মহানগর ডেস্ক: মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে মঞ্চে যখন গান গাইতে ওঠেন,তখন তিনি রুমন। যদিও আদ্যোপান্ত এক পুরুষ তিনি (Man Sings In Female Voice)। গলার স্বরই বলুন,সুরই বলুন- সবটাই একেবারে মেয়েদের মতো। না দেখলে মনে হবে একজন মহিলা গান গাইছেন। আসল নাম শুভজিত দে। বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনে (West Midnapore)। গান শুনে একটুও বোঝার উপায় নেই তিনি পুরুষ না মহিলা, নাকি পুরুষের ছদ্মবেশে কোনও মহিলা।
আসলে পুরুষ হয়ে জন্মালেও তাঁর গলার স্বর একেবারেই মেয়েদের মতো। একেবারে ছেলেবেলায় বয়েসে বড় দিদির গান গাওয়া শুনে শুভজিত ওরফে রুমন নিজেই গান করা শুরু করেন। গানের ব্যাপারে পাগল শুভজিত নিজে একজন পেশাদার নর্তক। ছেলেবেলা থেকে অসম্ভব দারিদ্রে মানুষ হয়েছেন তিনি। বর্তমানে একজন ড্যান্স ইনস্ট্রাকটর হিসেবে কাজ করেন। বাবা অসীম দে চাষবাস করে সংসার চালান। বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলে নাচের তালিম দেওয়ার পাশাপাশি শুভজিত গ্রামের নানা জায়গায় নাচ শিখিয়ে রোজগার করেন। একইসঙ্গে ঘরোয়া কাজও করে থাকেন।
তবে দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করলেও গান তাঁকে কখনওই ছেড়ে যায়নি। আগে দিদির গানের অনুশীলনে অংশ নিতেন তিনি। জন্ম থেকেই গলার স্বর একেবারে মেয়েদের মতো। মেয়েদের গলায় রবীন্দ্রসঙ্গীত, আবার কখনও লতা মঙ্গেশকরের গান গেয়ে থাকেন। তবে এ ব্যাপারে তিনি আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ নেননি।
গান শুনে সেই গান শিখেছেন তিনি। তবে মেয়েলি গলায় গান করার জন্য পড়শিদের অনেক কটু মন্তব্য হজম করতে হয় তাঁকে। তবে এতসবের পরেও নিজের লক্ষ্য থেকে একটুও সরতে রাজি নন শুভজিত। তাঁর বাবা ছেলের গানের খুবই প্রশংসা করে থাকেন। বিশ্বাস করেন তাঁর ছেলে একদিন তাঁরে নিরলস চেষ্টার জোরে খ্যাতির সীমায় পৌঁছবে। গান করার পাশাপাশি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান গেয়ে থাকেন শুভজিত ওরফে রুমন। তবে পড়শিরা তাঁকে ব্যঙ্গ করে থাকেন। সমালোচনা, নিন্দাও হজম করতে চায়। তবে সেসবকে তোয়াক্কা না করে এগিয়ে যেতে বদ্ধ পরিকর শুভজিত।