মহানগর ডেস্ক: এপার আর ওপার। কিন্তু সীমান্তের প্রাচীর ( Border) পরোয়া করে না মানবিকতা, মহানুভবতার। যে দেশের সঙ্গে কাশ্মীর নিয়ে (Kashmir) এদেশের অহরহ সংঘাত চলে আসছে, সেই সেদেশেরই বিপন্ন শিশুকে (Pakistan Child Cured By Indian Doctors) সুস্থ করে নজির গড়লেন এদেশের চিকিৎসকরা। পাকিস্তানের এক আড়াই বছরের শিশুকন্যার বোন ম্যারো সফলভাবে প্রতিস্থাপন ( Bone Marrow Transplant) করে তাকে নতুন জীবন ফিরিয়ে দিলেন বেঙ্গালুরুর চিকিৎসকরা। করাচিতে থাকেন শিশুটির বাবা-মা। বাবা সিকন্দর বকত একজন ক্রিকেট ধারা ভাষ্যকার। তাঁর মেয়ে আড়াই বছরের আমিরা এক বিরলতম রোগে আক্রান্ত। বিরলতম অসুখটির নাম মুকোপলিসাচ্চারি ডোসিস টাইপ ওয়ান।
এই রোগে আক্রান্তদের চোখ ও মস্তিষ্ক-দেহের বিভিন্ন অঙ্গের স্বাভাবিক কাজকর্মে ভীষণ রকমের প্রভাব ফেলে। সেই বিরলতম রোগের নিরাময়ে সিকান্দারের বোন ম্যারো নিয়ে তা প্রতিস্থাপন করে অসম্ভবকে সম্ভব করলেন বেঙ্গালুরুর নারায়ণা হাসপাতালের চিকিৎসকরা। বুধবার এই সফল অস্ত্রোপচারের কথা জানালেন হাসপাতাল চেনের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা দেবী শেঠি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বাবার বোন ম্যারো আমিরার শিরদাঁড়ায় প্রতিস্থাপন করে তাকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব হয়েছে। যিনি এই প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন, সেই চিকিৎসক ড. সুনীল ভাট জানিয়েছেন মুকোপলিসাচ্চারি ডোসিস টাইপ ওয়ান এমনই একটি অবস্থা তৈরি করে যাতে শরীরে একটি এনজাইমের হদিশ পাওয়া যায় না। ওই এনজাইমের অভাবে শরীরে একাধিক পরিবর্তন আসে।
লিভার ও প্লীহা বেঢপ আকার নেয়। শরীরে হাড়েও দেখা দেয় পরিবর্তন। এ ধরণের বিরলতম অবস্থার জন্য উনিশ বছরের মধ্যে প্রতিবন্ধী হয়ে যায়। অধিকাংশই জীবনের দ্বিতীয় পর্বে মারা যায়। ফলে একমাত্র বোন ম্যারো প্রতিস্থাপনেই এ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। শিশুকন্যাটির কোনও ভাইবোন নেই, তাঁরা এমন একজনকে খুঁজছিলেন, যার সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক নেই। সেটাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ কারণে বাবা-মায়ের একজনকে বেছে নেওয়া হয়েছিল ডোনার হিসেবে। জটিল প্রতিস্থাপনের পর দেখা দেয় আমিরা ভালো রয়েছে। তার এনজাইম ভালোভাবেই কাজ করছে। আমিরার মা জানান,এই অসুখ সম্পর্কে তাঁর কোনও ধারণাই নেই। তারপর তিনি খোঁজখবর করার পর ড.ভাটকে অনুরোধ করেন। জানান চিকিৎসক ও প্যারামেডিকেল টিম খুবই আন্তরিক।