নিজস্ব প্রতিনিধি : এঁদের কেউ ঘর ছেড়েছেন এক যুগ আগে। চোদ্দ পুরুষের ভিটে ছেড়ে স্ত্রী-পুত্র-পরিবার-পরিজন নিয়ে কেউ আবার পথে বসেছেন দশ বছরেরও বেশি সময় আগে। দীর্ঘ দিন ঘর ছেড়ে বাইরে রইলেও মন পড়ে নানুরের ভিটের প্রতি। চলতি বিধানসভা নির্বাচনের আগে এঁরাই ফিরতে চাইছেন ঘরে। এই দাবিতে আজ, মঙ্গলবার বোলপুরে মহকুমা শাসকের দফতরে অবস্থানে বসেছেন নানুরের ১৬৫টি ঘরছাড়া পরিবার।
বাম জমানার শেষের দিকে ঘর ছেড়েছিলেন নানুরের পাপুরি, খালা, চণ্ডীপুর সহ বিভিন্ন এলাকার ১৬৫টি পরিবার। ২০১১ সালে অস্ত গিয়েছে বাম সূর্য। রাজ্যের কুর্সিতে বসেছে তৃণমূল। তার পরেও ঘরে ফেরা হয়নি আক্ষরিক অর্থেই সর্বহারাদের। অথচ এই গ্রামগুলোর সর্বত্রই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এঁদের পায়ের ছাপ। এক সময় গ্রামে এঁদের সবই ছিল। জমি-জিরেত, পুকুর সব। দীর্ঘদিন ঘরছাড়া থাকায় সেসব এখন মজে যাওয়ার জোগাড়। ফি বার ভোট এলেই ঘরে এঁদের ঘরে ফেরাতে উদ্যোগী হয় সব দলই। তার পরেও কপাল ফেরে না। ঘরে ফেরা হয় না ভিটেহারাদের। আবারও ভোট উৎসব শুরু হয়েছে রাজ্য জুড়ে। রাজসূয় সেই যজ্ঞে শামিল হতে চান তাঁরাও। তাই এদিন বোলপুরে মহকুমা শাসকের দফতরে অবস্থানে বসেন ভিটে ছাড়া ১৬৫ পরিবার।
এক সময় সন্ধে নামলেই এই গ্রামগুলির ঘরে ঘরে জ্বলত প্রদীপ। তুলসিতলায় পিদিমও জ্বালতেন অনেকেই। ঘরে ঘরে বাজত মঙ্গলশঙ্খ। লক্ষ্মী আসবেন ভেবে দুয়ারে আল্পনা দিয়ে কোজাগরি পূর্ণিমায় রাত জাগতেন এঁদের অনেকেরই মেয়ে, বউ। ভোটের সময় দল বেঁধে এঁরাই যেতেন গণতন্ত্রের উৎসবে যোগ দিতে। গত এক যুগ ধরে সেসবই অতীত। তবুও ঘরে ফিরতে চান ওঁরা। কারণ শুধু ভোট দেওয়ার তাগিদ নয়, ভিটে হারানোর যন্ত্রণাও এখনও কুরে কুরে খায় এঁদের। এখনও নিশিরাতে কেউ কেউ স্বপ্ন দেখেন গ্রাম ছাড়া রাঙামাটির পথ…শিরীষ, পলাশ…