মহানগর ডেস্ক: ডিম-মাংস ক্ষতি করছে শরীরের। কর্ণাটকের (Karnataka) জাতীয় শিক্ষা নীতি কমিটি দেশের সমস্ত স্কুলগুলিতে মিড ডে মিল ( Mid Day Meal) থেকে সরিয়ে দিতে চায় আমিষ খাবার। যেখানে সেখানকার ৮০ শতাংশেরও বেশি মানুষ ডিম বা মাংস খেয়ে থাকে। সেখানে এই প্যানেল জানিয়েছে, এই খাবারগুলি আদতে অসুস্থতার কারণ। বিজেপি শাসিত কর্নাটকের জাতীয় শিক্ষা নীতি কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, ডিম আর মাংসের জন্য শিশুদের শরীরে বাসা বাঁধে রোগ। আর তাই স্কুলের মিড ডে মিলের তালিকা থেকে এই দুই প্রোটিনযুক্ত খাবার বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছেন তারা। এদিকে এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পরে গিয়েছে চারিদিকে। প্রসঙ্গে কর্ণাটক সরকার জানিয়েছে, বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
একসময় দূরদর্শনের অত্যন্ত জনপ্রিয় বিজ্ঞাপনের ট্যাগলাইন ছিল ‘সানডে হো ইয়া মানডে, রোজ খাও আন্ডে’। এখন সেই ডিম শিশুদের অসুস্থ হওয়ার সবথেকে বড় কারণ বলে, দাবি করছে শিক্ষানীতির কর্তাব্যক্তিরা। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মিড ডে মিলে ডিম দেওয়া হলে তা সামাজিক বৈষম্যের কারণ হবে। এমনকি ভারতীয়রা নিয়মিত ডিম বা মাংস খেলে, সেটা দৈনন্দিন জীবনে সমস্যা সৃষ্টি করবে।
মূলত নিমহানসের চিকিৎসক জন বিজয় সাগরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় শিক্ষা নীতি কমিটির ৮ সদস্যদের প্যানেলের পক্ষ থেকে সুপারিশ জমা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রতিদিন মাংস-ডিম খেলে শিশুর শরীরে দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা। তাই মিড ডে মিলের তালিকায় ডিম মাংস না রাখাই উচিত। পাশাপাশি সেই কমিটি জানিয়েছে, শিশুদের মধ্যে খাবার নিয়ে বৈষম্য ঠিক নয়। ভারতীয় ধর্মেও এটা বলা হয় না। তাই কেউ ডিম খাবে, কেউ কলা খাবে, এইরকম ব্যবস্থা রাখার কোনও প্রয়োজন নেই। বৈষম্য দূর করার জন্য সকলকে তিলের নাড়ু, গুড় ইত্যাদি ‘সাত্ত্বিক খাবার’ দেওয়া হোক। পড়ানো হোক ভীম-হনুমানের খাদ্যাভাসের কাহিনী।
কমিটির এই ধরনের সুপারিশ জানাজানি হতেই শোরগোল পরে যায় চারিদিকে। প্রসঙ্গে বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা রিজওয়ান আরশাদ বলেছেন, ‘বিশেষজ্ঞ প্যানেলের ওই সুপারিশের পিছনে রয়েছে অন্য কোনও মতাদর্শকে চাপিয়ে দেওয়ার অভিসন্ধি। গরিব শিশুদের প্রোটিনযুক্ত খাবার থেকে বঞ্চিত রাখার এটি একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্র। মূলত কর্ণাটক সরকার বিভিন্ন বিষয়ে ২৬ টি কমিটি গড়েছে। সেখানে পুষ্টি বিষয়ক কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন অধ্যাপক বিজয় সাগর। কদিন আগে সেই কমিটির পক্ষ থেকেই এই সুপারিশ করা হয়েছে।
তাতে কর্ণাটকের টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান মদন গোপাল জানিয়েছেন, মূলত পুরনো দিনের ধারা অনুসরণ করে সাত্ত্বিক মিড ডে মিলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে অনেকের প্রশ্ন, বেদের যুগে মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ ছিল না। তাহলে এই সুপারিশ কেন?