মহানগর ডেস্ক: মঙ্গল, শুক্রে পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনার সঙ্গে চন্দ্র অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে নাসা। সেই নিয়ে চন্দ্রাভিযান আর্টেমিস মিশনের (NASA Artemis 1) বিশাল উদ্যোগ-আয়োজন চলছে। আর এই মিশন সম্পন্ন হবে পাঁচটি পর্যায়ে, যার মধ্যে তৃতীয় পর্যায়ে মানুষ নিয়ে সরাসরি চাঁদে ল্যান্ড করার পরিকল্পনা করেছে নাসা। আছে। প্রায় ৫০ বছর পরে চাঁদে নভশ্চর পাঠাতে চলেছে নাসা। আর তার জন্য বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট বানিয়ে ফেলেছে নাসা। পৃথিবীর মাটি থেকে হুশ করে উড়ে একেবারে চাঁদে গিয়ে ল্যান্ড করবে এই রকেট। সেই আর্টেমিস মিশনের প্রথম ধাপ শুরু হয়েছে আজ থেকেই। যাত্রীবিহীন আর্টেমিস-১ এর রকেট আজই চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছে সকাল ১১টা নাগাদ। ২৫ দিনের প্যাকেজে ওরিয়ন ক্যাপসুলের মূল লক্ষ্য চাঁদকে প্রদক্ষিণ করে চাঁদের মাটিতে সম্ভাব্য ল্যান্ডিং সাইটগুলোকে চিহ্নিত করা। পাশাপাশি মহাকাশচারীদের লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমের অবস্থাও খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে আসবে স্পেস রকেট।
নাসার পরবর্তী চন্দ্রাভিযান নিয়েও প্রস্তুতি তুঙ্গে। চাঁদের কক্ষপথে প্রথম ‘লুনার স্পেস স্টেশন’ বানাচ্ছে নাসা। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘গেটওয়ে টু মুন’ বা ‘আর্টেমিস’। পৃথিবীর জোরালো অভিকর্ষজ টানকে ছিন্ন করে মহাকাশযানকে চাঁদে পাঠানো সহজ নয়। তাই লুনার স্পেস স্টেশন তৈরি করা হচ্ছে গবেষণা চালানোর সুবিধার্থে। আবার চাঁদে যখন তখন পাড়ি দেওয়ার জন্য স্পেস লঞ্চ সিস্টেম (এসএলএস) রকেট বানিয়েছে নাসা। এই প্রোগ্রামের ম্যানেজার জন হানিকাট বলেছেন, আর্টেমিস-১ মিশনের পরবর্তী আসন্ন প্রতিটি মিশন হবে জটিল। চাঁদে মানুষ নিয়ে যাওয়া হবে। লুনার স্টেশনের কাজও শেষ করতে হবে। তাই উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন শক্তিশালী রকেট প্রয়োজন ছিল। সে জন্যই এসএলএস রকেট তৈরি করা হয়েছে। এর আরএস-২৫ ইঞ্জিন প্রচুর পরিমাণ শক্তি তৈরি করবে। খুব কম সময় চাঁদ বা অন্যান্য মহাকাশ অভিযানে পাড়ি দিতে পারবেন নভশ্চররা।
৫৫ বছর আগে নিল আর্মস্ট্রং, মাইকেল কলিন্স আর এডুইন (বাজ) অলড্রিনের মতো খুব অল্প সময়ের জন্য এ বার চাঁদের বুকে পা পড়বে না মানুষের। টানা এক সপ্তাহ ধরে চাঁদের বুকে চলবে গবেষণা। আর সে কারণে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) রয়েছে পৃথিবী থেকে বড়জোর ৩৭০ কিলোমিটার উপরে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা (NASA), কানাডার সিএসএ (CSA), জাপানের জাক্সা (JAXA), রাশিয়ার রসকসমস (Roscosmos) ও ইউরোপের ইসএ (ESA) —এই পাঁচটি মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের সম্মিলিত চেষ্টায় ১৯৯৮-২০১১ সালের মধ্যে গড়ে উঠেছিল আইএসএস। আর নাসার তৈরি লুনার স্পেস স্টেশন বিরাজ করবে পৃথিবী থেকে ৩ লক্ষ ৮০ হাজার কিলোমিটার দূরে। নাসা জানিয়েছে, এই স্পেস স্টেশন বানানোর প্রাথমিক কাজ শেষ হবে ২০২৩ সালের মধ্যে। দ্বিতীয় পর্যায়, অর্থাৎ নভশ্চরদের নিয়ে পাকাপাকি ভাবে বাসযোগ্য আস্তানা গড়ে তোলার কাজ শেষ হবে ২০২৮ সালের মধ্যেই।