Home Offbeat ১৯৪৮ নয়, তিনি খুন হতে পারতেন ১৯৩৪-এ, নেপথ্যে গান্ধী-হত্যার অজানা কাহিনী

১৯৪৮ নয়, তিনি খুন হতে পারতেন ১৯৩৪-এ, নেপথ্যে গান্ধী-হত্যার অজানা কাহিনী

১৯৪৮ নয়, তিনি খুন হতে পারতেন ১৯৩৪-এ, নেপথ্যে গান্ধী-হত্যার অজানা কাহিনী

by Mahanagar Desk
47 views

মহানগর ডেস্ক: আজ ৩০ জানুয়ারি, জাতির পিতা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর মৃত্যুবার্ষিকী। তবে ২ অক্টোবর গান্ধী জন্মদিনের মতো, আমরা তাঁর মৃত্যুর দিনটি মনে রাখিনা। কালের নিয়মে সবটাই ফিকে হয়ে যাচ্ছে। অথচ ভারতবর্ষের অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্রামী হলেন মহাত্মা গান্ধী। যার প্রতিচ্ছবি আজও ভারতীয় টাকা বহন করে চলেছে। ভারতকে স্বাধীনতা দেওয়ার অন্যতম প্রাণপুরুষ হলেন গান্ধীজী। তাঁর রাজনৈতিক নৈতিক বোধ আজও হার মানায় দেশের তাবড় তাবড় নেতাদের। ব্রিটিশ শাসানাধীন ভারতকে মুক্ত করতে তাঁর নেতৃত্বে হয়েছিল সত্যাগ্রহ, ভারত ছাড়ো আন্দোলনের মতো একাধিক আন্দোলন।

রাজনীতিবিদের পাশাপাশি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রগামী ব্যক্তিবর্গের মধ্যে একজন এবং প্রভাবশালী আধ্যাত্মিক নেতাও ছিলেন তিনি। তিনি ছিলেন সত্যাগ্রহ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। যেটি ছিল ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম চালিকা শক্তি। যিনি একজন শিক্ষিত ব্রিটিশ আইনজীবী হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকায় নিপীড়িত ভারতীয় সম্প্রদায়ের নাগরিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে প্রথম অহিংস শান্তিপূর্ণ নাগরিক আন্দোলনের মতাদর্শ প্রয়োগ করে ছিলেন। এরপর ভারতে ফিরে এসে তিনি কয়েকজন দুঃস্থ কৃষক-দিনমজুরকে সঙ্গে নিয়ে বৈষম্যমূলক কর আদায় ব্যবস্থা, বহুবিস্তৃত বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন এবং দেওবন্দিদের অধীনে খিলাফত আন্দোলন শুরু করেন।

সবগুলোই ছিল স্বরাজ অর্থাৎ ভারতকে বিদেশি শাসন থেকে মুক্ত করার লক্ষ্য। যাই হোক, এত কিছু থাকতে পারে হওয়ার পরেও তাঁকে রাজনৈতিক হিংসার কারণেই ভস্ম হতে হল। ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি অর্থাৎ আজকের দিনে হিন্দুদের বিভাজন ও দুর্দশার জন্য গান্ধীকে দায়ী করে তাঁকে হত্যা করেন নাথুরাম গডসে। মহাত্মা গান্ধী দিল্লির বিড়লা হাউসের প্রার্থনা মণ্ডপের দিকে হাঁটছিলেন। সেই সময় ৩৫ বছর বয়সি যুবক নাথুরাম গডসে তাঁর সামনে এসে পকেট থেকে পিস্তল বের করে। পয়েন্ট-ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে তিনটি গুলি ছোঁড়ে। যা গান্ধীর বুকে, পেটে এবং কুঁচকিতে আঘাত করেছিল। ১৫ মিনিটের মধ্যেই ‘জাতির জনক’ মারা যান। ঘটনাস্থলে থাকা সামরিক কর্মীরা গডসেকে আটক করেন। তাঁর পিস্তল ছিনিয়ে নেন। কিন্তু জানেন কী, নাথুরাম গডসে ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি গান্ধীজিকে হত্যার আগে আরও চারবার হত্যার চেষ্টা করেছিলেন তাঁকে। এই ঘটনার ১৪ বছর আগে থেকেই নাথুরাম গান্ধীজীকে হত্যার ষড়যন্ত্র বেঁধে ফেলেন। প্রথম বার ১৯৩৪ সালের ২৫ জুন। পুনে কর্পোরেশনের অডিটোরিয়ামে বক্তৃতার জন্য স্ত্রী কস্তুরবা গান্ধীকে নিয়ে তিনি যাত্রা করেন। তখনই গান্ধীজির গাড়ির পিছনেই অনুসরণকারী ছিল একই রঙের একই মডেলের একটি গাড়ি। অর্থাৎ গান্ধীজি যে খুন হতে পারেন সেই খবর কংগ্রেস দলের কাছে ছিল। অনুসরণকারী গাড়িটি তাই প্রথম পৌঁছয় সভাস্থলে। হঠাৎ বিষ্ফোরণ ঘটে সেই গাড়িতে। সেই গাড়ির চালক সহ স্থানীয় প্রায় ৬ জন মানুষ মারাত্বক আহত হন। কিন্তু বেঁচে যান জাতির পিতা।

এরপর ১৯৪৪ সাল। পুনের আগা খান প্যালেসে গৃহবন্দী গান্ধীজী। প্রায় পৌনে দুবছর তিনি বন্দী ছিলেন।২২ ফেব্রুয়ারি এখানে গান্ধী পত্নী প্রয়াত হন।ঘটনার কিছুদিন পর গান্ধীজি ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন। ব্রিটিশ প্রশাসন ঝুঁকি না নিয়ে বন্দী গান্ধীজিকে নিয়ে আসে মহারাষ্ট্রের পঞ্চগণি নামে এক শৈল শহরে। এখানে একদিন এসে পৌঁছয় একটি বাস। জনা কুড়ি তরুণ গান্ধীজির বাসভবনের কাছে দাঁড়িয়ে গান্ধীজির নামে অশ্রাব্য গালি দিতে শুরু করে। গান্ধীজির আদেশে ডেকে পাঠানো হয় দলনেতাকে। গান্ধীজি প্রস্তুত হচ্ছিলেন প্রার্থনা সভার জন্য। সেই নেতা ছুরি হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন গান্ধীজির ওপর। দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দেন গান্ধীজির দেখভাল করার দুই কর্মী মণিশঙ্কর পুরোহিত ও ভিল্লারের এক গুরুজী। সেই প্রচেষ্টাতেও বেঁচে যান গান্ধীজী। ১৯৪৬ জুন মাস, গান্ধীজি ট্রেনে যাচ্ছেন পুনে। নিরুল আর কারজাত স্টেশনের মাঝে ট্রেন বেলাইন হয়। কিন্তু ট্রেনের চালকের উপস্থিত বুদ্ধিতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার রোধ হয়। সম্ভবত সেই ঘটনা ছিল অন্তর্ঘাত। একই বছরে ২০ জানুয়ারি, পরিকল্পনা ছিল বিড়লা হাউসের বক্তৃতা দেওয়ার সময় গডসে ও তাঁর সঙ্গীরা বোমা নিক্ষেপ করবেন। মদনলাল নামে একজন গডসে সঙ্গী ফটোগ্রাফার সেজে ভিড়ে মিশে ছিলেন।

কিন্তু এক ট্যাক্সি চালকের সন্দেহ হয় মদমলালের ওপর। বোমা নিক্ষেপ হয়। কিন্তু বোমা তৈরিতে ত্রুটি থাকায় সেটির বিষ্ফোরণ তেমন হয় না। সেই যাত্রাতেও গান্ধীজী বেঁচে যান। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হয় না, ৩০ জানুয়ারি মহাত্মা গান্ধী যখন দিল্লির বিড়লা হাউসের প্রার্থনা মণ্ডপের দিকে হাঁটছিলেন। সেই সময় ৩৫ বছর বয়সি যুবক নাথুরাম গডসে তাঁর সামনে এসে পকেট থেকে পিস্তল বের করে। পয়েন্ট-ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে তিনটি গুলি ছোড়ে, এবং সেখানেই গান্ধীজীর মৃত্যু হয়।

You may also like

Mahanagar bengali news

Copyright (C) Mahanagar24X7 2024 All Rights Reserved