাঁরা মারা গিয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারের সবার জন্যও তিনি দুঃখিত। জেলে যতদিন তাঁরা ছিলেন,ততদিনই এ কথাই ভেবে এসেছিলেন। এক সংবাদমাধ্যমকে নলিনী জানান, তাঁরা তাঁদের প্রিয় মানুষকে হারিয়েছেন। তাঁর আশা একদিন তাঁদের পরিবার সেই ট্র্যাজেডি থেকে বেরিয়ে আসবেন। নলিনীর মেয়ে এখন ইংল্যান্ডে রয়েছে। সেখানেই তিনি স্বামীর সঙ্গে পাকাপাকি থাকবেন কিনা, সে ব্যাপারে জিজ্ঞেস করায় এই জবাব দেন তিনি।
শুক্রবার তিনি ও পাঁচজনকে মুক্তি দেয়। ১৯৯১ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যায় কারাবাসের সাজা দেওয়া হয় নলিনী-সহ পাঁচজনকে। ওই বছর তামিলনাডুর শ্রীপেরামপুদুরে মে মাসে ভোট প্রচারের সময় শ্রীলঙ্কার জঙ্গিগোষ্ঠী এলটিটিইর মানব বোমা বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যান রাজীব গান্ধী। ১৯৮৭ সালে শ্রীলঙ্কায় শান্তিবাহিনী পাঠানোর পাল্টা হিসেব ওই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয় বলেই মনে করা হয়। লড়াইয়ে বারোশ মানুষের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় ভারতের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। নলিনী অবশ্য নিহত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর পরিবারের কারো সঙ্গে দেখা করবেন না। তাঁর ধারণা, গান্ধী পরিবারের কেউ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাইবেন না। দেখা করার সময় পেরিয়ে গিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট নলিনী-সহ পাঁচজনের মুক্তি দেওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে কংগ্রেস। তবে শীর্ষ আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন তামিলনাডুর বহু মানুষের। সেখানকার অনেকেরই ধারণা হত্যার চক্রান্তে তাঁদের ভূমিকার কথা না জেনেই তাঁদের সাজা দেওয়া হয়েছিল। সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে জেলবন্দিদের ভালো আচরণের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মে মাসে আরেক সাজাপ্রাপ্ত এজি পেরারিভালকে মুক্তি দেয় আদালত। তাঁকে মুক্তি দিতে গিয়ে আদালত জানিয়েছিল, সে যখন গ্রেফতার হয়েছিল তখন তার বয়েস ছিল উনিশ। তিরিশ বছরের বেশি সে জেলে কাটিয়েছে। তার মধ্যে উনত্রিশ বছর নির্জন জেল কক্ষে তাকে কাটাতে হয়েছে।